শিল্পায়নের মাধ্যম হবে পুঁজিবাজার-প্রধানমন্ত্রী

পুঁজিবাজার ডেস্ক আপডেট: ২০১৯-০৭-০৮ ১৮:৩২:০০


বাংলাদেশ কৃষি নির্ভর অর্থনীতির দেশ। এ দেশকে আমরা শিল্পায়নের দিকে তরান্বিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আর শিল্পায়নের মাধ্যম হবে দেশের পুঁজিবাজার।

সোমবার  রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এপেক ফাইন্যান্সিয়াল রেগুলেটরস ট্রেইনিং ইনিশিয়েটিভ এর বিনিয়োগ শিক্ষা নিয়ে আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের উদ্বোধনীতে তিনি এ কথা জানিয়েছেন। এই কনফারেন্স চলবে ১১ জুলাই পর্যন্ত। এটি যৌথভাবে আয়োজন করছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও এশিয়ান ডেভোলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশের অভ্যান্তরে দীর্ঘমেয়াদি অর্থ যোগান দেওয়ার জন্য সরকার একটি শক্তিশালী শেয়ারবাজার গঠনে কাজ করে যাচ্ছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিনিয়োগকারীদের করমুক্ত আয়ের সীশা ২৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের ফিন্যান্সিয়াল প্রোডাক্টসহ বন্ড প্রচলনের উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। শর্ট সেল ও রিক্স বেজড সংশ্লিষ্ট দুটি বিধি প্রণয়ন করা হয়েছে। একটি শক্তিশালী পুঁজিবাজার গড়ে তোলার জন্য ধারাবাহিকভাবে পলিসি সাপোর্ট, আইনগত সংস্কার, অবকাঠামোগত নির্মাণসহ নানাবিধ সহযোগিতা দিয়ে আসছে।

তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি পুঁজিবাজারের মাধ্যমে সাধারন মানুষকে নতুন নতুন উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগে অংশীদার করা সম্ভব। যত বেশি মানুষ পুঁজিবাজারের সঙ্গে সম্পৃক্ত হবে, শিল্পায়ন তত বেশি ত্বরান্বিত হবে বলে বিশ্বাস করি।

বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা যখন বিনিয়োগ করতে যান, তখন মুনাফার সবটুকু বিনিয়োগ করে ফেলবেন না। অন্তত কিছু টাকা জমিয়ে রেখে তারপরে বিনিয়োগ করবেন। অনেক সময় দেখা যায় বেশি পাওয়ার লোভে সবটুকু বিনিয়োগ করে শেষে শূণ্য হয়ে যেতে হয়। সেটা যেনো না হয়। এজন্য যাই উপার্জন করবেন, তার কিছু হাতে রাখবেন। তাহলে আমার মনে হয় আপনাদের আয় স্থিতিশীল থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএসইসির সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সরকার জনবলসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। বিএসইসির নিজস্ব ভবনও আমরা নির্মাণ করে দিয়েছি। বিএসইসির কর্মচারীদের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে। ফলে কমিশনের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজের বাস্তবায়ন অব্যাহত রয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) কৌশলগত বিনিয়োগকারীরা অন্তর্ভূক্তি নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া ডিএসইতে স্মল ক্যাপ মার্কেট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। যার ফলে ছোট ও মাঝারি কোম্পানি পুঁজি উত্তোলন করতে পারবে এবং স্টার্ট আপ কোম্পানির তালিকাভুক্তির সুযোগ সৃষ্টি হবে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের পুঁজিবাজার এখনো শ্রেণী বিনিয়োগকারীর উপর নির্ভরশীল। শক্তিশালী শেয়ারবাজার গঠনে দৈনন্দিন লেনদেনে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। একটি জ্ঞাননির্ভর বিনিয়োগকারী গোষ্ঠী গড়ে তোলার লক্ষে দেশব্যাপি বিনিয়োগ শিক্ষা অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে বিএসইসির মাধ্যমে বিভাগীয় শহরগুলোতে বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সকল জেলা সদরে অনুষ্ঠিত হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বস্তুত পক্ষে বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারের মূল চালিকা শক্তি। তাই তাদের সচেতনতা শক্তিশালী পুঁজিবাজার গঠনের অন্যতম শর্ত। জেনে বুঝে বিনিয়োগ করলে একদিকে ঝুকি মোকাবেলার সক্ষমতা বাড়ে, অন্যদিকে পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হয়। বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষার পাশাপাশি অধিকতর নিশ্চিত হয়ে একটি বিকশিত পুঁজিবাজার গড়ে উঠবে। যে পুঁজিবাজার ২০৪১ সালের মধ্যে অন্যতম রাষ্ট্রের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌছানোর জন্য বিনিয়োগের অন্যতম উৎস হিসাবে আবির্ভূত হবে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এশিয়ান ডেভলেপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) বাংলাদেশ প্রধান মনমোহন প্রকাশ এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন।

সান বিডি/এসকেএস