চলছে জামায়াতের ‘ঢিলেঢালা’ হরতাল

আপডেট: ২০১৫-১১-২৩ ১২:৩৭:৩১


Hortalজামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহম্মদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে প্রতিবাদে আজ সোমবার দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করবে দলটি। এ মৃত্যুদণ্ডকে পরিকল্পিত ‘হত্যাকাণ্ড’ বলে উল্লেখ করেছে। তবে হরতাল আহ্বান করলেও কোনঠাসা জামায়াত নেতাকর্মীদের রাজপথে নামার সম্ভবনা ক্ষীণ।

গত শনিবার মধ্যরাতে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকরের পর হরতালসহ দুই দিনের কর্মসূচির ডাক দেয় জামায়াত। এরমধ্যে রোববার গায়েবানা জানাজা ও দোয়া কর্মসূচিও পালন করে তারা।

মুজাহিদের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন আপিলে বিভাগে খারিজ হওয়ার পর গত বুধবারও হরতাল পালন করে জামায়াত। তবে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের কোনো জেলাতেই রাজপথে নামতে পারেনি জামায়াত। জামায়াত অধ্যুষিত বলে পরিচিত এলাকাগুলোতে হরতালের সমর্থনে মিছিল-সমাবেশ ছিল না।

জামায়াত ও শিবিরের একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন, আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থানের কারণে হরতালও ঢিলেঢালা হবে। কেন্দ্রের তরফ থেকেও পিকেটিং করার নির্দেশ নেই। হরতালের সমর্থনে রাজধানীতে ‘সুযোগ বুঝে’ ঝটিকা মিছিল ছাড়া আর কোন ধরনের পিকেটিংয়ের সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ।

জামায়াত অভিযোগ করেছে, দুইদিনের কর্মসূচির প্রথম দিন রোববারের গায়েবানা জানাজার মতো ধর্মীয় ইবাদত আদায়ে বাধা দেয়া হয়েছে। চাঁদপুরে জানাজায় অংশগ্রহনকারী তিনজনকে মুসল্লিকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত।

কাদের মোল্লা ও কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকরের পর জামায়াত প্রায় সব জেলায় প্রকাশ্যে গায়েবানা জানাজার আয়োজন করলেও, মুজাহিদের জন্য কোথাও প্রকাশ্যে কর্মসূচি পালন করতে পারেনি। দলটির নেতারা জানান, আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থানের কারণে গোপনেই গায়েবানা জানাজার আয়োজন করা হয়।

২০১৩ সালে কাদের মোল্লা ও দেলাওয়ার হুসাইন সাঈদীর রায়ের পর জামায়াতের হরতালে দেশজুড়ে ব্যাপক সহিংসতা হয়। এতে শতাধিক মানুষের প্রাণহানী হয়। হরতালের আগের রাতে গাড়িতে আগুন সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়। কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের পরও ব্যাপক সহিংসতা হয়। তবে গত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর থেকেই চরম কোনঠাসা অবস্থায় রয়েছে জামায়াত। এ সময়ে দলের আমির মতিউর রহমান নিজামীসহ শীর্ষ স্থানীয় চার নেতার ফাঁসির রায়ের প্রতিত্রিক্রয়ায় হরতাল ডেকে রাজপথে নামতে পারেনি।

আলী আহসান মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর হওয়ার কিছু সময়ের পরই এক  জামায়াতের ভারপ্রাপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে, আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদকে মিথ্যা ও সাজানো মামলায় ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে হত্যা করার প্রতিবাদে সোমবার শান্তিপূর্ণ ও সর্বাত্মকভাবে হরতাল পালনে দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। বিবৃতিতে বলেন, ‘আলী আহসান মুজাহিদ রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেননি। জালেম সরকার তাকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলানোর আগ মুহুর্ত পর‌্যন্ত তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছে। মৃত্যুর আগ মুহুর্তে থাকা একজন ব্যক্তি সম্পর্কে যারা এ ধরনের মিথ্যাচার করতে পারে, তারা যে কোনো অপকর্মই করতে পারেন।’

বিবৃতিতে শফিকুর রহমান বলেন, ‘আলী আহসান মুজাহিদের বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ রাজনৈতিক, প্রতিহিংসামূলক, মিথ্যা ও জাল-জালিয়াত। বাংলাদেশের জনগণ যথাসময়ে সরকারের এ মিথ্যাচারের সঠিক জবাব দিবে ইনশাল্লাহ।’

সানবিডি/ঢাকা/জেএইচ/এসএস