পৌর নির্বাচনে প্রার্থীদের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু

প্রকাশ: ২০১৫-১২-০৯ ১০:৫৭:১৫


AL.ECআজ থেকে সারা দেশে  পৌরসভা নির্বাচনে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হচ্ছে।নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা ফজরের নামাজের পর থেকেই প্রচারণায় নেমে পড়েছেন। অনেকে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে দোয়া চাইছেন। আবার কেউ কেউ বাজারে দোকানে দোকানে ঘুরে ভোট প্রার্থনা করছেন।

 মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা নিজ সমর্থনে ভোট চাইতে পারবেন। তবে ১৪ ডিসেম্বর সব প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার আগে দলীয় প্রার্থীরা প্রতীক নিয়ে প্রচারণা চালাতে পারবেন কিনা- তা মঙ্গলবার রাত ১০টা পর্যন্ত স্পষ্ট করেনি নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সংশ্লিষ্টদের মতে, ২৩৫ পৌরসভায় রাজনৈতিক দলগুলোর মনোনীত প্রার্থীদের দলীয় প্রতীক সবারই জানা আছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কে কোন প্রতীক পাচ্ছেন তা নির্ধারিত হবে ১৪ ডিসেম্বর। দলীয় প্রতীকে প্রচার শুরু করার সম্ভাবনা রয়েছে দলীয় প্রার্থীদের। এক্ষেত্রে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বৈষম্যের শিকার হবেন বলে আশংকা তাদের।
কমিশনের একটি সূত্র জানায়, প্রতীক বরাদ্দের আগেই রাজনৈতিক দলগুলো মনোনীত প্রার্থীরা প্রতীক নিয়ে প্রচার চালাতে পারবেন কিনা- তা নিয়ে মঙ্গলবার পর্যন্ত কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি নির্বাচন কমিশন। বিষয়টি নিয়ে কমিশনের কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। আজ এ বিষয়ে কমিশন থেকে একটি প্রেস নোট বা ব্যাখ্যা দেয়া হতে পারে।
সূত্র জানায়, প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে প্রতিটি পৌরসভায় একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দেয়া হবে। প্রার্থীরা আচরণবিধি প্রতিপালন করছেন কিনা তা দেখভাল করবেন তিনি। ইতিমধ্যে নির্বাচনী এলাকায় ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিম ও আইনশৃংখলা মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। এ দুই কমিটির সদস্যরাও বিষয়টি মনিটরিং করবে। ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের আগ পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তারা বিষয়টি দেখভাল করবেন।
তবে প্রচারণা চালানোর ক্ষেত্রে আচরণবিধি মেনে চলতে প্রার্থীদের অনুরোধ জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, কেউ আচরণবিধি লংঘন করলে ব্যবস্থা নিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তিবিশেষকে ছাড় দেয়া হবে না। ইসির কাছে সব প্রার্থী সমান।
 নির্বাচন কর্মকর্তারা জানান, আচরণবিধি অনুযায়ী প্রার্থীদের বিধিনিষেধ মেনে প্রচারণা চালাতে হবে। এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে পরিপত্র জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। এতে বলা হয়েছে, প্রচারণার ক্ষেত্রে প্রার্থীদের বেলা ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মাইক ব্যবহার করতে পারবে। তবে কোনো প্রার্থী একটি ওয়ার্ডে একই সঙ্গে পথসভার জন্য একটি ও প্রচারণার জন্য একটির অধিক মাইক ব্যবহার করতে পারবেন না। এছাড়া কোনো ধরনের মিছিল, যানবাহন মিছিল বা মশাল মিছিল করা যাবে না। নির্বাচনের উদ্দেশে পথসভা বা ঘরোয়া সভা করা গেলেও জনসভা বা শোভাযাত্রা করা যাবে না। জনগণের চলাচলের অসুবিধা হয় এমন কোনো সড়কে প্রার্থী বা প্রার্থীর পক্ষে কোনো ব্যক্তি পথসভা করতে পারবেন না বা একই উদ্দেশে মঞ্চ তৈরি, বিলবোর্ড স্থাপন, তোরণ, ঘর নির্মাণ বা ক্যাম্প স্থাপন করা বা কোনো ধরনের আলোকসজ্জা করা যাবে না।
 পোস্টারে অবশ্যই প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি, মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানের নাম, ঠিকানা ও তারিখ থাকতে হবে। প্রচারণার সময় কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নিজ ছবিও প্রতীক ব্যতীত অন্য কারও নাম বা প্রতীক ছাপাতে বা ব্যবহার করতে পারবেন না। তবে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কোনো রাজনৈতিক দলের মনোনীত হলে সেক্ষেত্রে তিনি কেবল তার দলের বর্তমান দলীয় প্রধানের ছবি পোস্টারে বা লিফলেটে ছাপাতে পারবেন। অন্যদিকে কারও জমি, ভবন বা স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির ক্ষতিসাধন, শান্তি নষ্ট বা সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রচারণা চালানো থেকে বিরত থাকতে হবে।

উল্লেখ্য, ২৪ নভেম্বর ২৩৫ পৌরসভায় তফসিল দিয়ে আগামী ৩০ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। এ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন ছিল ৩ ডিসেম্বর, যাচাই-বাছাই ৫ ও ৬ ডিসেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহার ১৩ ডিসেম্বর। সর্বশেষ ২০১১ সালে ২৫৯টি পৌরসভা নির্বাচন হয়। স্থানীয় নির্বাচনের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্নের আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে।