করোনা সংকট

কক্সবাজারের হোটেলগুলোয় অতিথি স্বল্পতা

সান বিডি ডেস্ক আপডেট: ২০২০-০৯-০৯ ০৮:১৩:৩২


দেশে প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে চলতি বছরের ১৮ মার্চ থেকে সমুদ্রসৈকতসহ কক্সবাজারের পর্যটন নির্ভর সবকিছু বন্ধ ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। ভয়াবহ এই ভাইরাসের কারণে দীর্ঘ পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর গত ১৭ আগস্ট থেকে সীমিত আকারে খুলে দেয়া হয় হোটেল-মোটেলসহ পর্যটন স্পটগুলো। তবে পর্যটকদের মধ্যে করোনাভীতি না কাটায় এখনো আশানুরূপ অতিথি পাচ্ছে না হোটেলগুলো। অন্যদিকে নিয়ম অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি না মানারও অভিযোগ উঠেছে বেশকিছু হোটেলের কর্মীদের বিরুদ্ধে।

এ ব্যাপারে জানা গেছে, কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের দেয়া বেশ কয়েকটি শর্ত মেনে কার্যক্রম শুরু করেছেন পর্যটনসংশ্লিষ্টরা। এর মধ্যে প্রথম শর্ত হলো, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা। কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকত ও হোটেল-মোটেল জোন সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি খোলা হয়েছে হিমছড়ি ও ইনানী সৈকত এলাকাও।

কক্সবাজারের একাধিক হোটেলের কর্মকর্তারা জানান, হোটেল-মোটেল খুললেও পর্যটকদের মধ্যে এখনো করোনাভীতি রয়েছে। ফলে আশানুরূপ পর্যটক আসছে না। এ কারণে অধিকাংশ হোটেলের ৯০ শতাংশ রুমই খালি থাকছে। আর যেসব রুমে পর্যটক রয়েছে, তারাও এসেছে ভাড়ায় বড় ছাড় নিয়েই।

এ বিষয়ে কক্সবাজার হোটেল-মোটেল ওনারস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ও তারকা হোটেল সীগালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ ইমরুল সিদ্দিকী রুমি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই হোটেলগুলোতে পর্যটকের উপস্থিতি কম। তবে ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। সীগালে ১৭৯টি অতিথি কক্ষের মধ্যে বর্তমানে দৈনিক গড়ে ৩৫টি কক্ষে পর্যটক থাকছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে হোটেলের সব কর্মী কাজ করছেন। পাশাপাশি পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্যও পর্যাপ্ত স্যানিটাইজেশনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।

এদিকে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করার শর্তে কক্সবাজারের পর্যটন জোন খুলে দেয়া হলেও নিশ্চিত করা হয়নি পর্যটকবান্ধব অবকাঠামো। কক্সবাজার হোটেল-মোটেল জোনসহ পুরো পৌর এলাকার রাস্তাগুলো চলাচল অযোগ্য হয়ে আছে। কলাতলী এলাকায় রাস্তার পাশে চলছে ড্রেনেজ সিস্টেম তৈরির কাজ।

সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, দেশের সবচেয়ে বৃহৎ পর্যটন এলাকাটিতে গত পাঁচ মাস চার শতাধিক হোটেল-মোটেল, প্রায় ৬০০ রেস্তোরাঁ, বার্মিজ মার্কেটসহ পাঁচ হাজার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। কর্মহীন হয়ে পড়েছে আবাসিক হোটেল-মোটেল ও রেস্তোরাঁর লক্ষাধিক মানুষ। এতে কক্সবাজারের পর্যটন খাতে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

কক্সবাজার আবাসিক হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে পর্যটন খাতে যে খরা তৈরি হয়েছে, সেটি স্বাভাবিক হতে আরো সময় প্রয়োজন হবে। কারণ এখনো করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিভিন্ন শর্ত ও পর্যটন মৌসুম না হওয়ায় পর্যটক আসছে না।