শীত যখন চরমে বাজার তখন গরমে
:: আপডেট: ২০২০-০১-১২ ১৯:৫৯:৩৮
প্রকৃতিতে বইছে শীতের মাতাল হাওয়া। শৈত্যপ্রবাহ ও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশার কারণে হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় বিপর্যস্ত জনজীবন। ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশু ও বৃদ্ধরা। কনকনে শীতে কাঁপছে তরুণ-তরুণীরাও। শীত থেকে রক্ষায় সবাই ছুটছেন গরম কাপড় কিনতে। দোকানীরাও হরেক রকমের শীতের পোশাকের পসরা সাজিয়েছেন।
গরম কাপড়ের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সরগরম ফুটপাত ও বস্ত্র বিতানগুলো। বিশেষ করে কম্বল, জ্যাকেট, সোয়েটার, কার্ডিগান, শাল, হাত মোজা ও কানটুপির চাহিদা বিক্রির শীর্ষে। বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় খুশি দোকানীরাও।
এই শীতে যেমনি বিপনী বিতানগুলোতে মানুষের ভীড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে তেমনি ফুটপাতেও ভীড় করছে সাধারণ মানুষ। কনকনে শীতের হাত থেকে বাঁচতে সবাই যার যার স্বাধ্যানুযায়ী কিনছেন তার পছন্দের গরম পোষাক। সব মিলিয়ে বলা যেতে পারে শীতের বাজার এখন জমে উঠেছে।
রাজধানীর গুলিস্তান, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ, মতিঝিল, বঙ্গবাজার, বায়তুল মোকাররম এলাকা ঘুরে দেখা গেছে- গরম কাপড় কেনার হিড়িক পড়েছে। এসব এলাকায় গরম কাপড় কেনার জন্য মানুষের ঢল নামে। চাহিদার তুঙ্গে ছিল শিশুদের গরমের পোশাক।
অনেক নারীকে দেখা গেছে নিজের এবং সন্তানদের জন্য পছন্দের সোয়েটার কিনতে। হকারদের হাঁক-ডাক আর ক্রেতাদের ভিড়ে এসব এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ ও বঙ্গবাজারে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। সুযোগ বুঝে দোকানী ও হকাররা এসব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিতেও কার্পণ্য করেননি। স্থান ভেদে একই পণ্যের ভিন্ন দাম নজরে পড়েছে।
নিম্ন আয়ের মানুষের বেশি ভিড় ছিল নিউ মার্কেট এলাকায়। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও ভিড় করে নিউ মার্কেট এলাকায়। তাদের চাহিদার শীর্ষে ছিল- জ্যাকেট, মাফলার ও কান টুপি। কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে আলাপ করে জানা যায়, হঠাৎ আবহাওয়ার এ পরিবর্তনে তারা বিপাকে পড়েছেন। মাসের মাঝামাঝি হওয়ায় তাদের কাছে তেমন টাকা না থাকায় চাহিদা মত শীতের কাপড় কিনতে পারছেন না।
হঠাৎ করে শীতের প্রকোপ বাড়ায় রাজধানীর অভিজাত শপিং মল গুলোতেও বেড়েছে বিক্রি। আর অলি-গলিতে ভ্যানে করে গরম কাপড় বিক্রির দৃশ্য চোখে পড়ে।
গুলিস্তান ট্রেড সেন্টারের নিচে কাজলা থেকে আসা দুই সন্তানের মা আফিনা রহমান সাথে কথা হয়। তিনি জানান, দুইশ টাকার জিনিস এখন ৪০০ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। দুই ছেলের জন্য জ্যাকেট ও নিজের জন্য সোয়েটার কিনেছি।’
বায়তুল মোকাররম এলাকায় হকার সোহাগ হোসাইন সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘পৌষের শুরুতে টুকটাক বেচা-বিক্রি থাকলেও মঙ্গলবার থেকে ক্রেতার চাপ বেড়ে গেছে। হঠাৎ তীব্র শীতে বেড়ে গেছে গরম কাপড়ের চাহিদা। পাইকারি মার্কেটে দাম বেশি তাই আমরা কম দামে বেশি বিক্রি করতে পারছি না। অন্য সময়ে যে জ্যাকেটের দাম একশ টাকা, এখন তা তিনশ টাকা হাঁকাচ্ছি। তবে দুইশ টাকা হলে ছেড়ে দিচ্ছি। ক্রেতারাও কম কথা বলে কিনে নিচ্ছেন পছন্দেও জিনিসটি।’
হাড় কাঁপানো শীতে কাঁপছে রাজধানীর ভাসমান ও ছিন্নমূল মানুষেরা। তাদের ভাগ্যে জোটেনি সরকারি বা বেসরকারি কোনো সাহায্য-সহযোগিতা। নিদারুণ কষ্টে জীবন পার করছে তারা। কিছু কিছু এলাকায় আগুন জ্বালিয়ে হাত-পা গরম করতে দেখা গেছে।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস