করোনা ও সন্ত্রাসীদের হামলা

দক্ষিণ আফ্রিকায় বিপদগ্রস্ত প্রবাসীরা

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০৮-০৫ ০৮:২০:৩৭


চলতি বছরের ২৬ জুলাই দক্ষিণ আফ্রিকার ব্লুমফন্টেইন শহরে সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে মারা যান বাংলাদেশী যুবক সজল খান। তিনি শহরের একটি দোকানে পণ্য ডেলিভারি দেয়ার সময় সন্ত্রাসীর গুলিতে প্রাণ হারান। এর আগে দেশটির জোহানেসবার্গ শহরে ২৪ জুলাই ব্যবসায়ী ফরিদের দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয় একদল ডাকাত। সেই আগুনে পুড়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনিও।

এ ব্যাপারে দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশীরা জানিয়েছেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাকাত ও দুর্বৃত্তদের হামলায় বাংলাদেশী প্রবাসীদের আহত ও নিহত হওয়াটা নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে এ ধরনের হামলা আরো বেড়ে গিয়েছে। বর্তমানে একদিকে করোনা সংকটের কারণে আর্থিক অনিশ্চয়তা, অন্যদিকে জানমালের নিরাপত্তা দুটো নিয়েই শঙ্কায় আছেন সেখানকার বাংলাদেশীরা।

দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশী কমিউনিটি সংগঠন বাংলাদেশ পরিষদ অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য বলছে, গত দুই মাসে দেশটিতে সন্ত্রাসীরা বেশ কয়েকজন বাংলাদেশীকে অপহরণ করে। এদের মধ্যে কাউকে কাউকে হত্যাও করা হয়। আবার অনেককে মুক্তিপণের মাধ্যমে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। গত চার বছরে দেশটিতে ৪৫২ জন বাংলাদেশী হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এদের মধ্যে ২০১৯ সালের প্রথম নয় মাসে ৮২ জন খুন হন।

সন্ত্রাসীদের উৎপাতে বেশ কয়েকটি শহর আতঙ্কের নগরে পরিণত হয়েছে। প্রায় সময় এসব শহরে বাংলাদেশীদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে লুট, চাঁদাবাজি, অপহরণ ও হত্যার ঘটনা ঘটে। কখন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়, এমন আতঙ্কে থাকেন প্রবাসীরা।

এ বিষয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশী কমিউনিটি সংগঠন বাংলাদেশ পরিষদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আলী হোসেন জানান, লকডাউনের পর এখানকার মানুষের মধ্যে কিছুটা আশা জেগেছিল পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, কিন্তু হলো তার বিপরীত। এমনিতেই এখানে লুণ্ঠন, ডাকাতি নিয়ে বাংলাদেশীরা সবসময় উদ্বেগে থাকেন, তার মধ্যে করোনায় মৃত্যু আতঙ্ক আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।

বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকায় কতসংখ্যক বাংলাদেশী বসবাস করছেন, সে সম্পর্কে সরকারি কোনো তথ্য পাওয়া না গেলেও সেখানকার প্রবাসীদের সংগঠনসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকায় তিন লাখের বেশি বাংলাদেশী বসবাস করছেন। এদের বড় অংশই অবৈধভাবে এবং অনেকেই আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে সেখানে আছেন। ক্ষুদ্র ব্যবসা থেকে শুরু করে নানা ধরনের পেশায় নিয়োজিত এসব বাংলাদেশীর দিন কাটছে এখন চরম অনিশ্চয়তায়। করোনার কারণে তাদের অনেকেরই ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধের উপক্রম।

প্রবাসীদের বর্তমান অবস্থা জানতে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাব্বির আহমেদ চৌধুরীর সঙ্গে অনেকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।