শিষ্ঠাচারের অভাবে বিদেশি বিনিয়োগ হারিয়েছি: বিএসইসি চেয়ারম্যান
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২০-০৮-২৪ ২১:৫৮:১৫
মানবজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে শিষ্টাচার অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। শিষ্ঠাচারের মাধ্যমে মানুষের ভদ্রতা, সৌজন্যতা এবং ব্যক্তিত্ব ফুটে ওঠে। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যোগ্যতা ও সম্মানার্জনের জন্য শিষ্ঠাচার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্যক্তিজীবনের পাশাপাশি পেশাগত জীবনেও শিষ্ঠাচার মেনে চলা জরুরি বলে মনে করেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
সোমবার (২৪ আগস্ট) বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেট (বিআইসিএম) আয়োজিত জাতীয় শুদ্ধাচার ও উদ্ভাবন পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বিআইসিএমের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট ড. মাহমুদা আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমদ।
অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন,২০১৩-২০১৪ সালের দিকে আমাদের দেশে যখন রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়, তখন প্রচুর বিদেশি বিনিয়োগকারী তাদের অর্থ নিয়ে চলে গেছে। বিদেশিরা আমাদের আচরণ, ব্যবহার পছন্দ করেনি। ফলে আমরা অনেক বিনিয়োগ হারিয়েছি।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, শুদ্ধাচার অনেক বৃহৎ একটি বিষয়। এরমধ্যে অনেক কিছু থাকতে পারে। আজকে শুদ্ধাচার পুরষ্কার দেওয়ার জন্য আমরা এখানে উপস্থিত হয়েছি। শুদ্ধাচার শব্দের ব্যাপকতা অনেক।
তিনি বলেন, ব্রিটিশরা আমাদেরকে ছোট ছোট ভাষায় আচার ব্যবহার শিক্ষা দিয়ে গেছে। কীভাবে ভদ্রতা রক্ষা করে আচার ব্যবহার করতে হয় তাও ব্রিটিশরা আমাদের শিখিয়েছে। আমাদের ধর্ম, কোরআন-হাদিসও সুন্দরভাবে শুদ্ধাচারের শিক্ষা দিয়েছে। অর্থাৎ ধর্ম, রাজনীতি, সমাজ , রাষ্ট্র সব কিছুতেই আচার ব্যবহারের একটা প্রভাব রয়েছে। বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের আচার আচরণ হতে হবে অনেক শালীন।
শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, দেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বেকারদের জন্য কর্ম সংস্থানের প্রচুর সুয়োগ তৈরি হচ্ছে। এ সব কিছু তখনই সম্ভব হবে; যখন আমাদের মধ্যে আচার-আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।
তিনি বলেন, চলতি বছর আমরা মুজিব বর্ষ পালন করছি। একটি বর্ষ একজন ব্যক্তি কেন্দ্রীক হচ্ছে। এটা কেনো হচ্ছে? কারণ ব্যক্তি শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন থেকে অনেক কিছু শেখার রয়েছে। মানুষের অধিকার আদায় ও রক্ষার জন্য তিনি জেল খেটেছেন। একদিন দুই দিন নয়, তিনি কারাবাস করেছেন দীর্ঘ ১১ বছর। উনার জীবন থেকে আমাদের শেখার আছে সততা কাকে বলে, আত্মবিশ্বাস কাকে বলে, সাহস কাকে বলে। তিনি সবাইকে নিয়ে ভালো থাকতে চেয়েছিলেন। সুতরাং এখান থেকে আমাদেরকে অনেক কিছু শিক্ষা নিতে হবে। শুদ্ধাচার নিয়ে আমাদের সচেতন থাকতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ড. মাহমুদা আক্তার বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য সবচেয়ে বেশি দরকার ভালো একটা পুঁজিবাজার। কয়েক মাস পূর্বেও পুঁজিবাজারের অবস্থা খুব খারাপ ছিলো। বর্তমানে বাজারের অবস্থা দেখে আমাদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে।
তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের যে পরিবর্তন এখন দেখা যাচ্ছে তার পিছনে বড় ভূমিকা রয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের। পুঁজিবাজারের দুর্বল জায়গাগুলোকে সঠিক করার জন্য বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তার ইফেক্ট আমরা দেখতে পারছি।
বিআইসিএমের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট বলেন, ভালো পুঁজিবাজারের জন্য দরকার শিক্ষিত বিনিয়োগকারী। সরকার যখন এই বিষয়টা উপলদ্ধি করেছে তখন সুশিক্ষিত বিনিয়োগকারী তৈরির জন্য বিআইসিএম প্রতিষ্ঠা করেছে। যে লক্ষ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি করা হয়েছে আমরা এখনো সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারিনি। এর পিছনে রয়েছে বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা। সেসব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আর কাঙ্ক্ষিত সেই জায়গায় যেতে শুদ্ধাচার এবং উদ্ভাবন খুব জরুরি।