করোনা চিকিৎসায় দশদিনেই বিশেষ হাসপাতাল নির্মাণ: অর্থমন্ত্রী

সান বিডি ডেস্ক আপডেট: ২০২০-০৩-২২ ২১:৩০:৪৪


বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া ভয়াবহ করোনাভাইরাস মোকাবেলায় প্রয়োজনে চীনের মতো দশদিনেই বিশেষ হাসপাতাল নির্মাণে সরকার অর্থায়ন করবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, করোনা চিকিৎসা কিংবা এ রোগ নিয়ন্ত্রণে যত টাকা প্রয়োজন হবে তাই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে দেয়া হবে। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তরিক রয়েছেন। তিনি সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, যে ভাইরাস নিয়ে সারাবিশ্ব বিপদে আছে, আমরা সেই ভাইরাস থেকে মুক্ত আছি বলতে পারব না। যাতে করে সংক্রমণ কম রাখা যায় সে কাজটি করতে হবে। আমাদের এখন অভিজ্ঞতা রয়েছে। চীন যখন শুরু করেছিল তাদের অভিজ্ঞতা ছিল না।

তিনি বলেন, সবাই সবার জায়গা থেকে বলতে হবে কীভাবে সবাই করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত থাকতে পারব। এটি সকলের দায়িত্ব। আমি আপনাদের আশস্ত করতে পারি, এ ভাইরাস মোকাবেলায় আমাদের আর্থিক সক্ষমতা রয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের (যদি) যন্ত্রপাতি বা লজিস্টিক সাপোর্ট দরকার হয় দেয়া হবে। চীন যেভাবে হাসপাতাল করেছে, সে ধরনের কোন বিশেষ হাসপাতাল যদি করতে হয়, তবে তা করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি প্রধানমন্ত্রী কখনও না করবেন না অর্থায়ন করার জন্য। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যাতে এ রোগ নিয়ন্ত্রণ ও মোকাবেলায় দক্ষতার পরিচয় দিতে পারে সেজন্য তাদের সব ধরনের সাপোর্ট দেয়া হবে। এছাড়া করোনাভাইরাস মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ৫০ বিলিয়ন ডলার অর্থ বরাদ্দ করেছে। সেই টাকা বাংলাদেশ পাবে কি-না জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, আইএমএফ টাকা দিলে আমরাও পাব। অন্যরাও দেবে। কোন আন্তর্জাতিক মহল থেকে সাহায্য-সহযোগিতা পাওয়া গেলে তা অবহিত করা হবে।

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোন প্রতিষ্ঠান ট্যাক্স ফাইল হালনাগাদ করে জমা না দিলে তাকে সরকারী কাজের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হবে না বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকারী ক্রয় কমিটির বৈঠক থেকে যেসব ঠিকাদারদের যত প্রজেক্ট অনুমোদন দেব তাদের ট্যাক্স ফাইল আপ টু ডেট (হালনাগাদ) আছে কিনা তা দেখা হবে। যাদের ট্যাক্স লাস্ট এ্যাসিসমেন্টের কপি আমাদের দেবে না, তাদের এ কাজ থেকে বাইরে রাখা হবে। কাজ পাওয়ার জন্য কোয়ালিফাই করতে হলে এখন থেকে ট্যাক্স ফাইল এবং আইটিটেন বি আপ টু ডেট রাখতে হবে। তাদের সম্পদের পরিমাণ কত এবং কি পরিমাণ তারা ট্যাক্স পেমেন্ট করে তা জানাতে হবে। ট্যাক্স প্রদানের সর্বশেষ সার্টিফিকেট কাজ পাওয়ার জন্য টেন্ডার পত্রের সঙ্গে দিতে হবে। আমরা এসব কাগজপত্র বাধ্যতামূলক করে দিয়েছি। তিনি বলেন, এর মাঝেও আমরা নতুন নতুন ট্যাক্স পেয়ারস পাব এবং আমাদের রেভিনিউ জেনারেশন আরও বাড়বে সে জন্য আমরা এ কাজটি করে দিয়েছি। উৎসেকর বিষয়ে অপর এক প্রশের জবাবে তিনি বলেন, যাদের থেকে আমরা উৎসেকর নিই সেটা অনেকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয় না। যে পরিমাণ লাভ করবে বলে আমরা ধারণা করেছিলাম সে পরিমাণ লাভ করতে পারে না। সুতরাং তাদের রিফান্ড দেয়া লাগে। রিফান্ড দিতে অনেক জটিলতার সৃষ্টি হয়। সে জন্য আমরা একটাকে আরও সহজ করে দেব। হয়তো আমরা একটাকে অন্য আকারে নিয়ে যাব। এদিকে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় আগামী জুলাই থেকে ৫০০ পিপিএম (০.০৫%) এর পরিবর্তে ৫০ পিপিএম (০.০০৫%) সালফার মানমাত্রার ডিজেল আমদানির নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয় বলে জানান অর্থমন্ত্রী। সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় ৭টি প্রস্তাবে সায় দেয়া হয়েছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী জানান, আরবান রেজিলিয়েন্স (ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন অংশ) প্রকল্পেরে আওতায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের জন্য ন্যাশনওয়াইড ডিজিটাল মোবাইল রেডিও নেটওয়ার্ক স্থাপন ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। চায়নার হাইতিরা কমিউকেসন্স কর্পোরেশন ১১৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকায় এ কাজ করবে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অধীনে বার্থ অপারেটর নিয়োগে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এছাড়া নদী খনন সংক্রান্ত কয়েকটি প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়।