সাবধানে সরকার!
আপডেট: ২০১৫-১১-২১ ১৯:১০:৩১
দেশের চলমান পরিস্থিতিকে ক্রান্তিকাল মনে করে বিশেষ সতর্ক অবস্থান নিয়েছে সরকার। রাজনীতি বা অন্য যে কোনো ইস্যুতে নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে সরকার সর্বশক্তি প্রয়োগ করতেও প্রস্তুত রয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি মহাজোটের নেতাকর্মীদেরকেও এ ব্যাপারে সাবধানে থাকতে বলা হয়েছে। দলীয় সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
শনিবার সশস্ত্রবাহিনী দিবসে খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিরোধীপক্ষ সরকার পতনের সকল ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার পর এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং আলী অহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর করা নিয়ে বিএনপি-জামায়াত আন্দোলনের নামে ফের নাশকতা সৃষ্টি করতে পারে। পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে বিরোধী জোট এবার ভিন্নপন্থাও অবলম্বন করতে পারে, যে কারণে অধিক সতর্কাবস্থায় থাকতে হচ্ছে।
এদিকে, চলমান ঘটনা প্রবাহে সরকার বিব্রত বলে সূত্রে জানা গেছে। সম্প্রতি বিদেশি নাগরিক ও ব্লগার-প্রকাশক হত্যা, পুলিশ ও তাজিয়া মিছিলে ওপর হামলার ঘটনায় সরকার অভ্যন্তরীণ এবং বিদেশিদের চাপে পড়ে। বিশেষ করে বাংলাদেশ সফরে পশ্চিমা বিশ্বের সতর্ক বার্তা এ চাপ আরও বাড়িয়ে দেয়।
সরকারের নীতিনির্ধারকরা নিরাপত্তা প্রশ্নে পশ্চিমা বিশ্বের উদ্বেগ প্রকাশের বিষয়ে সমালোচনা করলেও ভিতরে ভিতরে নিজেরাও উদ্বেগ প্রকাশ করেন, যা বিভিন্ন সভা-সেমিনারে তাদের বক্তব্য থেকেই প্রতিয়মান হয়। উদ্বেগ কমাতে কূটনীতিকদের সঙ্গে সরকার নানা দেনদরবারও করে চলছেন।
অন্যদিকে, হত্যা-হামলার প্রতিটি ঘটনায় সরকার বিরোধীপক্ষকে দায়ী করে আসলেও এখন পর্যন্ত তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে কোনোটিরই সুরাহা করতে পারেনি। বরং এসব ঘটনায় বিভ্রান্তিকর তথ্যে ধুমজ্রালের সৃষ্টি হয়েছে, যা জনগণ তাদের নিরাপত্তা নিয়ে আরো উদ্বেগ প্রকাশ করছে। বিশেষ করে এসব ঘটনায় আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএস (ইসলামিক স্টেট)-এর সম্পৃক্ততা নিয়ে নানা গুঞ্জন জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে, ফলে সরকারকে নিরাপত্তা নিয়ে অধিক ভাবতে হচ্ছে।
সম্প্রতি আইএস কর্তৃক প্রকাশিত ম্যাগাজিন দাবিক-এ বাংলাদেশে কয়েকটি হামলার কথা স্বীকার করে আরোও হামলার হুমকি দেয়া হয়েছে।
এদিকে, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা নিয়েও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে সরকার। খালেদা জিয়ার এবারের লন্ডন সফর নিয়ে শুরু থেকেই সরকার সমালোচনার দৃষ্টিতে দেখে আসছেন। ‘বিদেশ গিয়ে দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র করছেন তিনি (খালেদা)’ এমন অভিযোগ একাধিকবার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও।
দেশে ফিরে সরকার পতনের আন্দোলনের ডাক দিতে পারেন খালেদা জিয়া এমনটি ধারণা করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের সাবধানে থাকতে বলা হয়েছে।
বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর করা নিয়েও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে সরকার। ইতিমধ্যেই নিরাপত্তার অজুহাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো বন্ধের পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যবহারে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। এছাড়া বিরোধী জোটের আন্দোলন ঠেকাতে সরকার দেশব্যাপী গণগ্রেফতার শুরু হয়েছে। সূত্র: জাগোনিউজ
সানবিডি/ঢাকা/এসএস