পুনর্গঠন কমিশনের ইতিবাচক সিদ্ধান্তে আস্থা ফিরেছে বিনিয়োগকারীদের
নতুন আশায় প্রাণ ফিরেছে ঝিমানো পুঁজিবাজারে
:: আপডেট: ২০২০-০৮-৩১ ১১:২১:০২
২৫ মার্চ ৪০০৮ পয়েন্ট নিয়ে পুঁজিবাজার লেনদেন বন্ধ হয়।
৬৬ দিন বন্ধ থাকার পর নতুন কমিশন দায়িত্ব নিলে ৩১ মে লেনদেন শুরু হয়।
সর্বশেষ কার্যদিবস ২৭ আগস্ট ৯০৭ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
সূচক বেড়েছে ৮৬৫ পয়েন্ট
পুঁজিবাজার সার্বিক সুশাসনের ঘাটতি আর ক্রমাগত সূচক ও শেয়ারের দরপতনের কারণে বাজারবিমুখ হয়ে পড়েছিলেন অনেক বিনিয়োগকারী। নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে পুঁজিবাজারের সংকট আরও তীব্র হয়ে ওঠে। করোনার কারণে বন্ধ হয়ে যায় দেশের পুঁজিবাজার। তবে নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর ঝিমানো পুঁজিবাজার জেগে উঠেছে। নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে পুঁজিবাজারের সাথে সম্পৃক্ত সকল স্টেইকহোল্ডরা।
বাজারে সুশাস ফিরবে এমন আশায় বাজারমুখী হচ্ছেন সাইডলাইনে থাকা বিনিয়োগকারীরাও। পাশাপাশি সক্রিয় হয়ে উঠছেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। এতে ধারাবাহিকভাবে সূচক ও লেনদেন বাড়ছে পুঁজিবাজারে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন নেতৃত্ব দায়িত্ব নেয়ার পর বাজার ও বিনিয়োগবান্ধব বেশকিছু উদ্যোগ নেন। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরে আসতে শুরু করে। তাছাড়া করোনাভীতি কাটিয়ে ধীরে ধীরে অর্থনীতি স্বাভাবিক অবস্থার দিকে যাচ্ছে। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থাও ফিরে আসছে। সূচক কমতে কমতে এমন অবস্থায় গিয়ে দাঁড়িয়েছিল যে অনেক ভালো কোম্পানির শেয়ারের দামও যৌক্তিক মূল্যের অনেক নিচে নেমে যায়। ফলে এক শ্রেণীর সুযোগসন্ধানী বিনিয়োগকারী ভালো মুনাফার প্রত্যাশায় কম দামে এসব শেয়ারে বিনিয়োগ করছেন। আর এসব কিছুর ইতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে বাজারে।
প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের নের্তৃত্বে কমিশন দায়িত্ব নিয়ে ৬৬ দিন বন্ধ থাকা পুঁজিবাজার ৩১ মে লেনদেন শুরু করে। করোনার প্রভাবে বন্ধ হওয়ার দিন ২৫ মার্চ সূচক ছিলো ৪০০৮ পয়েন্ট। নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর সূচক বেড়েছে ৮৬৫ পয়েন্ট।
আস্থা ফেরার কারণ: বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর পুঁজিবাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য জিনো টলারেন্সে অবস্থান করছেন। আর্থিক প্রতিবেদনে অসংগতি থাকায় ইতোমধ্যে ১১টি কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তবের (আইপিও) আবেদন বাতিল করেছেন। শেয়ার কারসাজির দায়ে বড় ধরণের জরিমানা করেছেন কয়েকটি কোম্পানিকে। ফ্রিজ করেছেন অনেক কোম্পানির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পরিচালকদের বিও হিসেবে থাকা শেয়ার। বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে জব্দ করা হয়েছে অনেকের ব্যাংক হিসাব।
এর বাহিরেও ম্যাজিকের মতো কাজ করছে পরিচালকদের ২ শতাংশ ও সম্মিলিতভাবে ৩০ শেয়ার ধারণের বিষযে কমিশনের নির্দেশনা। বন্ড মার্কেটকে গতিশীল করতে এনবিআরের সাথে বৈঠক করে কর সুবিধা বাড়ানো, ব্যাংকের নগদ লভ্যাংশ সেপ্টেম্বরের আগে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে ফেরাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে কথা বলা, আইসিবিকে শক্তিশালী করতে উদ্যোগ নেওয়াসহ অনেক ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
বিএমবিএ সভাপতি ও ইবিএল সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ছায়েদুর রহমান সানবিডিকে বলেন, নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে কাজ করে যাচ্ছেন। তার ইতিবাচক প্রভাবও বাজারে দেখা যাচ্ছে।
নতুন কমিশনের কার্যক্রম মূল্যায়র করতে গিয়ে দেশের অন্যতম ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠান শান্তা সিকিউরিটিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাম মো. সিরাজ সানবিডিকে বলেন, নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর অনেকগুলো ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে বিনিয়োগকারীরা বাজারের প্রতি আস্থা ফিরে পেয়েছেন। এই জন্য সূচক ও লেনদেনে একটি ইতিবাচক ধারা অব্যহত আছে।
বাজার ভালো হওয়ার কারণ জানতে চাইলে বিএসইসির চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম সানবিডিকে বলেন, আমরা একটি সুন্দর পুঁজিবাজার গঠন করার জন্য কাজ করছি। নতুন কিছু করছি না। আগে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন; তারা একটি ভিত্তি তৈরি করে দিয়ে গেছেন। সেই ভিত্তিকে আরও মজবুত করার জন্য কাজ করছে নতুন কমিশন।
তিনি বলেন, আমরা এমন একটি পুঁজিবাজার গঠন করতে চাই; যাতে ব্যাংক খোলা থাকলে বিনিয়োগকারীরা সব সময় লেনদেন করতে পরেন। কোনভাবেই যাতে পুঁজিবাজার বন্ধ না থাকে।
পুঁজিবাজারের সব খবর পেতে জয়েন করুন
ক্যাপিটাল নিউজ–ক্যাপিটাল ভিউজ–স্টক নিউজ