মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দরসহ ৯ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন
সান বিডি ডেস্ক আপডেট: ২০২০-০৩-১০ ১৭:২৫:৩৫
মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর উন্নয়নসহ নয়টি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।এর মধ্যে মাতারবাড়ী প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা। যেখানে সরকারি তহবিল থেকে খরচ করা হবে ২ হাজার ৬৭১ কোটি ১৫ লাখ টাকা এবং জাইকার ঋণ থেকে আসবে ১২ হাজার ৮৯২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।
আজ মঙ্গলবার (১০ মার্চ) রাজধানীর শের-ই বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, নয়টি প্রকল্পের মোট খরচ ধরা হয়েছে ২৪ হাজার ১১৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা। এরমধ্যে সরকারি তহবিল থেকে খরচ করা হবে ৬ হাজার ১৫১ কোটি ২৬ লাখ টাকা। এছাড়া বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ২ হাজার ২১৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ১৫ হাজার ৭৪৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা খরচ করা হবে।
এ ব্যাপারে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী করোনা ভাইরাস নিয়ে আজ তেমন কিছু বলেননি। তবে সকলকে সাবধান থাকতে বলেছেন। বেশি করে ফল খেতে বলেছেন। মন্ত্রী বলেন, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর কোনো আবেগের জায়গা নয়। এটা প্রয়াজন। এ প্রকল্পের কিছু ব্যয় বেশি ধরা আছে। এক্ষেত্রে সব ব্যয় সরলীকরণ করলে হবে না। এর যথেষ্ট কারণও আছে। যেমন পায়রা ও মাতারবাড়ির জমির কনফিগারেশন এক নয়। তাছাড়া মাতারবাড়ীর সড়ক কোনো সাধারণ সড়ক হবে না। এগুলো মূলত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মতো হবে।’
প্রকল্পটিকে স্বপ্নের প্রকল্প হিসেবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে। পায়রা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ প্রকল্প প্রসঙ্গে তিনি জানান চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র শীর্ষেন্দুর দেওয়া চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে এই সেতুটি দ্রুত হয়েছে। সেজন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই। তবে এমনিতেই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন সব নদীতে যেন সেতু হয়। সে হিসেবে পায়রার নদীর ওপরও সেতু হতো। কিন্তু শীর্ষেন্দুর চিঠি পাওয়ায় সেটি ত্বরান্বিত হয়েছে।’
মন্ত্রী আরও জানান, একনেকে কৃষিমন্ত্রী জানিয়েছেন আপেল আমদানি কমে গেছে। কেন না মানুষ এখন দেশি বড়ই খাচ্ছে বেশি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সারাবিশ্ব করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা বিশ্বের বাইরে না। সুতরাং আমাদের এখানেও প্রভাব পড়বে। তবে কতটুকু প্রভাব পড়বে সেটি এখনো বলা যাচ্ছে না। কিন্তু ইতোমধ্যেই চীন থেকে অনেক ব্যবসা দেশে আসতে শুরু করেছে। এটি পজেটিভ দিক। এছাড়া অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, মাতারবাড়ী বন্দর নির্মাণ কাজ দ্রুত শুরু করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে, লেবু খালী-রামপুর-মির্জাগঞ্জ সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৪১৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।
কচুয়া-বেতাগী-পটুয়াখালী-লোহালিয়া-কালাইয়া সড়কের ১৭তম কিলোমিটারে পায়রা নদীর সেতু নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ৪২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।
স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সেস ফায়ারিং রেঞ্জের আধুনিকায়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৫১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
মাতারবাড়ী পোর্ট ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা।
পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের মৎস্যসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১১৮ কোটি ২৮ লাখ টাকা।
বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১৬১ কোটি ৫ লাখ টাকা।
জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলাধীন পাকেরদহ ও বালিজুরি এবং বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার জামথল যমুনা নদীর ভাঙন থেকে রক্ষা প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৫৮৪ কোটি ৭২ লাখ টাকা।
জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা কার্যালয়ের ২০ তলা ভিত বিশিষ্ট দুটি বেইজডসহ ১০ তলা প্রধান কার্যালয় নির্মাণ কাজ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১০২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ও ঢাকা স্যানিটেশন ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮৫৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা সচিব সচিব নুরুল আমিন, ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) শামীমা নার্গীস এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী।
সানবিডি/এনজে