ব্যর্থ ১১ ব্যাংককে তলব করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০১৯-১০-০৪ ১১:৫৩:৪৩


বিনিয়োগসীমা নিয়ে দেয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা ৫ দফা পরিবর্তন করার পরেও বাংলাদেশ ব্যাংকের এ নির্দেশনা পরিপালন করতে ব্যর্থ হয়েছে ১১টি ব্যাংক। ব্যাংকগুলোর আগ্রাসী ব্যাংকিংয়ের কারণে পুরো ব্যাংকিং খাতই এখন ঝুঁকির মুখে পড়ে গেছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১১ ব্যাংককে তলব করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিটি ব্যাংকের সাথে আলাদা আলাদা বৈঠক করা হচ্ছে। বিনিয়োগসীমা নির্ধারিত সীমার মধ্যে নামিয়ে আনতে ব্যর্থ হওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হচ্ছে। একই সাথে নির্ধারিত সীমার মধ্যে নামিয়ে না আনলে নির্দেশনা পরিপালনে ব্যর্থতার শাস্তির বিষয়েও জানিয়ে দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে দু’টি ব্যাংকের সাথে বৈঠক করা হয়েছে। ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবগুলোই বেসরকারি খাতের বাণিজ্যিক ব্যাংক বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, আগ্রাসী ব্যাংকিং বন্ধে বিনিয়োগসীমা ৮৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ৮৩ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়; কিন্তু প্রায় দুই বছর আগে এ নির্দেশনা দেয়া হলেও ১১টি ব্যাংক এখনো তা পরিপালন করতে পারেনি।

পঞ্চমবারের মতো সার্কুলারটি সংশোধন করার পরেও ১১টি ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা ৮৫ শতাংশের ওপরে রয়েছে। কোনো কোনোটির বিনিয়োগসীমা ৯০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। ব্যাংকগুলোর আগ্রাসী ব্যাংকিংয়ের কারণে সমগ্র ব্যাংকিং খাতেই এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

গত ২ অক্টোবর চারটি ব্যাংককে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে এক হাজার ২৩ কোটি টাকা জোগান দেয়া হয়েছে। গতকাল ৩ অক্টোবর সাতটি ব্যাংককে জোগান দেয়া হয়েছে এক হাজার ১৩১ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের ঋণের জোগান দিতে বাধ্য পাঁচটি প্রাইমারি ডিলার ব্যাংককে ৭৯১ কোটি টাকা এবং দু’টি নন-পিডি ব্যাংককে ৩৪০ কোটি টাকার তহবিল জোগান দেয়া হয়েছে। এতে ব্যাংকগুলোর ব্যয় করতে হয়েছে প্রতি ১০০ টাকার জন্য ছয় টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ব্যাংকগুলোর আগ্রাসী ব্যাংকিংয়ের কারণে তারা বিনিয়োগসীমা কমিয়ে আনতে পারছে না। এতে এক দিকে ব্যাংকিং খাতে টাকার সঙ্কট প্রকট হচ্ছে, অপর দিকে বৈদেশিক মুদ্রার ওপরেও চাপ বাড়ছে। মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল রাখার স্বার্থেই ব্যাংকগুলোকে বিনিয়োগসীমা কমিয়ে আনার সময় বেঁধে দেয়া হচ্ছে।

জানা গেছে, বিনিয়োগসীমা বেড়ে যাওয়ার কারণে এক দিকে ব্যাংকগুলো আর নতুন করে বিনিয়োগ করতে পারছে না, অপর দিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা পরিপালনে ব্যর্থ হচ্ছে। আবার যারা ঋণ নিয়েছেন তাদের বেশির ভাগই ঋণ পরিশোধ করছেন না। বেড়ে যাচ্ছে ব্যাংকের খেলাপি ঋণ। এতে বাংলাদেশ ব্যাংক নাখোশ হচ্ছে। এভাবেই তারা এখন উভয় সঙ্কটে পড়েছে। নতুন করে ঋণ দিতে না পারায় ব্যাংকের আয়ও কমে যাচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে এখন বেশির ভাগ ব্যাংক আমানত সংগ্রহের ওপর বেশি নজর দিচ্ছে। বেশি সুদে আমানত সংগ্রহ করতে হচ্ছে। এতে তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। সব মিলেই ব্যাংকগুলো এখন এক কঠিন বিপদের মুখে পড়ে গেছে।

সানবিডি/ঢাকা/এবিএস