‘আমু-তোফায়েল নির্বাচনে সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকতে পারবেন না’

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০১-১১ ১৬:০৫:২৯


ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে (উওর ও দক্ষিণ) আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ এবং আমির হোসেন আমু সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা।

শনিবার দুপুরে নির্বাচন কমিশন ভবনে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।

আগামী ৩০ জানুয়ারির নির্বাচনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে আওয়ামী লীগের হয়ে নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শেখ ফজলে নূর তাপস, যিনি ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। আর উত্তর সিটি করপোরেশনে নৌকা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম।

বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো অংশ নেয়ায় এবারের নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে বলে মনে করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এজন্য নিজস্ব প্রার্থীকে জেতাতে তারা প্রচেষ্টার কোনো কমতি রাখছে না। সেই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করে দলটি। যেখানে দলের প্রবীণ ও অভিজ্ঞ দুই নেতাকে সমন্বয়কের দায়িত্ব দেয়া হয়।

এর মধ্যে আমির হোসেন আমুকে দক্ষিণ সিটিতে এবং তোফায়েল আহমেদকে উত্তর সিটিতে দলের সমন্বয়কের দায়িত্ব দেয় ক্ষমতাসীন দলটি।

সংসদ সদস্যরা (এমপি) নির্বাচনের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করতে পারেন কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে কেএম নূরুল হুদা বলেন, ‘আমার মনে হয়, তারা পারেন না। আমি জানি না কাদেরকে কিভাবে কী কমিটিতে রেখেছে। আমরা অফিসিয়ালি এখনো পাইনি। এখন যদি পেয়ে থাকি-তাহলে তাদের জানিয়ে দেবো, তারা দায়িত্ব পালন করতে পারবে না।’

‘অফিসিয়ালি কিছু পাইনি, যদি চিঠি পাই তবে নিষেধ করবো যে তারা পারবেন না।’-যোগ করেন সিইসি।

এমপিরা ঘরে বসে ভোট চাওয়া ছাড়া সমস্ত কাজ করতে পারবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে নূরুল হুদা বলেন- ‘পারেন, পারেন। এমপিরা সকল কিছুই করতে পারবেন, কেবলমাত্র নির্বাচনের ব্যাপারে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা, নির্বাচনের ব্যাপারে তাদের কোনো প্রচারণা এবং নির্বাচনী কার্যক্রম, তারা করতে পারবেন না। এখানে তো তাদেরকে আমরা একেবারে নির্বাচনের বাইরে যে কাজ, সেখান থেকে নিষ্ক্রিয় করার সুযোগ আমাদের নাই।’

এমপিরা নির্বাচন সংক্রান্ত সমন্বয় করতে পারবেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘না। নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো সমন্বয় তারা করতে পারবে না। নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো কাজ তারা ঘরেই হোক বা বাইরে হোক, তারা করতে পারবেন না। এটাই আচরণ বিধিতে বলা হয়েছে। আমরা তাদের বুঝিয়ে বলেছি।’

সিইসি বলেন, ‘নির্বাচনের ব্যাপারে যাদের কথা নিষেধ আছে-মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী, তারপরে সংসদ সদস্য, সিটির মেয়র তারা নির্বাচনের ব্যাপারে কোনো প্রার্থীর পক্ষে-বিপক্ষে কোনো কথা বলতে পারবেন না। নির্বাচনী এলাকা বলতে ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মধ্যে তারা রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ করবে, তাদের অন্যান্য কাজ আছে, এগুলোই তারা করতে পারবে।’

‘মিলাদের অংশ নেওয়া-সেটা করতে পারবেন। প্রার্থীরা যাবেন তো, তাদের মিলাদে যেতে পারবেন। নেতা হিসেবে যাবেন সেখানে কিন্তু প্রার্থীদের পক্ষে-বিপক্ষে কথা না বললেই তো হলো।’

তোফায়েল আহমেদ ও আমির হোসেন আমুকে সমন্বয়ক করে গঠিত কমিটি বৈধ কিনা, এই প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন- ‘এটা আমি বলতে পারবো না। আমার কাছে অফিসিয়ালি কিছু আসেনি। কারা এই কমিটির মধ্যে আছে, এটা আমরা জানিনা। আমাদের কাছে আসে নাই।’

তারা আপনাদের সঙ্গে নির্বাচনী বৈঠক করতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘তারা কোনো প্রার্থীর ব্যাপারে আসে নাই তো। নির্বাচনী বিধিতে যা আছে, তার ব্যাখ্যা জানতে এসেছেন। উনারা এখানে বলেন নাই যে, প্রার্থীরা বিপদে আছে, তাদের এই করেন, তাদের কিভাবে রক্ষা করায় যায়, বিরোধী দল তাদের উপরই করেছে, এইসব বিষয়ে না। বিধির যে ইন্টারপ্রিটেশন, সেটার ব্যাপার এসেছেন। আমরা তা বলেছি।’

‘প্রার্থীর সঙ্গে এমপিরা থাকতে পারবেন কি না, আইনে এমন ডিটেইলস বাধা নিষেধ নেই। এখন তারা প্রার্থীর লোক হিসেবে তারা একই সঙ্গে যদি কোনো এলাকায় রাজনৈতিক কর্মসূচি যদি থেকে থাকে, সেখানে যেতে পারবেন। রাজনৈতিক কথা হতে পারে, যেমন মুজিব বর্ষের কর্মসূচি থাকতে পারে। সেখানে তো যে কোনো লোক যেতে পারে। শুধুমাত্র সেখানে নির্বাচনের কোনো প্রচার হবে না।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস