থাইল্যান্ডের মত ইন্দোনেশিয়াতেও জিম্মি হচ্ছে বাংলাদেশিরা
প্রকাশ: ২০১৫-১২-১২ ১০:০৯:১৬
মানব পাচারে কাজ করছে বাংলাদেশ, ভারত, ইন্দোনেশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়ার একটি শক্তি চক্র। বাংলাদেশিদের নিউজিল্যান্ডে নিয়ে কাজ দেয়ার কথা বলে মাঝপথ ইন্দোনেশিয়ায় জিম্মি করে রাখছে চক্রটি। তারপর টেলিফোনে তাদের পরিবারের কাছ থেকে আদায় করে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের অর্থ। এই চক্রের মূল হোতা একজন রুমানিয়ান বংশোদ্ভুত অস্ট্রেলিয়ান।
গত বৃহস্পতিবার রাতে উত্তরা, বনানী ও তাঁতীবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এই চক্রের তিন সদস্য আল আজাদ, ফিরোজ আহমেদ ও কৃষ্ণ পোপাল দে’কে ১৫ লাখ টাকাসহ গ্রেপ্তার করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদেই বেরিয়েছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য।
চক্রটি অনলাইনে বিজ্ঞাপন দিয়ে আকর্ষণীয় বেতনের লোভ দেখিয়ে বিদেশে মানবপাচার করতো। গ্রেপ্তারকৃত তিনজনকে শুক্রবার আদালতে পাঠিয়ে ১০দিনের রিমান্ড চাওয়া হলে আদালত তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
সিআইডি’র বিশেষ পুলিশ সুপার মীর্জা আব্দুল্লাহেল বাকী জানান, অনলাইনে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আকর্ষণীয় বেতনে নিউজিল্যান্ড পাঠানোর নামে কয়েকজনকে তারা ইন্দোনেশিয়ায় পাচার করে। বাংলাদেশি নাগরিকদের বিভিন্ন দেশে পাচারের সঙ্গে রুমানিয়ান বংশোদ্ভূত জন নামে এক অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক জড়িত। তিনি এই চক্রের মূলহোতা। এচক্রে বাংলাদেশি ছাড়াও বেশ কয়েকজন ভারতীয় ও ইন্দোনেশীয় নাগরিক রয়েছে। চক্রটি শুধু বাংলাদেশ থেকে নয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থেকে মানবপাচার করে। পরবর্তীতে ভুক্তভোগীদের জিম্মি করে অর্থ হাতিয়ে নেয়।
তিনি আরো জানান, বাংলাদেশ থেকে ইন্দোনেশিয়ায় নিয়ে যাওয়ার পর ‘ভিকটিমদের’ সেখানে আটকে রাখা হয়। তাদের পাসপোর্টে জাল ভিসা লাগিয়ে বলা হয়, কয়েকদিনের মধ্যে তাদের নিউজিল্যান্ড নেয়া হবে। এভাবে কিছুদিন আটকে রেখে পাচারকারীরা বাংলাদেশে ‘ভিকটিমদের’ পরিবারকে চাপ দিয়ে অর্থ আদায় করে আসছিল।
সিআইডি কর্মকর্তা জানান, অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক জন বাংলাদেশে বেশ কয়েক দফা এসেছিলেন। সর্বশেষ ৩ মাসে আগে বাংলাদেশে আসেন বলে তথ্য রয়েছে। জনের ব্যাপারে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। বিদেশে অবস্থানরত চক্রের অন্যান্য সদস্যদের যথাযথ আইনের আওতায় নিয়ে আসতে খুব শিগগিরই ইন্টারপোলের সঙ্গে যোগাযোগ করবে সিআইডি।
তবে ইন্দোনেশিয়ায় এভাবে কতজন বাং
লাদেশিক জিম্মি কওে রাখা হয়েছে এবঙ তাদেও বর্তমান অবস্থা কী এ সম্পর্কে সিআইডি’র এই কর্মকর্তা জানান, রিমান্ডে জিঙ্গাসাবাদেও পরই এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।
এরআগে বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে থাইল্যান্ডের জঙ্গলে বাংলাদেশিদের আটকে রেখে নির্যাতন করে বাংলাদেশে তাদের পরিবারের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। থাইল্যান্ডের জঙ্গলে পাচারকারী চক্রের নির্মম নির্যাতনের ফলে মৃত্যুবরণকারী এরকম শতাধিক বাংলাদেশির মৃতদেহ উদ্ধারও করে থাই পুলিশ।