এক থেকে দেড় মিনিটে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ
সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০৩-০১ ১২:৪৭:০৬
এক বছরের ১২টি বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে একজন গ্রাহকের বছরে গড়ে ১ হাজার ২৪ মিনিট বা ১৭ ঘণ্টা সময় লাগলেও মোবাইল আর্থিক সেবার মাধ্যমে সর্বোচ্চ ২০ মিনিটেই ১২টি বিল পরিশোধ করতে পারেন গ্রাহক, যা একই সঙ্গে সময়সাশ্রয়ী, সহজ ও ঝামেলাহীন। সম্প্রতি দেশের বৃহত্তম আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশ পরিচালিত এক অনলাইন জরিপে এ তথ্য বেরিয়ে আসে।
‘বিদ্যুৎ বিল দিতে সারা বছরে আপনার কত সময় লাগছে?’ শিরোনামে গত ৯ থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিকাশ পরিচালিত অনলাইন জরিপে অংশ নেন ৭৪ হাজার ৩৩৮ জন বিল প্রদানকারী। তাঁদের দেওয়া তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ব্যাংকে গিয়ে বা বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থার অফিসে গিয়ে বা দোকানে গিয়ে বিল পরিশোধের প্রচলিত তিন পদ্ধতিতে বছরে প্রতিজনের গড়ে ১ হাজার ২৪ মিনিট বা ১৭ ঘণ্টা সময় লাগে। সঙ্গে রয়েছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিল প্রদান কেন্দ্রে পৌঁছানোর বাধ্যবাধকতা। কখনো কখনো লম্বা লাইন অপেক্ষা করা। এবং সংশ্লিষ্ট খরচ।
অন্যদিকে মোবাইল আর্থিক সেবায় এই কাজ করতে প্রতিবার এক থেকে দেড় মিনিট করে সময় লাগে এবং গ্রাহক তাঁর সুবিধামতো যেকোনো সময়ে যেকোনো স্থান থেকে বিল পরিশোধ করার সুযোগ পান। তা ছাড়া একাধিক গ্রাহকের বিলও পরিশোধ করা যায় একটি বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকেই।
সময় ও খরচ বাঁচিয়ে ঝামেলা এড়িয়ে খুব সহজে বিল পরিশোধ–সুবিধার কারণে মোবাইল আর্থিক সেবার (এমএফএস) মাধ্যমে বিল পরিশোধের পরিমাণও বাড়ছে। গত পাঁচ বছরে মোবাইল আর্থিক সেবায় ইউটিলিটি বিল পরিশোধ প্রায় ৩৪৫ শতাংশ বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৫ সালে এমএফএসের মাধ্যমে ১ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকার ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করা হয়েছিল, ২০১৯ সালে এসে যার পরিমাণ দাঁড়ায় ৫ হাজার ২৩ কোটি টাকা।
ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রথাগত পদ্ধতিতে বিল পরিশোধ করে থাকেন—এমন গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা যায়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিল গ্রহণে খুচরা টাকাসংক্রান্ত ঝামেলায় পড়তে হয়। সব মিলিয়ে বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানির মতো জরুরি সেবার বিল পরিশোধে ঝামেলা পোহান গ্রাহক। এমএফএস বা মোবাইল ওয়ালেট দিয়ে বিল পরিশোধে সময় ও খরচ বাঁচানোর পাশাপাশি নতুন অভিজ্ঞতা হয়েছে ব্যবহারকারীদের। কয়েকজন গ্রাহকের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য মিলেছে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বিদ্যুৎ বিল দেওয়া নিয়ে তাঁর যত দুর্ভোগের স্মৃতি আছে, তা বলতে গেলে অনেক সময় ব্যয় হবে। তিনি এখন বিকাশে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেন। বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে এখন আর তাঁর কোনো ঝামেলা নেই। সময়ও বাঁচে।
খিলক্ষেত এলাকার বাসিন্দা আব্দুস সালাম বলেন, তিনির ডেসকো প্রি–পেইড মিটার রিচার্জ ও গ্রামের বাড়ির পল্লী বিদ্যুৎ বিল দুটোই বিকাশে পরিশোধ করেন। বিল পরিশোধে অন্য কারও ওপর নির্ভরতা, বাড়তি সময় নষ্ট ও টাকা খরচের হাত থেকে বাঁচিয়েছে এই বিল পরিশোধ সেবা।
বিকাশ সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের জুন মাসে বিকাশ পে বিল সেবা চালু হওয়ার পরে ২২ কোটির বেশি বিল বিকাশে পরিশোধ করা হয়েছে। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি।
বিকাশের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার মিজানুর রশীদ বলেন, খুব শিগগির বাংলাদেশের সব বিদ্যুৎ বিতরণ কেন্দ্রের সব গ্রাহক বিকাশে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের সুযোগ পাবেন। একই সঙ্গে পাচ্ছেন বিল চেক করার ও বিল দেওয়ার পর রসিদ সংরক্ষণের সুযোগ। সনাতন পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের তিক্ত অভিজ্ঞতার বদলে বিকাশে বিল পরিশোধ অনন্য অভিজ্ঞতা হবে গ্রাহকের। সে লক্ষ্যেই কাজ করে চলছে।