প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ, রাতেই সাকা-মুজাহিদের ফাঁসি

প্রকাশ: ২০১৫-১১-২১ ২২:৩৪:৪৭


mujahid_sakaমৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। শনিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এরআগে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানতে এই দুই যুদ্ধাপরাধীর প্রাণভিক্ষার আবেদন নিয়ে আইন ও স্বরাষ্ট্র সচিব প্রায় এক ঘণ্টা বঙ্গভবনে ছিলেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াতে ইসলামী সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের আইনি লড়াই চূড়ান্ত নিষ্পত্তির পর তাদের শেষ সুযোগ ছিল দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়া। শেষ পর্যন্ত প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হয়ে যাওয়ায় ফাঁসি কার্যকর এখন সময়ের ব্যাপারমাত্র। আজ রাতের যে কোনো সময়ে তাদের ফাঁসি কার্যকর হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ফাঁসি কার্যকরের শেষ একটি আনুষ্ঠানিকতা হিসেবে সালাউদ্দিন কাদের এবং মুজাহিদের পরিবারের সদস্যরা এখন তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন। সাক্ষাৎ শেষেই শুরু হবে ফাঁসি কার্যকরের প্রক্রিয়া। এদিকে ফাঁসি কার্যকরকে ঘিরে কেন্দ্রীয় কারাগারের আশপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও বাড়ানো হয়েছে। কারা অভ্যন্তরে ফাঁসির মঞ্চে আলোকসজ্জার পাশাপাশি ছামিয়ানা টানানোর কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে জল্লাদ।

রাত সাড়ে ৮টার দিকে কারাগারে প্রবেশ করেছেন অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক (এআইজি) কর্নেল ফজলুল কবীর। আগে থেকেই সেখানে অবস্থান করছেন ডিআইজি গোলাম হায়দার। এরপর রাত ১০টার দিকে কারাগারে প্রবেশ করেন ঢাকা জেলা প্রশাসনের দুই ম্যাজিস্ট্রেট। এরপর একে একে প্রবেশ কারাগারে প্রবেশ করেন আইজি প্রিজন, জেলা প্রশাসক এবং পুলিশের একজন প্রতিনিধি।

এর আগে সন্ধ্যার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে দুটি অ্যাম্বুলেন্স কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে অব্স্থান নিয়েছে। পরে আরও দুটি অ্যাম্বুলেন্স সেখানে যায়।

এরআগে সকাল থেকেই নাজিমউদ্দিন রোডে কারাগারের সামনে র‌্যাব-পুলিশের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। বিকালের দিকে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য কয়েকগুণ বেড়ে যায়।

বিকেল ৪টার আগে শুধু র‌্যাব সদস্যদের সশস্ত্র পাহারায় দেখা গেলেও সন্ধ্যার আগে সশস্ত্র পুলিশ সদস্যদেরও সতর্ক অবস্থায় দেখা যাচ্ছে। কারা ফটকের আশপাশে গণমাধ্যমকর্মী ছাড়া কাউকে যাওয়া-আসা করতে দিচ্ছে না আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। সাংবাদিকদেরও পরিচয়পত্র গলায় ঝুলিয়ে রাখতে বলা হয়েছে।

দক্ষিণপূর্ব পাশ দিয়ে কারাগার সংলগ্ন সড়কে যান চলাচল সকাল থেকেই বন্ধ রয়েছে। সন্ধ্যার পর নাজিমউদ্দিন রোডেও যানবাহন চলাচল সীমিত করে দেয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, বুধবার সালাউদ্দিন কাদের ও মুজাহিদে রিভিউ আবেদন খারিজের পর থেকে সেখানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাহারা বসে। শুক্রবার নিরাপত্তা জোরদারের পর শনিবার তা আরও বাড়তে থাকে।