রাজধানী থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার বিকল্প সড়ক হচ্ছে

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০১-২৯ ১২:৩০:৩৭


ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ও সিলেটে যেতে সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ীর বিকল্প রুট বের করেছে সরকার। চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের সব যানবাহন ঢাকায় ঢুকতে ও বের হতে যাত্রাবাড়ী-সায়েদাবাদের বিকল্প হিসেবে চার লেনের আলাদা একটি পথ চূড়ান্ত হয়েছে, যা হাতিরঝিল থেকে শুরু হয়ে রামপুরা সেতু, বনশ্রী, শেখেরজায়গা, আমুলিয়া-ডেমরা দিয়ে একটি লিংক চিটাগাং রোড মোড়ে সংযুক্ত হবে; অন্যটি তারাবোতে গিয়ে সংযুক্ত হবে।

সরকারি-বেসরকারি অংশীদারির ভিত্তিতে (পিপিপি) চার লেনের সড়কটি নির্মাণ করা হবে। তবে চার লেনের সড়ক নির্মাণের আগে ২৫ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ, চার লেন সড়কের নকশা, সমীক্ষা করার জন্য পরামর্শক নিয়োগ, ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের জন্য আলাদা একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার; যে প্রকল্পটি গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় (একনেক) অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রাজধানীর শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করেন। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ হবে এক হাজার ২০৯ কোটি টাকা। পুরো টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে জোগান দেওয়া হবে। আগামী ২০২৪ সাল নাগাদ জমি অধিগ্রহণ, ক্ষতিপূরণ ও সমীক্ষাসহ বিস্তারিত কাজ করবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর।
রাজধানী থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার বিকল্প সড়ক হচ্ছে
একনেক সভায় আলোচনা হয়, ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট এই দুই মহাসড়কে যানবাহনের চাপ দিন দিন বাড়ছে। এতে করে ঢাকা থেকে ওই দুই মহাসড়কে যেতে অনেক সময় অপচয় হচ্ছে। ঢাকা থেকে ওই দুই মহাসড়কে যেতে চার লেনের একটি সড়ক নির্মাণের বিষয়ে ২০১৮ সালে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার কমিটিতে বিল্ড-অপারেট ও ট্রান্সফার (বিওটি) মডেলে চার লেন সড়কটি নির্মাণের প্রস্তাবটি নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে চার লেন সড়কের কাজ শুরু করার আগে প্রাথমিক যেসব কাজ করা হবে সেগুলো করতেই গতকালের একনেক সভায় ‘সহায়ক’ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।

পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, চার লেনের সড়কটির কাজ শেষ হলে ঢাকা শহরের তেজগাঁও, রামপুরা, হাতিরঝিল, গুলশান-বাড্ডা অঞ্চলের মানুষ খুব সহজেই সিলেট মহাসড়ক কিংবা চট্টগ্রাম মহাসড়কে যেতে পারবে। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জ এলাকার মানুষ মেয়র হানিফ উড়াল সড়ক ব্যবহার না করেও ঢাকা শহরের অভ্যন্তরে স্বল্প সময়ে ঢুকতে পারবে।

একনেক-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, সভায় চার হাজার ৩২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ৯টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে জোগান দেওয়া হবে চার হাজার ২৪৯ কোটি টাকা, উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে পাওয়া যাবে ৭০ কোটি টাকা। আর ছয় কোটি টাকা সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে।

এদিকে গতকালের একনেক সভায় ১১৪ কোটি টাকা ব্যয়সংবলিত ‘রংপুর সিটি করপোরেশনের জন্য যানবাহন ও যন্ত্রপাতি কেনা’সংক্রান্ত একটি প্রকল্প অনুমোদন দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শুধু যন্ত্রপাতি কিনলেই হবে না, যন্ত্রপাতি পরিচালনার জন্য দক্ষ জনবল তৈরি করতে হবে। সেটি করতে না পারলে যন্ত্রপাতি কিনে লাভ নেই। যন্ত্রপাতি কিনে ফেলে রাখা যাবে না।

যানজটে অনেক সময় অপচয় হয়
এম এ মান্নান, পরিকল্পনামন্ত্রী

চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর উদ্দেশে ঢাকা থেকে বের হতে যানজটের কারণে অনেক সময় অপচয় হয়। পূর্বাঞ্চলের ওই সব জেলায় যেতে সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ীর ওপর নির্ভর করতে হয়। বিকল্প কোনো রাস্তা নেই। যানজট কমিয়ে আনতে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ও সিলেট যেতে বিকল্প পথ বের করা হয়েছে। হাতিরঝিল থেকে চিটাগাং রোড পর্যন্ত সড়কটি হবে চার লেনের। আর এটি হবে পিপিপি ভিত্তিতে। তবে চার লেনের সড়কটি করার আগে জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সমীক্ষা করতে হবে। সে জন্য আমরা একনেক সভায় চার লেনে উন্নীতকরণের জন্য সহায়ক হিসেবে প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদন করেছি। যেকোনো পিপিপি প্রকল্পের নিয়ম হলো মূল কাজের আগে আনুষঙ্গিক কাজে সরকার সহযোগিতা করবে। মূল কাজটি হবে পিপিপি ভিত্তিতে।