ক্ষতিকর রং দিয়ে রুপচাঁদার নামে পিরাহা বিক্রি
সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০৯-১২ ০৯:৫০:০৪
দেখতে অবিকল রপচাঁদার মতো, কিন্তু আদতে পিরানহা। শুধু নিষিদ্ধ পিরানহা মাছই নই রাজধানীর কারওয়ান বাজারের আড়তে অস্ট্রেলিয়ান রাক্ষুসে মাগুর বিক্রি ছাড়াও ক্ষতিকর রং দিয়ে মাছ বিক্রি হচ্ছে। শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করে এভাবে প্রতারণা করে মাছ বিক্রির অপরাধে পাঁচজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন।
এই অভিযানের নেতৃত্বে থাকা র্যাবের নির্বাহী হাকিম সারওয়ার আলম সাংবাদিকদের বলেন, এই অবৈধ কারবারের নেপথ্যে একটি বড় চক্র আছে। তারাই মূলত কারওয়ান বাজার মাছের আড়ত নিয়ন্ত্রণ করে। তারা চাইলেই এই অবৈধ অপতৎপরতা বন্ধ করতে পারে। কিন্তু মানুষকে ঠকিয়ে বেশি টাকার লোভে তারা এই অসৎ কর্মকাণ্ড বন্ধ করছে না।
এ ব্যাপারে সারওয়ার আলম আরো বলেন, কারওয়ান বাজারে দীর্ঘ সময় ধরে তাজা রাখতে মাছে বিভিন্ন রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়—এমন তথ্যের ভিত্তিতেই অভিযান চালানো হয়েছে। সামুদ্রিক রূপচাঁদা বলে নিষিদ্ধ পিরানহা বিক্রি, অস্ট্রেলিয়ান রাক্ষুসে মাগুর বিক্রি ছাড়াও ক্ষতিকর রং দিয়ে মাছ বিক্রির অভিযোগে পাঁচজন মাছ কারবারিকে এক-তিন মাস মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তিনি বলেন, এ ধরনের অভিযান এর আগেও কারওয়ান বাজারসহ রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে চালানো হয়েছে। ওই সময় অভিযুক্তদের ধরে সাজাও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রতারক মাছ কারবারিদের শিক্ষা হয়নি।
র্যাব সূত্র জানায়, রং, জেলি ও রাসায়নিক মেশানো মাছ খেলে মানব শরীরে নানা রোগব্যাধির সৃষ্টি হয়। এই নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকেও জনসচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন সময় অভিযান চালানোর সময় এই নিয়ে সতর্ক করা হয়। কিন্তু অসাধু কারবারিরা কোনো কিছুই আমলে নেয় না। এর পরও যারা এ ধরনের বেআইনি কারবার করছে তাদের আরো কঠিন শাস্তি দেওয়া হবে বলে র্যাব সূত্রে জানা গেছে।
শুধু কারওয়ান বাজারেই নয়, রাজধানীসহ সারা দেশেই মাছের বাজারে নানা কারসাজি ও প্রতারণা চলছে। কালের কণ্ঠ’র অনুসন্ধানে এ ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে। এ নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদনের প্রথম কিস্তি গতকাল প্রধান শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছে।
মাছে জেলি ও রং মেশানোর ব্যাপারে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, ফলে যেভাবে রাসায়নিক মিশিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে পাকানো হয় বা ফলের খোসার রং সুন্দর করা হয়, তেমনি মাছ তাজা দেখাতে রং, রাসায়নিক ও জেলি ব্যবহার করে অবৈধ মাছ কারবারিরা। বিশেষ করে মাছের ডালার ওপর একাধিক বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালিয়ে রাখা হয়। এতে মাছ চকচকে দেখায়, পচা মাছও দেখায় তাজা।
মাছ বাজারের এমন নৈরাজ্য বন্ধ করতে র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী হাকিম সারওয়ার আলম।