এই অসময়ে বরিশালের মোকাম ইলিশে ভরপুর
সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০১-২০ ১৪:০৮:১৪
ইলিশের প্রধান মৌসুম শেষ হয়েছে বেশ আগেই। সে সময় জেলেদের জালে যেমন ধরা পড়েছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ, তেমনি বাজারেও পর্যাপ্ত সরবরাহ ছিল। ইলিশ ধরার নিষিদ্ধ সময় পার হওয়ার পর গত বছর তুলনামূলক কম দামে ইলিশ কিনেছেন ক্রেতারা। তবে জানুয়ারি মাসকে ইলিশের জন্য অসময় হিসেবে ধরা হয়। অথচ এ সময়েও এবার বরিশালের নদ-নদীতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। যে কারণে বরিশালের মোকামগুলো এখন ইলিশে ভরপুর।
এদিকে অসময়ে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়াকে অস্বাভাবিক বলছেন জেলে ও ব্যবসায়ীরা। তবে এটাকে তারা আশীর্বাদ হিসেবে দেখছেন। অন্যদিকে মত্স্য অধিদপ্তর ও গবেষকরা এমন ঘটনাকে ইলিশের ‘সেকেন্ড সিজন’ হিসেবে ধারণা করছেন।
গতকাল সকালে বরিশাল ইলিশ মোকামে গিয়ে জানা যায়, এদিন মোকামগুলোয় প্রায় ৬০০ মণ ইলিশ সরবরাহ হয়েছে। মোকামের ব্যবসায়ীরা বলছেন, বরিশালের নদ-নদীতে অসময়ে ব্যাপক ইলিশ ধরা পড়ছে। এর আকারও বেশ ভালো। শীত মৌসুমেও পূর্ণিমার এই জোতে ইলিশের দেখা মেলায় ব্যবসায়ী ও জেলেদের মাঝে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। পাশাপাশি দেশের মত্স্য খাতের জন্য এটি একটি আশীর্বাদ বলেও মনে করেন তারা।
গতকাল নগরীর পোর্ট রোড মত্স্য মোকাম ঘুরে দেখা যায়, এখানে ইলিশের ছড়াছড়ি। ব্যবসায়ীরা ইলিশ কেনা-বেচায় ব্যস্ত। ক্রেতাও রয়েছে বেশ। মৌসুমের চেয়ে দাম অপেক্ষাকৃত নাগালের মধ্যে। এর মধ্যে এলসি সাইজের (রফতানি সাইজ) প্রতি মণ ইলিশ বিক্রি ২৫ হাজার টাকায় এবং কেজি সাইজের প্রতি মণ ৩২ হাজার টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, এর আগে দীর্ঘদিন ধরে অসময়ে এমন ইলিশ ধরা পড়ার ঘটনা ঘটেনি। পোর্ট রোডের মত্স্য ব্যবসায়ী জহির বলেন, আজ (গতকাল) মোকামে প্রায় ৬০০ মণ ইলিশ এসেছে। জানুয়ারিতে এত মাছ গত ১৫ বছরে পাওয়া যায়নি।
কয়েক দিন ধরে বরিশালের নদ-নদীতে ইলিশ ধরা পড়ছে উল্লেখ করে বরিশাল মত্স্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস বলেন, ইলিশের ভরা মৌসুম মূলত সেপ্টেম্বর-অক্টোবর। কিন্তু চলমান পূর্ণিমার জোতে যে পরিমাণ ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে ইলিশের মৌসুম আবার ফিরে এসেছে। গত ১৫-২০ বছরে এভাবে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে ইলিশ পাওয়া যায়নি। এছাড়া এ বছর শীতে মাছের আকারও ভালো।
বরিশাল মত্স্য আড়তদার সমিতির সভাপতি অজিৎ দাস বলেন, পৌষে এভাবে বড় ইলিশ দেখা যায়নি। যদিও জাটকা আছে প্রচুর। তবে এবার অসময়ে ইলিশ বেশি দেখা যাচ্ছে।
এদিকে অসময়ে পর্যাপ্ত ইলিশ পাওয়ার বিষয়ে চাঁদপুর মত্স্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের কাছে জানতে চেয়েছিল মত্স্য অধিদপ্তর। এ ব্যাপারে অধিদপ্তরকে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
এ ইনস্টিটিউটের ইলিশ গবেষক আনিচুর রহমান বলেন, ‘এটা ইলিশের সেকেন্ড সিজন হতে পারে। এ অবস্থা ধরে রাখতে হবে।’ জাটকা নিধন বন্ধ রাখা এবং মা ইলিশ রক্ষা করতে পারলে নতুন সিজনে ইলিশ আহরণের সম্ভাবনা বাড়বে বলেও মনে করেন তিনি।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস