বঙ্গজ, তাল্লু ও মিথুন নিয়ে অন্ধকারে বিনিয়োগকারীরা

:: আপডেট: ২০২০-০৯-১০ ১৯:১৭:৫৩


পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত বঙ্গজ, তাল্লু স্পিনিং মিলস এবং মিথুন নিটিং অ্যান্ড ডায়িং লিমিটেড নিয়ে অন্ধকারে বিনিয়োগকারীরা। তিনটি কোম্পানি কোন ধরণের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে না। এমনকি বিকল অবস্থায় রয়েছে তিন কোম্পানির ওয়েবসাইট। যোগাযোগ করতে পারছে না কোম্পানির কারো সাথে।

বিষয়টি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) নজরে আনলে আইন অনুযায়ী সরাসরি তাদের কিছু করার নেই বলে জানান। তবে কোম্পানিগুলোর কোন অনিয়ম ধরা পড়লে কমিশনের অনুমোদন স্বাপেক্ষে তারা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে পারে। কমিশন প্রতিবেদন দেখে ব্যবস্থা নিতে পারেন।

বিনিয়োগকারী নাসির উদ্দিন হাওলাদার সানবিডিকে বলেন, এ কেমন কোম্পানি? যারা কোন আর্থিক প্রতিবেদন দেয় না। যোগাযোগ করার মতো কোন নাম্বার নেই। ওয়েবসাইট নাই। কোন ধরণের তথ্য পাওয়া যায় না। এগুলোর বিষয়ে বিএসইসিকে কটিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলেন তিনি।

এ দিকে বিষয়টি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন নজরে আনলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে সংস্থাটি।

পুঁজিবাজারের সব খবর পেতে জয়েন করুন

ক্যাপিটাল নিউজক্যাপিটাল ভিউজস্টক নিউজ

এবিষয়ে জানার জন্য কোম্পানি সচিব ফিরোজ ইফতেখার মাসুম ও শেয়ার বিভাগের ইনচার্জ আকরামের সাথে যোগাযোগ করা হয়। তারা দুই জনই কোম্পানিতে নেই বলে জানান।

এর পর কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতিকুল হক মিথুনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম সানবিডিকে বলেন, বর্তমান কমিশন পুঁজিবাজারের উন্নয়নে অনেক কঠিন কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামীতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে। যারা আইন পরিপালন করবে না; তাদের বিরুদ্ধেই আইনানুক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বঙ্গজ ও তাল্লু স্পিনিংয়ের ওয়েবসাইট

বঙ্গজ: খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক খাতের এ কোম্পানিটি চলতি অর্থ বছরে কোন পর্ষদ সভা করেনি। তবে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টায় তিন প্রান্তিকের সভা একত্রে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সভায় ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সমাপ্ত সময়ের প্রথম, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৯ সমাপ্ত সময়ের দ্বিতীয় এবং ৩১ মার্চ, ২০২০ সমাপ্ত সময়ের তৃতীয় প্রান্তিকের অনীরিক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনার পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রকাশ করা হবে।

এ ক্যাটাগরির এই কোম্পানিটি ১৯৮৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। কোম্পানিটির অনুমোধিত মূলধন ৫০ কোটি এবং
পরিশোধিত মূলধন ৭ কোটি ৬২ লাখ ৫ হাজার টাকা। কোম্পানটির পরিচালকের হাতে রয়েছে ৩০ দশিমক ৩৯ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানির বিনিয়োগকারীদের হাতে ৪ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৬৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ শেয়ার।

কোন ধরণের তথ্য না দিলেও থেমে নেই শেয়ার দর বাড়া। গত তিন মাসে কোম্পানিটির শেয়ারের দর সর্বচ্চো ১৬০ টাকায় উঠেছে। মঙ্গলবার ১১ টা পর্যন্ত ৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ বেড়ে ১৭৬ টাকায় লেনদেন হচ্ছে। তিন মাস আগে এই শেয়ারের দর ছিলো ১১৬ টাকা ৯০ পয়সা।

তাল্লু স্পিনিং মিলস: বস্ত্র খাতের কোম্পানিটি তৃতীয় প্রান্তিক (জানুয়ারি-মার্চ,২০১৯) এর পর আর কোন পর্ষদ সভা করেনি। ওই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান ছিলো ২৩ পয়সা। জেড ক্যাটাগরির এই কোম্পানিটিকে তলব করেছে বিএসইসি। সকল ধরণের তথ্য নিয়ে কমিশনে হাজির থাকতে বলা হয়েছে।

২০১০ সালের পর থেকে একবারও নগদ লভ্যাংশ দিতে পারেনি কোম্পানিটির পরিচাণা পর্ষদ। এছাড়াও ১৯৯৫ সালে ১:৩ এবং ২০১২ সালে ২:১ হারে রাইটের মধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে।

জেড ক্যাটাগরি এ কোম্পানিটি ১৯৯০ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৮৯ কোটি ৩৩ লাখ ৫ হাজার টাকা। কোম্পানটির পরিচালকের হাতে রয়েছে ২৯ দশিমক ০৪ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানির বিনিয়োগকারীদের হাতে ১৭ দশমিক ০৩ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৫৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ শেয়ার।

কোন ধরণের তথ্য না দিলেও থেমে নেই শেয়ার দর বাড়া। গত তিন মাসে কোম্পানিটির শেয়ারের দর সর্বচ্চো ৫ টাকা ২০ পয়সা উঠেছে। তিন মাস আগে শেয়ারের দর ছিলো ২ টাকা ৭০ পয়সা।

মিথুন নিটিং অ্যান্ড ডাইং: বস্ত্র খাতের কোম্পানিটি তৃতীয় প্রান্তিক (জানুয়ারি-মার্চ,২০১৯) এর পর আর কোন পর্ষদ সভা করেনি। ওই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান ছিলো ৪৯ পয়সা।

জেড ক্যাটাগরি এ কোম্পানিটি ১৯৯৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৮ কোটি  টাকা। কোম্পানটির পরিচালকের হাতে রয়েছে ১৭ দশিমক ২০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানির বিনিয়োগকারীদের হাতে ১২ দশমিক ২৬ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৭০ দশমিক ৫৪ শতাংশ শেয়ার। ২০১০ সালের পর থেকে একবারও নগদ লভ্যাংশ দিতে পারেনি কোম্পানিটির পরিচাণা পর্ষদ।

কোন ধরণের তথ্য না দিলেও থেমে নেই শেয়ার দর বাড়া। গত তিন মাসে কোম্পানিটির শেয়ারের দর সর্বচ্চো ১৪ টাকায় উঠে। বর্তমানে রয়েছে ১২ টাকায়।