করোনায় চাকরিচ্যুত হচ্ছেন হাজার হাজার বিমান কর্মী

সান বিডি ডেস্ক আপডেট: ২০২০-০৩-২১ ২০:১৯:১০


চীন থেকে বিশ্বব্যাপী ভয়ঙ্করভাবে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস সংকটে এয়ারলাইন্সগুলোতে মন্দা কাটছে না। করোনা সংক্রমণ এড়াতে অধিকাংশ দেশ আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে। এতে ফ্লাইট কমে গেছে এয়ারলাইন্সগুলোর। তবে এভাবে আর কতদিন চলা যায়! অবশেষে লোকসান এড়াতে কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠান।

এ বিষয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বেতন ছাড়াই হাজার হাজার কর্মী সাময়িকভাবে ছাঁটাইয়ের (লে-অফ) প্রস্তুতি নিচ্ছে বাঘা বাঘা সব এয়ারলাইন্স। এসব তালিকায় আইএজি, ইজিজেট, রায়ানায়ার ও নরওয়েজিয়ানও রয়েছে।

ব্রিটিশ এয়ারলাইন্স ভার্জিন আটলান্টিকে কর্মী সংখ্যা ১০ হাজার। তারা জানিয়েছে, অচিরেই এসব কর্মীদের স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে দিতে বলা হবে।

ব্রিটিশ ও আইরিশ ট্রেড ইউনিয়ন ইউনাইট-এর জেনারেল সেক্রেটারি লেন ম্যাকক্লুসকি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে বলেছেন, ‘আপনি যদি যুক্তরাজ্যের এভিয়েন খাতকে বাঁচাতে জরুরি পদক্ষেপ না নেন, তাহলে নিশ্চিতভাবে এ খাতের হাজার হাজার কর্মীর চাকরি ঝুঁকিতে পড়বে। (এমনই পদক্ষেপ না নিলে) স্বাস্থ্য সংকট (করোনাভাইরাস) কেটে গেলেও প্রতিষ্ঠানটি কার্যকরীভাবে পুনরায় চালু হতে পারবে না।’

এভিয়েনে এমন সংকটকালীন অবস্থায় ৭.৫ বিলিয়ন পাউন্ড ঋণ সহযোগিতা চেয়েছে ব্রিটিশ এয়ারলাইন্স ভার্জিন আটলান্টিক।

তবে এ বিষয়ে সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে নরওয়ের বিমান সংস্থা নরওয়েজিয়ান এয়ার শাটল। প্রায় ৭ হাজার ৩০০ কর্মীকে ছাঁটাই করবে তারা, যা প্রতিষ্ঠানটির মোট কর্মীর ৯০ ভাগ। চলতি বছরের শুরু থেকে দেনায় জর্জরিত এয়ারলাইন্সটি ৮০ শতাংশের বেশি বাজার হারিয়েছে।

ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স গ্রুপ (আইএজি) ঘোষণা দিয়েছে, আগামী দুই মাসে তিন-চতুর্থাংশ ফ্লাইট কমিয়ে দেবে তারা। পাশাপাশি তারা বলেছে, খরচ কমিয়ে আনতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে এবং ক্যাশ ফ্লোর দিকে জোর দেয়া হচ্ছে। এর মানে হলো, তারা সাময়িকভাবে কর্মী ছাঁটাই করবে, কর্মঘণ্টা কমিয়ে দেয়াে হবে এবং কর্মীদের বেতনবিহীন ছুটিতে যেতে বাধ্য করা হবে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বব্যাপী ৭ হাজার ১৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিভিন্ন দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৮২ হাজার ৫৫০। অপরদিকে, হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭৯ হাজার ৮৮১ জন।

বিশ্বের ১৬২টি দেশ ও অঞ্চলে করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। চীনে নতুন করে আরও ২১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। ফলে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৮৮১। দেশটিতে এখন পর্যন্ত মারা গেছে ৩ হাজার ২২৬ জন।

চীনের পর সর্বোচ্চ আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ইতালিতে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ২৭ হাজার ৯৮০ এবং মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ১৫৮ জনের। দেশটিতে নতুন করে ৩ হাজার ২৩৩ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।