করোনার প্রভাব পড়বে না ভারতের তুলা রফতানিতে

সান বিডি ডেস্ক আপডেট: ২০২০-০৩-২১ ২০:১৯:২৯


ভারতের রফতানি পণ্যের মধ্যে তুলার আধিপত্য যথেষ্ট। নভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপে বিশ্ব বাণিজ্যের হালচাল নড়েচড়ে বসেছে। তবে প্রাণঘাতী এ মহামারীর প্রভাব থেকে মুক্ত থাকতে পারে দেশটির তুলা রফতানি খাত। কটন অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া (সিএআই) সম্প্রতি এমন তথ্যই জানিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ভারতের তুলা রফতানিতে এ বৈশ্বিক মহামারীর প্রভাব খুব সামান্যই পড়বে। খবর আউটলুক ইন্ডিয়া ও রিপাবলিক ওয়ার্ল্ড।

ভারতে প্রতি বছর অক্টোবরে তুলার নতুন মৌসুম শুরু হয়। শেষ হয় পরের বছরের সেপ্টেম্বরে। সিএআই পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি ২০১৯-২০ মৌসুমে দেশটি থেকে সব মিলিয়ে ৪২ লাখ বেল (প্রতি বেলে ১৭০ কেজি) তুলা আন্তর্জাতিক বাজারে রফতানি হতে পারে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় সমান।

সিএআই সভাপতি অতুল জ্ঞানেত্র জানিয়েছেন, গত মৌসুমের ভারতের তুলা রফতানি খাতে নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় ছিল। বিশেষত চীনের বাজারে পণ্যটির রফতানি ছিল একবারেই কম। সে হিসেবে আগের মৌসুমের তুলনায় এবার পণ্যটির রফতানি খাতে মোটামুটি একই পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে।

অতুল জ্ঞানেত্র জানান, ২০১৮-১৯ মৌসুমে ভারত থেকে চীনে সব মিলিয়ে আট লাখ বেল তুলা রফতানি হয়েছিল। সে তুলনায় এবারই বরং রফতানি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কারণ চলতি মৌসুমের প্রথম পাঁচ মাসে (অক্টোবর-ফেব্রুয়ারি) বেইজিংয়ের বাজারে এরই মধ্যে ছয় লাখ বেল তুলা রফতানি করেছেন নয়া দিল্লির রফতানিকারকরা। এছাড়া চীনের বাইরে বিশ্বের অন্যান্য দেশে ভারতের তুলার চাহিদা চাঙ্গা থাকতে পারে।

সিএআই সভাপতি বলেন, চীনের বাইরে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে ভারতে উৎপাদিত তুলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে, যা এ মৌসুমেও স্থিতিশীল থাকতে পারে। এটাই দেশটির তুলা রফতানি খাতকে সচল রাখতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করতে পারে। ফলে গত মৌসুমের তুলনায় দেশটি থেকে কৃষিপণ্যটির রফতানি অপরিবর্তিত থাকবে বলে প্রত্যাশা করছেন তিনি।

সিএআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমের শুরু থেকে ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশে সব মিলিয়ে ১৪ লাখ বেল তুলা রফতানি করেছে ভারত। ভিয়েতনামে করেছে পাঁচ লাখ বেল এবং এর বাইরে অন্যান্য দেশে রফতানি করেছে আড়াই লাখ বেল। অর্থাৎ চলতি মৌসুমে এরই মধ্যে সাড়ে ২৭ বেল তুলা আন্তর্জাতিক বাজারে রফতানি করেছে ভারত। দেশটির হাতে এ মৌসুমের আরো ছয় মাসের বেশি সময় রয়েছে। তাই চলতি মৌসুমে পণ্যটির রফতানি লক্ষ্য পূরণ সম্ভব হবে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।

ভারত বিশ্বের শীর্ষ তুলা উৎপাদনকারী দেশ। অন্যদিকে পণ্যটির বৈশ্বিক শীর্ষ ভোক্তাগুলোর তালিকায় দেশটির অবস্থান দ্বিতীয়। ফলে অভ্যন্তরীণ বাজারের বিপুল চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি তুলা আন্তর্জাতিক বাজারে রফতানি করে দেশটি। সিএআইয়ের প্রাক্কলন অনুযায়ী, ২০১৯-২০ মৌসুমের শুরু থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশটিতে মোট ৩৫৪ লাখ ৫ হাজার বেল তুলা উৎপাদন হয়ে থাকতে পারে। এ সময় দেশটির অভ্যন্তরীণ বাজারে পণ্যটির সরবরাহ দাঁড়াতে পারে ২৯৮ লাখ ৪৩ হাজার বেল।

মৌসুমের শুরু থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশটিতে তুলার অভ্যন্তরীণ ব্যবহার ১৩৩ লাখ বেলে দাঁড়িয়েছে বলে প্রাক্কলন করেছে সিএআই। একই সময়ে দেশটিতে পণ্যটির মজুদ দাঁড়াতে পারে ১৩৭ লাখ ৯৩ হাজার বেলে। প্রতিষ্ঠানটির পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি মৌসুমের পুরোটা জুড়ে ভারতে তুলার অভ্যন্তরীণ ব্যবহার দাঁড়াতে পারে ৩৩১ লাখ বেল।