বিদ্যুতে চীনের সাথে ২৭৪ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি সই আজ

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০১৯-০৭-০৪ ১২:৩৭:২৪


দেশব্যাপি বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য চীন থেকে ঋণ নিচ্ছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে আজ বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) চীনের এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে ২৭৪ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি সই করবে বাংলাদেশ। বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণের ২২ প্রকল্পে এই অর্থ ব্যয় হবে।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, দেশে চাহিদার দেড়গুণ বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। কিন্তু সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন না হওয়ায় নাগরিক দুর্ভোগ কমছে না। এবারের বাজেটেও এ খাতের উন্নয়নে বেশি অর্থ বরাদ্দ রেখেছে সরকার। আবার অন্যদিকে বিনিয়োগকারী দেশগুলোকেও এ খাতে বিনিয়োগের জন্য আহ্বান জানাচ্ছে।

প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন চীন সফরে রয়েছেন। বিদ্যুৎ খাতের চুক্তির জন্য চীনে গেছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি এবং খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদসহ বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা।

ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির (ডিপিডিসি) এক কর্মকর্তা জানান, তাদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার ১০৬ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি হবে। এই অর্থ রাজধানী ঢাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়নে ব্যয় করা হবে। এজন্য আলাদা ১০টি প্রকল্প হাতে নিয়েছে বিতরণ কোম্পানিটি। বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়নের জন্য ভূগর্ভস্থ বিতরণ লাইন নির্মাণ, নতুন সাবস্টেশন নির্মাণ ও সাবস্টেশন সংস্কারে এই অর্থ ব্যয় করবে তারা।

জানতে চাইলে ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান বলেন, ‘চীনা এক্সিম ব্যাংকের ঋণচুক্তি সই হবে। আমাদের চীনা এক্সিম ব্যাংক ১০৬ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে। বিতরণ ব্যবস্থা আধুনিকায়ন করার কাজে এ অর্থ ব্যয় হবে।’

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, ১৩২/৩৩/১১ কেভি গ্রিড সাবস্টেশন, ৩৩/১১ কেভি সাবস্টেশন নির্মাণ এবং ১৩২/৩৩ কেভি ও ৩৩/১১ কেভি সাবস্টেশন পুনর্নির্মাণ ও সংস্কার করা হবে। চীনা অর্থায়নে ডিপিডিসি ২১৮ সার্কিট কিলোমিটার ১৩২ কেভি ট্রান্সমিশন লাইন, ২৩৩ সার্কিট কিলোমিটার ৩৩ কেভি আন্ডারগ্রাউন্ড লাইন, ৫৮২ সার্কিট কিলোমিটার বিতরণ নেটওয়ার্ক, ১১৫ সার্কিট কিলোমিটার ১১/০.৪ কেভি আন্ডারগ্রাউন্ড ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হবে। এর বাইরেও একটি ২০-তলা ভবন, আধুনিক ট্রেনিং সেন্টার নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে ডিপিডিসি।

পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি চীনের অর্থায়নে ১৪টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এসব প্রকল্পের মধ্যে সঞ্চালন লাইন ও গ্রিড সাবস্টেশন রয়েছে। চীনের অর্থায়নে ১০০ কিলোমিটার ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন, ৩৩০ কিলোমিটার ২৩০ কেভি সঞ্চালন লাইন ও সাবস্টেশন নির্মাণসহ ১৪টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবি)।

চীনা ঋণে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পর পরিচালক পিজিসিবির প্রধান প্রকৌশলী সুকণ্ঠ লাল নাগ বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে চীনের ১১৪ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি হবে। এই লোনের একটি অংশ চীন সরকার এবং অন্য অংশ চায়না এক্সিম ব্যাংকের মাধ্যমে আসবে।’ তিনি বলেন, ‘এখন ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি হবে। এক থেকে দেড়মাসের মধ্যে ঋণচুক্তি হলে টাকা ছাড় হবে।’

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের অক্টোবরে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং ঢাকা সফরে আসেন। ওই সময় ঢাকা সফরে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যুৎ খাতের যেসব সমঝোতা স্মারক সই হয়েছিল তার মধ্যে পিজিসিবি এবং ডিপিডিসির ঋণের বিষয়টি ছিল। তবে দীর্ঘ ৩২ মাস পর এই ঋণের চুক্তি হতে যাচ্ছে