সারাবিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃত বেড়ে ৭১২৫
সান বিডি ডেস্ক আপডেট: ২০২০-০৩-২১ ২০:১৭:৪৯
চীন থেকে গোটা বিশ্বে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছে সাত হাজার ১২৫ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় কেবল ইতালিতেই মারা গেছে ৩৪৯ জন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ৮২ হাজার ৪৭ জন বলে জানা গেছে। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের।
এ ছাড়া এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৭৮ হাজার ২০৪ জন। এরই মধ্যে বিশ্বের ১৫৮টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস।
এর মধ্যে ইতালির অবস্থা সবচেয়ে ভয়াবহ। দেশটিতে কয়েক দিন ধরে মৃত্যুর সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। সেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৩৪৯ জনের।
এর একদিন আগে মারা গেছে ৩৬৮ জন। ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ১৫৮ জনে।
অন্যদিকে দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ২৭ হাজার ৯৮০ জনে। ইতালিতে মৃত্যুর মিছিল বন্ধের চেষ্টায় রোমের পথে হাঁটলেন পোপ ফ্রান্সিস। চার্চে গিয়ে প্রার্থনাও করেছেন তিনি।
ইতালির পরই স্পেনের পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় গিয়ে পৌঁছেছে। সেখানে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪২ জনে। এ ছাড়া মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার ৯৪২ জন।
জরুরি অবস্থা জারির ফলে স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদের রাস্তায় আসা মানুষদের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই করছে পুলিশ। মেট্রো ট্রেনগুলোও সব জনশূন্য।
অন্যদিকে ফ্রান্সে এখন পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ১৪৮ জনে দাঁড়িয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন ছয় হাজার ৬৫৩ জন। চীনের জনশূন্য শহরের মতো রূপ পেয়েছে ফ্রান্সের প্যারিস।
প্যারিসের যে সড়কে লাখো মানুষের চলাচল ছিল, জরুরি অবস্থা জারি করার পর সেগুলো এখন জনশূন্য। এ ছাড়া স্কুল-কলেজ সব বন্ধ। অফিস-আদালত, ক্যাফে কিছুই খোলা নেই।
দেশটিতে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে বিশ্বখ্যাত পারফিউম নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এলভিএমএইচ এবার হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি শুরু করেছে, যা বিনামূল্যে ফরাসি নাগরিকদের বিতরণ করা হবে।
এদিকে করোনাভাইরাস ঠেকাতে সোমবার থেকে ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক ও লুক্সেমবার্গ সীমান্তে কড়াকাড়ি আরোপ করে জার্মানি।
দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে সাত হাজার ২৭২ জনে দাঁড়িয়েছে।
করোনাভাইরাসের ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ে আজ মঙ্গলবার ভিডিও কনফারেন্স করার কথা রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতাদের।
যুক্তরাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আক্রান্ত হয়েছেন দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় যুক্তরাজ্য সরকার বয়স্কদের সেলফ আইসোলেশনে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পরিস্থিতিও খুব একটা ভালো নয়। সেখানে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৮১ জনের। এ ছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে সাড়ে চার হাজারেরও বেশি মানুষ। করোনা আতঙ্কে নিত্যপণ্যের দোকানে গিয়ে বেশি বেশি কেনাকাটা করে মজুদ করছেন মার্কিনিরা। এ নিয়ে কথাও বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্প বলেন, ‘আপনারা অতিরিক্ত পণ্য কিনবেন না। পরিস্থিতি সহজভাবে নেয়ার চেষ্টা করুন। ওয়ালমার্ট জানিয়েছে, আপনারা ক্রিসমাসের চেয়েও বেশি পণ্য কিনছেন। আপনারা আমাদের ওপর আস্থা রাখবেন, এটিই আমার প্রত্যাশা।’
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করা পরিবার ও ব্যবসায়ীদের সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইউএস ফেডারেল রিজার্ভের প্রধান জেরোমি পাওয়েল। যে সময়টায় মানুষদের বিপদের মধ্যে ফেলছে করোনাভাইরাস, সে সময়টায় যুক্তরাষ্ট্র তার জনগণের পাশে থাকবে বলেও জানানো হয়।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানের পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ পর্যায়ে যাওয়ায় অন্য দেশগুলোও আতঙ্কিত। ইরানে এখন পর্যন্ত করোনায় ৮৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ হাজার।
রাশিয়ায় করোনা মোকাবেলায় নতুন টাস্কফোর্স গঠন করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবেয়ানিনের নেতৃত্বে রোববার থেকে কাজ শুরু করেছে এই টাস্কফোর্স। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৯৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে সেখানে এখনও কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।
লেবাননের বৈরুতের সাগর সৈকতে থাকতে পারছেন না পর্যটকরা। সব ধরনের জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। দেশটিতে ১০৯ জন আক্রান্তের পাশাপাশি মৃত্যু হয়েছে তিনজনের।
করোনাভাইরাস আতঙ্কে জর্ডানের কারাগারে শুরু হয়েছে দাঙ্গা। এর ফলে মারাও গেছেন কয়েকজন।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস