রাজস্ব আদায়ে ৯০ হাজার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলো ডিএসসিসি

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০৮-১৭ ১১:১৬:১৬


রাজধানীকে পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে পরিত্যক্ত ও ঝুলন্ত ক্যাবল (ওভারহেড ক্যাবল) অপসারণ শুরু করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। গত ৫ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া এ কার্যক্রমের ফলে ধানমন্ডি, ঝিগাতলা, হাজারীবাগ, ওয়ারী, খিলগাঁও, আজিমপুরসহ ডিএসসিসির বিভিন্ন এলাকার প্রায় দেড় লাখ ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এতে গ্রাহকের পাশাপাশি বিড়ম্বনায় পড়েন ইন্টারনেট ব্যবসায়ীরাও। তবে এরই মধ্যে জোড়াতালি দিয়ে ৬০ হাজার গ্রাহককে সংযোগ দিতে পারলেও এখনও সংযোগ বিচ্ছিন্ন প্রায় ৯০ হাজার গ্রাহক।

এমন পরিস্থিতিতে সমস্যা সমাধানে রোববার বিকেলে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সদস্যরা ডিএসসিসির রাজস্ব কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকে বসেন। বৈঠকে সংগঠনটির সদস্যদের জানানো হয়, ডিএসসিসি এলাকায় সড়ক ব্যবহার করে ক্যাবলের মাধ্যমে ব্যবসা করতে হলে প্রত্যেক কোম্পানিকে বছরে ২৫ লাখ টাকা করে রাজস্ব দিতে হবে। তা না হলে ব্যবসা করতে দেওয়া হবে না।

সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার বিষয়ে আইএসপিএবি’র সভাপতি আমিনুল হাকিম  বলেন, ‘হঠাৎ কোনো ঘোষণা না দিয়ে ডিএসসিসি আমাদের ইন্টারনেটের ক্যাবলগুলো কেটে ফেলছে। এতে প্রায় দেড় লাখ গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ফের নতুন তার দিয়ে সংযোগ দেওয়া হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার গ্রাহককে। কিন্তু এখনও বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে ৯০ হাজারের মত ব্যবহারকারীর সংযোগ। ইন্টারনেট লাইন কেটে ফেলায় আমাদের শুধু ক্যাবল-ই ক্ষতি হয়েছে ৫-৬ কোটি টাকার মত। সেইসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরাও বিল দেবে না বলে জানিয়েছে। এখানেও অনেক ক্ষতি হবে।’

তিনি বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে আমরা চেয়েছিলাম, বিষয়টার একটা সমাধান। কারণ বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না রেখে ডিএসসিসি তারগুলো কেটে দিয়েছে। তাই আমরা একটা বিকল্প ব্যবস্থা প্রত্যাশা করে ডিএসসিসির প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলাম। কিন্তু তিনি আমাদের জানালেন, এখন থেকে ক্যাবল সংযোগ নিতে হলে প্রত্যেক কোম্পানিকে বাৎসরিক ২৫ লাখ টাকা করে রাজস্ব দিতে হবে। কিন্তু ঢাকায় বিটিআরসি থেকে অনুমোদন পাওয়া কোম্পানি আছে প্রায় ১২শ’। প্রত্যেক কোম্পানিকে যদি ২৫ লাখ টাকা করে রেভিনিউ দিতে হয় তবে তার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। কিন্তু এত টাকা তো আমাদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব না।’

তিনি আরও বলেন, ‘যদি ২৫ লাখ টাকা করে রাজস্ব দিতেও হয় তবে সে টাকা তো গ্রাহকের কাছ থেকেই নিতে হবে। কিন্তু গ্রাহক যেখানে ইন্টারনেটের দাম কমানোর জন্য দাবি করছে সেখানে বাড়তি দাম হলে পরিস্থিতি কি দাঁড়াবে?’

আমিনুল হাকিম আরো বলেন, ‘আজ আমরা তাদের শর্তগুলো শুনলাম। তবে এখনও আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। সোমবার (১৭ আগস্ট) আমরা ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলামের সঙ্গেও এ বিষয়ে বৈঠক করব। কারণ ডিএসসিসিকে ২৫ লাখ টাকা দেওয়া মানে ডিএনসিসিকেও ২৫ লাখ টাকা দেওয়া। কিন্তু দুই সিটিকে ৫০ লাখ টাকা দিয়ে ব্যবসা করতে হলে এটা কোনোভাবেই সম্ভব হবে না। তাই আগামীকাল ডিএসসিসি মেয়র কী সিদ্ধান্ত দেয় তার ওপর ভিত্তি করে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।’