রফতানি, রেমিট্যান্স ও বিনিয়োগ কমার আশঙ্কা সিপিডির

সান বিডি ডেস্ক আপডেট: ২০২০-০৩-২১ ২০:০৩:০৬


চীন থেকে সারাবিশ্বে ভয়ঙ্করভাবে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস।এই ভাইরাসের প্রভাবে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের ছোট ব্যবসা। একই সঙ্গে বিশ্বব্যাপী এ মহামারির কারণে রফতানি বাণিজ্য, রেমিট্যান্স ও ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)।

আজ শনিবার (২১ মার্চ) বেলা ১১টায় ভার্চুয়াল মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রিসার্চ ফেলো তৌফিক ইসলাম খান, বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

‘করোনাভাইরাসের স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি এবং করণীয়’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বর্তমান পরিস্থিতিতে এসব ঝুঁকির পর্যালোচনা এবং সম্ভাব্য করণীয় তুলে ধরা হয়।

এসময় ড. ফাহমিদা জানান, স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা চিন্তা করে মানুষ কম বাইরে বের হবে। এতে সমস্যায় পড়বে নিম্ন আয়ের মানুষ, বিশেষ করে যারা ছোট ব্যবসা করছে। তাদের ব্যবসা কমে যাবে। এতে করে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এছাড়া দেশের রফতানি খাত ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ যেসব দেশে আমরা রফতানি করি যেমন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি, কানাডাসহ ইউরোপের অনেক দেশ এখন করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে চাহিদা কমে গেছে, চলতি অর্থবছরে আমাদের রফতানি নেতিবাচক রয়েছে। এ মহামারির কারণে নেতিবাচক ধারা আরও বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। এছাড়া দেশের অনেক ছোট ব্যবসায়ীদের ব্যবসা কমে যাওয়ায় কর্মী ছাঁটাই করবে। এতে করে অনেকে কর্মহীন হয়ে পড়বে, কর্মসংস্থানে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

তিনি আরো জানান, বৈশ্বিক ক্ষতির কারণে অনেক ব্যবসায়ী নতুন করে বিনিয়োগে আসবে না । এতে করে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ কমে যাবে। অন্যদিকে ব্যয় ব্যবস্থাপনা সমন্বয় করতে গিয়ে সরকারি বিনিয়োগও কমে যাবে। কারণ করোনা মোকাবিলায় সরকারের এখন স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন খাতে ব্যয় বেশি করতে হবে। যা অপ্রত্যাশিত ছিল।

এ সময় স্বাস্থ্য খাতের ব্যয় বাড়ানোর পাশাপাশি ক্রান্তিকালীন সামাজিক সুরক্ষায় সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।

এদিকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে। এতে প্রতিনিয়ত মৃতের সংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। ভাইরাসটি বাংলাদেশেও হানা দিয়েছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে করোনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। দেশে মহামারির প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

মহামারিরূপে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের কারণে পুরো বিশ্ব প্রায় বিছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে করে অর্থনৈতিক সঙ্কট তৈরি হয়েছে। এ কারণে বিশ্বের প্রায় আড়াই কোটি মানুষ চাকরি হারাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)।

সংস্থাটি বলছে করোনাভাইরাসের প্রভাব খুব স্বল্পমাত্রায় হলে অন্তত ৮০ লাখ মানুষ চাকরি হারাতে পারেন। আর খুব বেশি মাত্রায় প্রভাব পড়লে বেকার হবে ২ কোটি ৪৭ লাখ। এর আগে ২০০৮-০৯ সালে বৈশ্বিক আর্থিক সঙ্কটের সময় ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ চাকরি হারিয়েছিলেন।

সানবিডি/এনজে