কেজিতে ১৪০ টাকা বেড়েছে শুকনা মরিচের দাম
সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০১-১৯ ০৯:৪৩:০৮
বন্দর নগরী চট্টগ্রামে অবস্থিত দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে বাড়তির দিকে রয়েছে শুকনা মরিচের দাম। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পণ্যটির দাম কেজিতে বেড়েছে ১৪০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারতের বাজারেও শুকনা মরিচের দাম চড়া রয়েছে। এ কারণে দেশীয় ব্যবসায়ীরা পণ্যটির আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন। ফলে সরবরাহ স্বল্পতায় আমদানি করা শুকনা মরিচের দাম বেড়েছে। বাড়তি চাহিদার কারণে দাম বেড়েছে দেশে উৎপাদিত শুকনা মরিচেরও।
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজার ঘুরে ভারত থেকে আমদানি করা তুলনামূলক চিকন ও ঝাল শুকনা মরিচ কেজিপ্রতি ৩১৫-৩২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। দুই সপ্তাহ আগে এ মরিচ ১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। সেই হিসাবে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পণ্যটির দাম কেজিতে ১৪০ টাকা বেড়েছে। এ সময় ভারত থেকে আমদানি করা তুলনামূলক মোটা শুকনা মরিচের (ঝাল কম) দামও কেজিতে ৮০ টাকা বেড়েছে। দুই সপ্তাহ আগে পাইকারি বাজারে পণ্যটি কেজিপ্রতি ১৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। বর্তমানে তা ২৬৫-২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
স্থানীয় শুকনা খাদ্যপণ্য ব্যবসায়ী মেসার্স বারো আউলিয়া ট্রেডিংয়ের মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, ভারতের বাজারে দুই-তিন মাস ধরে শুকনা মরিচের দাম ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। ভারত থেকে পণ্যটির আমদানি কমিয়েছেন দেশের ব্যবসায়ীরা। আমদানি কমায় দেশের পাইকারি বাজারে ভারতীয় শুকনা মরিচের সরবরাহ ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ কারণে ক্রমেই চাঙ্গা হয়েছে পণ্যটির বাজার পরিস্থিতি।
এদিকে ভারতীয় শুকনা মরিচের সরবরাহ ঘাটতি ও মূল্য বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে দেশে উৎপাদিত মরিচের দামেও। গত এক সপ্তাহে দেশে উৎপাদিত শুকনা মরিচের দামও মানভেদে কেজিপ্রতি ৪০-৬০ টাকা বেড়েছে। খাতুনগঞ্জের পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে বাজারে কুমিল্লা অঞ্চলের প্রতি কেজি শুকনা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়। চলতি মাসের শুরুর দিকে বাজারে এটি ১৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। একই এলাকার তুলনামূলক কম ঝালের শুকনা মরিচ কেজিপ্রতি ২৩০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। সপ্তাহখানেক আগে পণ্যটি ১৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
পাইকারি বাজারে সবচেয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে বগুড়া ও পঞ্চগড় অঞ্চলের শুকনা মরিচ। গতকাল মানভেদে এ দুই অঞ্চলের শুকনা মরিচ বিক্রি হয়েছে ২০৫-২১০ টাকায়। অথচ চলতি মাসের শুরুতে তা কেজিপ্রতি ১৫০ টাকার নিচে বিক্রি হয়েছিল।
দেশে উৎপাদিত জাতগুলোর মধ্যে গতকাল রায়পুরের শুকনা মরিচ কেজিপ্রতি ২৩০ টাকা, চাঁদপুরের শুকনা মরিচ ২৫০ এবং চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও শঙ্খ নদীতীরবর্তী অঞ্চলের শুকনা মরিচ মানভেদে ২৪০-২৬০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। এক সপ্তাহ আগেও রায়পুরের শুকনা মরিচ ১৮০ টাকা, চাঁদপুরের শুকনা মরিচ ১৮০ এবং শঙ্খ ও হাটহাজারীর শুকনা মরিচ প্রতি কেজি ২০০-২১০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
চাক্তাইয়ের মেসার্স নেওয়াজ ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী শাহনেওয়াজ খান বলেন, গত মৌসুমে দেশে মরিচের ফলন কিছুটা কম হয়েছে। তাই বাজারে দেশীয় শুকনা মরিচের সরবরাহ তুলনামূলক কম। এখন ভারতের বাজারে বাড়তি বুকিং দরের জের ধরে আমদানি করা শুকনা মরিচের সরবরাহও কমে এসেছে। ফলে পণ্যটির দামের ওঠা-নামার প্রভাব পড়ছে দেশে উৎপাদিত শুকনা মরিচের দামে। আগামী দিনগুলোয় আবহাওয়া অনুকূলে থাকা সাপেক্ষে সরবরাহ বর্তমানের তুলনায় বাড়ানো সম্ভব না হলে শুকনা মরিচের দামে বড় কোনো পরিবর্তন না-ও আসতে পারে বলে মনে করছেন তিনি।
সানবিডি/এনজে