পাখির অভয়াশ্রম রক্ষায় প্রশাসনের বক্তব্য চান হাইকোর্ট
সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০১-১৫ ১৭:০১:২১
আমের রাজধানী খ্যাত রাজশাহীর বাঘা উপজেলার খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের আমবাগান বাসা বেঁধেছে থাকা ‘শামুকখোল’ নামের কয়েক হাজার পাখি। এসকল পাখির অভয়াশ্রম রক্ষায় কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং জমির মালিক ও লিজ গ্রহীতার কে কি পরিমান ক্ষতিপূরণ পাবেন তা সুনির্দিষ্টভাবে জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রাজশাহী জেলা প্রশাসনের দেওয়া প্রতিবেদন স্পষ্ট না হওয়ায় আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।
আজ বুধবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। পাখির বাসা রক্ষায় রাজশাহীর জেলা প্রশাসকের (ডিসি) দেওয়া প্রতিবেদন পাবার পর আদালত এ আদেশ দেন। রাজশাহীর ডিসির প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। এসময় পাখির অভয়াশ্রম রক্ষার বিষয়টি আদালতের নজরে আনা আইনজীবী প্রজ্ঞা পারমিতা রায় উপস্থিত ছিলেন।
হাইকোর্ট গতবছর ৩০ অক্টোবর এক আদেশে পাখির বাসা ভাঙ্গার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন। একইসঙ্গে ওই গ্রামকে কেন পাখির জন্য অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। এছাড়া ওই গ্রামকে অভয়ারণ্য ঘোষণা করলে আমবাগান মালিক বা ইজারাদার কি পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্থ হবেন তা নিরুপন করে ৪০ দিনের মধ্যে আদালতকে জানাতে রাজশাহীর ডিসি ও বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) নির্দেশ দেওয়া হয়। এ নির্দেশের পর রাজশাহীর ডিসি মো. হামিদুল হক লিখিতভাবে হাইকোর্টকে জানিয়েছেন, পাখির অভয়াশ্রম রক্ষায় বছরে ৩ লাখ ১৩ হাজার টাকার প্রয়োজন। এই টাকা বরাদ্দে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। গত ১২ জানুয়ারি লেখা এই চিঠির একটি কপি আজ হাইকোর্টে দাখিল করা হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে আদালত জমির মালিক ও লিজ গ্রহীতার কে কি পরিমান ক্ষতিপূরণ পাবেন তা সুনির্দিষ্টভাবে জানাতে নির্দেশ দেন।
‘পাখিদের বাসা ছাড়তে সময় দেওয়া হলো ১৫ দিন’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে গতবছর ৩০ অক্টোবর প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী প্রজ্ঞা পারমিতা রায়। এরপর আদালত আদেশ দেন। এরই ধারাবাহিকতায় রাজশাহীর ডিসি হাইকোর্টে প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজশাহীর বাঘা উপজেলার খোর্দ্দ বাউসা গ্রামে ২৫টি আমগাছে শামুকখোল পাখিরা বাসা বেঁধে বাচ্চা ফুটিয়েছে। গত চারবছর ধরেই পাখিগুলো সেখানে বাসা বাঁধছে। প্রতিবছর বর্ষার শেষে ওই আমগাছগুলোতে বাসা বেধে ডিম পাড়ে এবং বাচ্চা ফোটায়। প্রতিবছর পাখি বাসা বাধার কারণে আমবাগানের মালিক ও ইজারাদার ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। একারণে বাগানের ইজারাদার আম ব্যবসায়ী পাখির বাসা ভেঙ্গে গাছে ঔষুধ ছিটানো উদ্যোগ নিলে স্থানীয় পাখিপ্রেমিকরা বাধা দেয়।
সানবিডি/এনজে