ডেংগু হলে যা করনীয়
সান বিডি ডেস্ক আপডেট: ২০১৯-০৭-১৩ ০০:৪০:৩৭
সাম্প্রতিক কালে ডেংগু জনসাধারণের মনে এক আতংকের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। আতংকের অন্যতম কারণ হচ্ছে, মৃত্যুর হার। এর মধ্যে কয়েকজন চিকিৎসকও আছেন। এবারের ডেংগু ভাইরাসের প্রজাতিটি একটু ভিন্ন এবং ডেংগুর যেসব সাধারণ বৈশিষ্ট্য থাকে, যেমন মাথা ব্যথা,শরীর ব্যথা, প্রচন্ড জ্বর, সেভাবে প্রকাশিত হচ্ছে না। একারণে এটিকে সাধারণ জ্বর হিসেবে অনেকে আমলে নিচ্ছে না কিংবা নিকটস্থ চিকিৎসক অথবা হাসপাতালে যাচ্ছে না।চিকিৎসক, সাধারণ জনগণ সবারই এর প্রতিকারে কিছু দায়িত্ব আছে।
সাধারণ_জনগণের_জন্য_কিছু_কথাঃ
১.ডেংগু নিয়ে আতংকিত হওয়ার কিছু নেই, প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা নিলে এটি সহজেই চিকিৎসা করা যায়।
২.যেকোন জ্বর হলেই আপনি চিকিৎসক এর পরামর্শ নিন।
৩.পেটে ব্যথা,বমি,শরীরে কোন রক্তক্ষরণ,প্রসাবের পরিমাণ কমে যাওয়া,নিস্তেজ বোধ,অত্যাধিক দুর্বল বোধ হলে, সাথে সাথে হাসপাতাল বা ক্লিনিকে চলে যাবেন।
৪.চিকিৎসক এর পরামর্শ ব্যতিরেকে নিজে বা ফার্মাসিস্ট এর কোন ওষুধ খাবেন না।
৫.প্রচুর পানি বা পানিজাতীয় খাবার খাবেন।
৬.রক্তের প্লাটিলেট বা অনুচক্রিকার পরিমাণ কমে যাওয়া দেখে ঘাবড়ে যাবেন না।এটার জন্য কেউ মারা যায় না।
৭.রক্ত বা প্লাটিলেট দেওয়ার জন্য চিকিৎসককে চাপ প্রয়োগ করবেন না।
৮.দিনের বেলা মশা কামড়াচ্ছে কিনা খেয়াল রাখা, প্রয়োজনে মশারী বা রেপেলেন্ট ব্যবহার করা।
৯.এখন অনেক বৃষ্টিপাত হচ্ছে।আশেপাশে বা ঘরে জলাবদ্ধ কিছু আছে কিনা খেয়াল রাখা।
চিকিৎসকদের_জন্য_কিছু_কথাঃ
১.ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল বাদে অন্য কোন ব্যথার ওষুধ দিবেন না।
২.অনেক হাসপাতাল বা ক্লিনিকে একটা মিথ আছে যে, স্টেরয়েড দিলে রোগীর প্রেশার ভাল থাকে বা প্লাটিলেট কাউন্ট বেড়ে যায়, যার কোন সায়েন্টফিক ব্যাখ্যা নেই।প্লিজ এটা করবেন না।
৩.ডেংগুর মূল আতংক প্লাজমা লিকেজ, প্লাটিলেট কাউন্ট কমা নয়।সুতরাং, রোগীর পক্ষ থেকে যতই চাপ আসুক, আপনারা প্লাটিলেট বা এফেরেটিক প্লাটিলেট কিংবা ফ্রেস ফ্রোজেন প্লাজমা দিবেন না।
৪.ডেংগু নিশ্চিত হওয়ার পর, কোগুলেশন প্রোফাইল আলাদা করে করার কোন প্রয়োজন নেই, এটা পরিবর্তন হবে এটাই স্বাভাবিক।
৫.ফ্লুইড ম্যানেজমেন্ট ডেংগু রোগের মূল চিকিৎসা, ক্রিস্টালয়েড সলুশনই দিতে হবে,গাইডলাইন অনুযায়ী দিতে হবে এবং প্রথম ৪৮ ঘন্টা কঠোর ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
৬.ডেংগু নিশ্চিত হয়ে গেলে, আলাদা করে এ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার কোন উপযোগিতা নেই।
৭.চিকিৎসাকালীন সময়ে, রোগীর পালস, ব্লাড প্রেসার, ইউরিন আউটপুট খেয়াল রাখতে হবে।
৮.চিকিৎসা অর্ডার দেওয়ার পর, রোগী আসলেই ফ্লুইড সেভাবে পাচ্ছে কিনা মনিটর করা।
লিখেছেনঃ
ডাঃ সাইফ হোসেন খান মার্ক(এমআরসিপি, ইউকে)
ইনডোর মেডিকেল অফিসার
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল