ঐতিহাসিক বাণিজ্য চুক্তি করতে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র-চীন

সান বিডি ডেস্ক আপডেট: ২০২০-০১-১২ ১৬:৪৪:৫২


দীর্ঘ দুই বছর টানাপোড়েনের পর এই সপ্তাহে ঐতিহাসিক বাণিজ্য চুক্তি করতে চলেছে বিশ্বের প্রধান দুই অর্থনৈতিক পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। এই দুই দেশের দ্বৈরথের কারণে বৈশ্বিক ব্যবসা-বাণিজ্যে যে প্রভাব পড়েছিল, নতুন চুক্তির ফলে তা কেটে স্বস্তি ফিরবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আগামী বুধবার (১৫ জানুয়ারি) চুক্তিটি সই হলে তা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের বিজয় বলেই প্রচার করবে হোয়াইট হাউস। যদিও এ চুক্তির আগে ট্রাম্পের ক্ষ্যাপাটে সিদ্ধান্তের কারণে ওয়াশিংটন-বেইজিং বাণিজ্যযুদ্ধে জড়িয়ে গেলে বিশ্ববাসীকে কড়া মাশুল দিতে হয়।

বহুল প্রতীক্ষিত এ চুক্তির বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। তবে হোয়াইট হাউস চাইছে, চীন যেন দু’বছর মেয়াদী চুক্তির আওতায় অতিরিক্ত ২০০ বিলিয়ন ডলারের আমেরিকান পণ্য কেনে। এর মধ্যে থাকবে ৫০ বিলিয়ন ডলারের কৃষি পণ্য। এর বিপরীতে ইতোমধ্যেই চীনের ইলেকট্রনিক্স ও সেলফোনের মতো যেসব পণ্যে নতুন করে শুল্কারোপ করা হয়েছে (যে শুল্ক গত ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল) তা তুলে নেয়া হয়েছে। এছাড়া ১ সেপ্টেম্বর যেসব পণ্যে শুল্কারোপ করা হয়েছে, সেসবের মধ্যে ১২০ বিলিয়ন ডলারের পণ্যের ওপর শুল্ক অর্ধেক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিবিদদের গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সের বাণিজ্যনীতি বিশেষজ্ঞ এডওয়ার্ড অ্যালডেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার গুরুতর বিষয়গুলো এখনো সমঝোতার পর্যায়ে আছে। তাছাড়া রাজনৈতিকভাবে বলতে গেলে, এই চুক্তি পুনর্নির্বাচন প্রত্যাশী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ভাবমূর্তির পক্ষেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

ট্রাম্পের প্রশাসন এমনটি বলতে পারে যে, এই চুক্তি চীনের জন্য কঠিন হলেও ট্রাম্প সেরেই ফেলেছেন। এক্ষেত্রে ট্রাম্প ২০১৬ সালের নির্বাচনের সময় সমর্থকদের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা-ও তিনি রক্ষা করেছেন বলতে পারবেন।

ইংরেজি নববর্ষের প্রাক্কালে হোয়াইট হাউসে এই চুক্তির ঘোষণা দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তখন প্রেসিডেন্ট বলেন, ১৫ জানুয়ারি চীনের সঙ্গে প্রথম পর্যায়ের চুক্তি করবে যুক্তরাষ্ট্র।

যদিও গত বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেশটির ভাইস প্রিমিয়ার লিউ হে’র তিন দিনের (১৩-১৫ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্র সফরের ঘোষণা দেয়া পর্যন্ত বিষয়টি অস্পষ্টই ছিল।

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) পক্ষ থেকে বলা হয়, বুধবারই পুরো নথিপত্র প্রকাশ করা হবে। একটি আনন্দঘন আয়োজন হবে।

চীনের সঙ্গে বিপুল বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে ২০১৮ সাল থেকে দেশটির রফতানি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক বসায় যুক্তরাষ্ট্র। এর পাল্টা জবাব হিসেবে মার্কিন পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক বসায় চীনও। তবে দু’পক্ষের কূটনৈতিক পর্যায়ে বৈঠক ও সংলাপে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি ঘটে।

ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রথম পর্যায়ের হলেও এই চুক্তির আওতায় দু’পক্ষই কৃষিপণ্য, জ্বালানি, শিল্পপণ্যসহ বিপুল পরিমাণ পণ্য ক্রয়ে সম্মত হয়েছে। প্রযুক্তি স্থানান্তর, মেধাস্বত্ব, কৃষি, আর্থিক সেবা, মুদ্রা, আন্তর্জাতিক মুদ্রা বিনিময়সহ অনেক বিষয় থাকছে এ চুক্তিতে।

সানবিডি/এনজে