তিক্ত হয়ে উঠছে ভারত-মালয়েশিয়া বাণিজ্যিক সর্ম্পক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০১-১৫ ১৪:৪৭:৫৩
সম্প্রতি কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিল ও নাগরিকত্ব সংশোধন আইনকে (সিএএ) কেন্দ্র করে মালয়েশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক তিক্ত হয়ে উঠছে। এরই মধ্যে মালয়েশিয়া থেকে আমদানি করা পরিশোধিত পামওয়েলের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করেছে ভারত। এখন নতুন করে আরো কড়া পদক্ষেপ নিতে চাইছে ভারত সরকার। তারা মালয়েশিয়া থেকে মাইক্রোপ্রসেসরের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের পরিকল্পনা করছে। ফলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যে যে বিবাদ শুরু হয়েছে তা সহসা সমাধান হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এর কারণ, দক্ষিণ-পূর্বের দেশ মালয়েশিয়া কাশ্মীর ও সিএএ নিয়ে ভারতে জল ঘোলা করছে বলে মনে করা হয়। এ খবর দিয়েছে ভারতের প্রভাবশালী অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া।
এতে বলা হয় টাইমস অব ইন্ডিয়াকে সূত্রগুলো বলেছেন, ভারত যেটাকে আভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মনে করে, সে বিষয়ে মন্তব্য করেছেন মালয়েশিয়ার প্রধামনমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ।
তার এমন ভূমিকায় ভারতে মোদি সরকার মালয়েশিয়া থেকে আমদানি করা মাইক্রোপ্রসেসরের বিষয়ে প্রযুক্তিগত মানদন্ড আরোপে কাজ করছে। পাশাপাশি টেলিকম বিষয়ক সরঞ্জামের বিষয়ে একটি কোয়ালিটি কন্ট্রোল অর্ডার বা মান নিয়ন্ত্রণ নির্দেশনা দেয়ার বিষয়ে কাজ করছে।
মালয়েশিয়া থেকে ভারতে প্রবেশ কড়াকড়ি করতে মান নিয়ন্ত্রণ নির্দেশনা নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে। এটাকে দেখা হচ্ছে একটি দেশের রাজনৈতিক অবস্থানের বিরুদ্ধে ভারতের প্রথম বাণিজ্যিক প্রতিশোধ হিসেবে। ভারতের এমন বাণিজ্যিক বিধিনিষেধের বিষয়ে মঙ্গলবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ড. মাহাথির মোহাম্মদ। পাশাপাশি তিনি এটাও বলেন যে, ভুল বিষয়ের বিরুদ্ধে তিনি অব্যাহতভাবে কথা বলে যাবেন। রাজধানী কুয়ালালামপুরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, অবশ্যই আমরা উদ্বিগ্ন। কারণ, আমরা ভারতের কাছে প্রচুর পামওয়েল বিক্রি করি। অন্যদিকে আমাদেরকে আরো খোলামেলা হওয়া উচিত এবং দেখা উচিত কোনো অন্যায় হচ্ছে কিনা। এটা নিয়ে আমাদেরকে কথা বলতে হবে। যদি আমরা অন্যায়কে চলতে দিই এবং শুধুই অর্থ সংশ্লিষ্টতার কথা ভাবি, তাহলে আমার মনে হয় আমাদের দ্বারা, অন্য লোকদের দ্বারা অনেক অন্যায় কাজ হবে।
একটি বার্তা সংস্থা বলেছে, ৯৪ বছর বয়সী মাহাথির মোহাম্মদ একটি সমাধান বের করার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। ভারত হলো ভোজ্য তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা। এক্ষেত্রে যদি ভারত পামওয়েল কেনার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ দেয় তাহলে এর মূল্যের ওপর বড় আঘাতে পড়বে।
উল্লেখ্য, কাশ্মীর ও সিএএ নিয়ে মাহাথির মোহাম্মদের মন্তব্য ছাড়াও মালয়েশিয়ার বিরুদ্ধে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ হতাশ। কারণ, সেখানে আশ্রয় নেয়া ধর্মীয় বিতর্কিত বক্তা ড. জাকির নায়েক অবস্থান করছেন। তাকে ভারতে ফেরত পাঠাতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছে মালয়েশিয়া। এর ফলে সরকার বাণিজ্যিক দিক থেকে তাদের বিরুদ্ধে আঘাত করার পথ খুঁজে নিয়েছে বলে মনে করা হয়। সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আমদানি ও প্রাথমিক পদক্ষেপ শুরু করতে পারে ভারতের খনিজ সম্পদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। মালয়েশিয়ার পামওয়েল এরই মধ্যে শতকরা ৫০ ভাগ আদমানি শুল্কের মুখে পড়েছে। এক্ষেত্রে ইন্দোনেশিয়ার হার শতকরা ৪৫ ভাগ। এই শুল্কহার আগামী মাসে বাড়তে পারে। মালয়েশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য ১৭০০ কোটি ডলারের ওপরে। ভারত রপ্তানি করে ৬৪০ কোটি ডলারের পণ্য। আর আমদানি করে ১০৮০ কোটি ডলারের পণ্য।
সানবিডি /এনজে