উদ্যোক্তাদের সহায়তা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কাজ করছে এফবিসিসিআই
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২০-০৯-০৭ ১৬:৫১:৩৯
মহামারীর কারণে তরুণ উদ্যোক্তাদের কর্মসংস্থান, উপার্জনের ব্যবস্থা, চাকরি পাওয়ার উপায়সহ নানা ক্ষেত্রে সৃষ্টি হওয়া বাধাসমূহ নিয়ে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশ‘স (সিআরআই) ইয়ুথ প্ল্যাটফর্ম ইয়ং বাংলা একটি ধারাবাহিক আলোচনার আয়োজন করেছে।
“লেটস টক টু ইয়ুথ প্লাস কোভিড ১৯ রিকভারি: এমপ্লয়মেন্ট এন্ড এন্টারপ্রেনারশিপ” শীর্ষক এই সিরিজটিতে তরুণদের শ্রমবাজারে প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টি করা, এমএসএমই খাতের জন্য বরাদ্দ নিশ্চিতকরণ এবং তরুণদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হয়।
ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম “কর্মক্ষেত্রে তারুণ্য” শীর্ষক আলোচনা সভার আলোচক হিসেবে অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, “মার্চের শুরুর দিকে বিভিন্ন দেশের অবস্থা ও অর্থনীতিবিদদের কাছ থেকে পাওয়া বিবৃতি থেকে আমরা অনুমান করতে পেরেছিলাম যে দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা অস্থিতিশীল হতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “কিন্তু সেই সময় থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের নীতিগত সহায়তার পাশাপাশি সরকারের যথাযথ সময়োপযোগী উদ্যোগ অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক উভয় ক্ষেত্রে বিস্ময়কর অবদান রেখে ছিল।”
সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজ, অর্থনৈতিক হস্তক্ষেপ, অর্থ সঞ্চালন বৃদ্ধি, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী প্রবর্তন, খাদ্য সহায়তা, ব্যাংকের তারল্য বৃদ্ধি, সিআরআর ব্যাংকের জন্য মূলধনের অ্যাক্সেস নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি গৃহীত অন্যান্য পদক্ষেপ, যা দেশের অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করেছে- এমন সব বিষয় তুলে ধরেন ফাহিম।
সম্ভাব্য বেকারত্ব, চাকরি হারানো এবং চাকরি হারানোর আশঙ্কা সম্পর্কে বলতে গিয়ে সভাপতি বলেন, “দেশের শ্রমশক্তির একটি বড় অংশ কাজ করে আরএমজি, লজিস্টিক-এর মতো বৃহত্তর খাতে, যেটি টিকিয়ে রাখার জন্য কর্মীদের বেতন হ্রাস ছাড়া বড় ধরনের চাকরিচ্যুতির ঘটনা ঘটতে দেখা যায়নি।”
চাকরি হারানো ব্যক্তিদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনা প্যাকেজ এর মাধ্যমে যুব উন্নয়ন ব্যাংক, পিকেএসএফ, কৃষির উন্নয়ন ব্যাংক ও পল্লী উন্নয়ন ব্যাংক জামানত মুক্ত ঋণ প্রদান করছে।
তিনি আরো বলেন, “প্রবাস ফেরত কর্মীদের পুনর্বাসনের জন্য কর্মসূচি শুরু হয়েছে, যা তারা সহজেই গ্রহণ করতে পারবে। এমনকি আমাদের সিঙ্গাপুরের সহযোগীরা আমাদের অভিবাসী কর্মীদের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এছাড়া কাতারে আমাদের অভিবাসী কর্মীদের নিরাপত্তার জন্য একটি আইনও পাস করা হয়েছে।”
তিনি সুনির্দিষ্ট খাতে অন্যান্য সরকারী প্রণোদনা প্যাকেজগুলোর সুবিধা গ্রহণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেন, যেমন কর্মচারীদের প্রয়োজনীয় ডাটা পাওয়া গেলে সরকারের পক্ষ থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে, কোন ঝামেলা ছাড়াই অর্থ সরবরাহ নিশ্চিত করা যেত।
এছাড়া, এফবিসিসিআই সভাপতি টিভিইটি প্রেরণকারী সমিতির নির্দিষ্ট উদ্যোগসমূহ, এফবিসিসিআই এডিআর সেন্টার, এফবিসিসিআই ইকোনমিক অ্যান্ড অ্যাপ্ল্যাইড রিসার্চ সেন্টার, এফবিসিসিআই টেক সেন্টার, এফবিসিসিআই স্কিলস ল্যাব এবং এফবিসিসিআই বিশ্ববিদ্যালইয়-
এর সুনির্দিষ্ট উদ্যোগসমূহ তুলে ধরেন, যা তরুণ উদ্যোক্তাদের সহায়তা এবং কর্মসংস্থানসৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ কোনোভাবেই অচল হচ্ছে না, বরং আমরা সকলে এক হয়ে সব বাধা অতিক্রম করে রঙীন ঘুড়ি নিয়ে সামনে এগিয়ে যাব।”
আলোচনা সভায় দেশের কৃষিক্ষেত্রে যুব জনসংখ্যার ভূমিকার উপর গুরুত্বারোপ করে কৃষি মন্ত্রী ডা. মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, এমপি বলেন, “আমাদের দেশের জন্য কৃষি এক অনন্য সম্ভাবনাময় খাত, তবে তরুণরা কৃষি থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। এরকম সম্ভাবনাময় খাত থেকে দ্রুত লাভবান হতে পারে তরুণরা, যারা কী না খুব সহজেই যেকোন বিষয়ের জ্ঞান আয়ত্ব করতে সক্ষম।”
জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল (জেসিআই) বাংলাদেশ- এর সভাপতি সারাহ কামাল-এর সঞ্চালনায় আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন কৃষি মন্ত্রী ডা. মুহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক, এমপি; অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন্স ডিভিশন (বিএফআইডি)-এর সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম; গ্রীণ ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা চৌধুরী; জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড ২০১৫-এর বিজয়ী কেশব রায়; শক্তি ফাউন্ডেশন- এর ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ও হেড অব প্রোগ্রামস ইমরান আহমেদ এবং সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)-এর সিনিয়র অ্যানালিস্ট সৈয়দ মফিজ কামাল।