কৃষিনির্ভর অর্থনীতিতে প্রাণিসম্পদ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে: যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক আপডেট: ২০২০-০৮-২৭ ২০:০৪:৫৪


যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল বলেছেন, কৃষিনির্ভর বাংলাদেশে জাতীয় অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি, পুষ্টি নিরাপত্তা এবং দরিদ্রতা নিরসনে প্রাণিসম্পদের অবদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের প্রাণিসম্পদ একটি সম্ভাবনাময় ও লাভজনক শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেই সাথে উপযুক্ত প্রযুক্তির উদ্ভাবন এবং সম্প্রসারণ প্রাণিসম্পদ খাতকে আজ কর্মসংস্থান ও গ্রামীণ দারিদ্র্য বিমোচনের একটি অন্যতম প্রধান হাতিয়ারে পরিণত করেছে। দেশের বেকার জনগোষ্ঠী এবং নারীরা প্রাণিসম্পদ পালনে সম্পৃক্ত হয়ে আত্মকর্মসংস্থানের পথ খুঁজে পেয়েছে। দেশের বহু পরিবার আজ কেবল দুটি উন্নত জাতের গাভী অথবা স্বল্প পরিসরে ব্রয়লার/লেয়ার মুরগি পালন করে স্বাবলম্বিতার মুখ দেখেছে। এ ছাড়াও প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ, দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, রপ্তানি আয় বৃদ্ধি ও নারীর ক্ষমতায়নে প্রাণিসম্পদ খাত বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) সাভারে প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক “প্রাণীসম্পদ উৎপাদন, উপকরণ ও প্রাণীজাত খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণ গবেষণাগার স্থাপন” প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রদান করেন মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী এডভোকেট শ ম রেজাউল করীম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্হাপনা ও ত্রান প্রতিমন্ত্রী ডাঃ এনামুর রহমান।

যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, মোট কৃষিজ জিডিপিতে প্রাণিসম্পদ খাতের অবদান প্রায় ১৪.০৮%। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২০% সরাসরি এবং ৫০% পরোক্ষভাবে প্রাণিসম্পদ খাতের ওপর নির্ভরশীল। প্রাণিসম্পদ অধিদফতর দেশে দুধ, মাংস ও ডিম উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় আমিষের চাহিদা পূরণপূর্বক মেধাবী, স্বাস্থ্যবান ও বুদ্ধিদীপ্ত জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কৃষি ও কৃষকবান্ধব মানুষ উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সমৃদ্ধ ও স্বনির্ভর উন্নত বাংলাদেশ এবং সোনার বাংলা গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত দেশকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলার জন্য কৃষির উন্নতির কোন বিকল্প ছিল না। সেই লক্ষ্যে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ছিল তাঁর অন্যতম কাজ। তিনি জানতেন মানুষের প্রথম চাহিদা খাদ্য আর খাদ্য নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিতে গিয়ে তিনি কৃষি এবং কৃষকের উন্নয়নের ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন। কৃষি উন্নয়ন বলতে বোঝায় কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন।কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নের জন্য গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করে যুদ্ধবিদ্ধস্ত এই দেশকে কৃষি অর্থনীতিতে স্বনির্ভর করে তোলার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ ও কর্মসূচি গ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন কৃষি ও কৃষকের উন্নতি বিধান নিশ্চিত করা না গেলে জাতির ভবিষ্যৎ অন্ধকার।তিনি স্বপ্ন দেখতেন কৃষি বিপ্লবের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ করতে। এ জন্য তিনি উচ্চতর শিক্ষা গবেষণা প্রশিক্ষণ এবং শহরের দিকে দৃষ্টি দিয়েছিলেন। জাতীয় বৈদেশিক নীতির জন্য তিনি বিশ্বজুড়ে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।
বঙ্গবন্ধু কৃষকদের ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা মওকুফ করেন । বঙ্গবন্ধু প্রথম বাজেটে কৃষিখাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখার ব্যবস্থা করেছিলেন। ২১ দফার প্রতিটা দফাই ছিল কোনো না কোনোভাবে কৃষি ও কৃষকের মঙ্গলকামি। কৃষির উন্নতির জন্য সমবায় কৃষি ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন।বন্যা ও খরার হাত থেকে কৃষককে রক্ষার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।সরকারি ইজারাদারি প্রথা বিলুপ্ত করেন।

বঙ্গবন্ধুর কৃষিবিপ্লব ও সবুজবিপ্লব কর্মসূচিকে সফলভাবে বাস্তবায়নের ফলে আজ বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব জনাব রওনক মাহমুদের সভাপতিত্বে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে প্রদান করেন যুব ও ক্রীড়া সচিব মোঃ আখতার হোসেন। এ সময়ে মন্ত্রণালয়ের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সানবিডি/আরএম/৮.০৩/২৭/৮/২০