দেশে যুব বেকারত্বের হার ২৮%: যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী
সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০১৯-১০-৩১ ১৫:৪৫:১৮
দেশে এখন যুব বেকারত্বের হার ২৮ শতাংশ। ২০৩০ সালের মধ্যে এই হার ৩ শতাংশে নামিয়ে আনতে চায় সরকার। সেজন্য যুবকদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপরে জোর দেওয়ার কথা জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর ২০১৯) সকালে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত যুব দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তিনি।
জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, দেশের ৬৪টি জেলার ৪৯২টি গ্রামকে বেকারমুক্ত করতে ‘বেকারমুক্ত গ্রাম সৃজন প্রকল্প’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। যার মাধ্যমে দেশের প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে গ্রাম বেকারমুক্ত করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী জানান, সরকার প্রকল্পের আওতায় কিছু পরিকল্পনা প্রয়োগ করবে, বেকারদের আত্মকর্মসংস্থান করা হবে, না হয় কোথাও চাকরির সুযোগ করে দেওয়া হবে। এজন্য উপজেলা পর্যায়ে যুব প্রশিক্ষণ-বিনোদন কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ৪৯২ উপজেলায় যুব প্রশিক্ষণ-বিনোদন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। পাঁচটি জেলায় যুব হোস্টেল নির্মাণ প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছে। এসব বাস্তবায়ন হলে বেকার যুবকদের আবাসনে সুবিধা হবে।
এছাড়া, নিবন্ধিত যুব সংগঠনের সদস্যদের প্রশিক্ষিত করে কর্মসংস্থানে আগ্রহীকরণ প্রকল্প, যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প (৭টি কেন্দ্র), কর্মসংস্থান ও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে উপজেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম জোরদারকরণ প্রকল্প (২য় পর্ব) হাতে নেয়া হয়েছে বলেও জানান যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী।
আরো বলেন, যুব তথ্য বাতায়ন স্থাপন প্রকল্প, ইনটিগ্রেটেড ম্যানেজমেন্ট অব রিসোর্সেস ফর পোভারটি টেকনোলজি (ইমপ্যাক্ট ) ৩য় পর্ব, যুব ভবন নির্মাণ প্রকল্প, যুবকদের কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদে রুপান্তর প্রকল্প, কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্র জোরদারকরণ ও আধুনিকীকরণ প্রকল্প এবং হোটেল ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান ও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে।
বেকারদের তালিকা কিভাবে করা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে জাহিদ আহসান বলেন, এক্ষেত্রে কারো সুপারিশ নয়, আমরা নিজেরাই গ্রামকে বেছে নেব। যে এলাকায় দারিদ্রতার হার বেশি সেই এলাকাকে আমরা আগে বেছে নেব। এরপর ধাপে ধাপে অন্যান্য গ্রামগুলোকে নেব। এক্ষেত্রে দরিদ্র্য প্রবণ এলাকাকে প্রাধান্য দেয়া হবে।
এ বিষয়ে যুব উন্নয়ন অধিদফতরের মহাপরিচালক ফারুক আহমেদ বলেন, বেকারের তালিকার বিষয়ে একটি নির্ধারিত পলিসি থাকবে। যে পলিসি অনুযায়ী উপজেলা পর্যায়ে একটি কমিটি থাকবে। সেই কমিটি সুপারিশ করবে। এরইমধ্যে প্রত্যেক জেলায় একটি করে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র করা হবে। বেকারমুক্ত গ্রাম সৃজন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র একত্রে করে একটি হলিস্টিক অ্যাপ্রোচ নেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ৬৪ টি জেলায় বর্তমানে ৭৬টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ২০১৬ জুন থেকে ২০২০ সার পর্যন্ত ২৯ হাজার ৮০০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। গত ৩০ জুন পর্যন্ত ২০ হাজার ৬০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৭৩৭ টিনহ মোট ২৫০০ কম্পিউটার সরবরাহ করা হয়েছে এবং ১০ হাজার ১৭০ জন প্রশবক্ষণার্থীকে কম্পিউটার আইসিটি আ্যাপ্লিকেশন ও গ্রাফিক্স ডিজাইন কোর্সের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ৫৩ টি জেলায় ৫৩ টি নতুন যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মিত হওয়ায় অবশিষ্ট ১১টি জেলায় ১১ টি নতুন যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের লক্ষ্যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে এ প্রকল্পের আওতায় ৯টি যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে এবং নব নির্মিত ভবনে উপ-পরিচালকের কার্যালয় স্থানান্তরিত হয়েছে। গাজীপুর ও মানিকগঞ্জ জেলায় ২টি যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজের ৯০ শতাংশ হয়েছে বলে জানান তিনি।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস