এক ছাতার নিচে সব সেবা দিতে চাই:ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও

বিডি ফাইন্যান্সকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই

:: আপডেট: ২০২০-০৯-২৬ ১২:৫৭:৪৭


পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের কোম্পানি বাংলাদেশ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট (বিডি ফাইন্যান্স) এর দায়িত্ব নিয়েছেন এই খাতের সবচেয়ে কম বয়সী ও তরুণ ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও মোহাম্মদ কায়সার হামিদ। তরুণ হলেও তার কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের। তিনি ১৫ বছর আগে দেশের অন্যতম এনবিএফআই ডেলটা ব্র্যাকের (ডিবিএইচ) মাধ্যমে আর্থিক খাতে যাত্রা শুরু করেন। একে একে কাজ করেছেন দেশের অন্যতম আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসি, আইপিডিসিতে। কাজ করেছেন এসএমই খাতের নেতা ব্র্যাক ব্যাংকেও। বিডি ফাইন্যান্সে যোগ দেওয়ার আগে দায়িত্ব পালন করেছেন আইপিডিসির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) হিসেবে।

গত ২ সেপ্টেম্বর দায়িত্ব নিয়েছেন বিডি ফাইন্যান্স এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও হিসেবে। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই প্রতিষ্ঠানটিকে ভালো অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। তার আশা বিডি ফাইন্যান্সকে প্রথম তিনটির একটি বানানো। সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজও শুরু করেছেন তিনি। গুছাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটির সব জায়গা। তার ইচ্ছা হলো এক ছাতার নিচে পুঁজিবাজার ও আর্থিক খাতের সকল সেবা দিবে বিডি ফাইন্যান্স। তার সাথে কথা বলেছেন দেশের আর্থিক খাতের অন্যতম নিউজ পোর্টাল সানবিডির প্রধান প্রতিবেদক গিয়াস উদ্দিন ও সিনিয়র রিপোর্টার রাসেল মাহমুদ। তার কথার চুম্বক অংশটুকু পাঠক ও বিডি ফাইন্যান্সের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য তুলে ধরা হলো।

আর্থিক খাতের ব্যবসার ধরণ নিয়ে মোহাম্মদ কায়সার হামিদ বলেন,ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংকের আলাদা কিছু ব্যবসার ধরণ আছে। যেগুলো আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও পরিস্কারভাবে দেখা যায়। তাদের রেগুলেশনস, বিজনেস মডেল কোনটা কে করতে পারবে তা পরিস্কারভাবে বলা আছে। দু:খজনক হলেও সত্য বাংলাদেশে এমন পার্থক্য খুব সামান্য। ব্যাংক ও এনবিএফআই প্রায় একই ধরণের ব্যবসা করে।

আবার, ঢাকাতে ব্যাংকিং ঘনত্ব (Banking Density) সবচেয়ে বেশি। অর্থনীতির আকারের তুলনায় এটি অনেক বেশি। বিশ্বের অন্য কোনো শহরে এর চেয়ে বেশি আছে বলে আমার জানা নেই। অন্যদিকে পাশের দেশ ভারতের মুম্বাই এতো বড় শহর, বহুমুখী ব্যবসার ধরণ থাকার পরও ব্যাংক এবং এনবিএফআই এর সংখ্যা আমাদের তুলনায় অনেক কম। আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেয়ার পিছনে বাংলাদেশে যে বিজনেস মডেল থাকার দরকার ছিলো দু:খজনক হলেও সত্য তা স্পষ্ট নেই।

না থাকার পেছনে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কারণ হলো-আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে আমরা খুব সহজে পথে হেঁটেছি। সহজ পথ হলো ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কাস্টমারকে আবার ঋণ দিবো। আমাদের দেশের ইতিহাস বলে এনবিএফআইগুলোর নেতৃতে ব্যাংকের লোকজন বেশি কাজ করেছে। ফলে ব্যাংক যেইভাবে কাজ করে আমরা সেভাবে কাজ করেত চেয়েছি। চিন্তা করার দরকার ছিলো এটি আলাদা ব্যবসা,আলাদা চিন্তা করে ব্যবসার ধরণ ঠিক করতে হবে। আমরা তা করতে পারিনি। যে কোন কারণেই হোক আমরা তা মিস করেছি।

তরুণ এই ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এর মতে এনবিএফআই ব্যবসার ধরণ হওয়ার কথা ছিলো দীর্ঘ মেয়াদী ঋণ দেওয়া এবং ব্যবসার বহুমুখী করণ করা। দীর্ঘ মেয়াদে লিজ ফাইন্যান্সিং, ইনফ্রাস্টাকচার ফান্ডিং, লংটার্ম মর্টগেজ ইত্যাদি

এনবিএফআইগুলোর অগ্রাধিকার খাত হিসেবে বিবেচনায় থাকা উচিৎ ছিল। অন্যদিকে ফান্ডিং ম্যানেজ করার জন্য যে ধরনের ফাইন্যান্সিয়াল ডেরিভেটিভস (Derivatives), ডেট সিকিউরিটিজ, সাব-অরডিনেট বন্ড, লংটার্ম কাস্টমার ডিপোজিটসহ অন্যান্য যে বিকল্প ফান্ডিং সোর্স থাকার দরকার ছিল সেগুলোর অনুপস্থিতি খুবই প্রকট। কাঙ্খিত পর্যায়ে যেতে না পারার অন্যতম কারন হল আমাদের দেশে সেকেন্ডারি বন্ড মার্কেট সেভাবে তৈরি হয় নি।

তিনি বলেন, এখন আমরা রিয়েলাইজেশন করতে যাচ্ছি যে এই জায়গাগুলোতে আমাদের আরও সক্ষমতা তৈরি করা জরুরি। বিশেষত লাস্ট এক দুই বছর ধরে ফাইন্যান্সিয়াল ইন্সটিটিউশনে তারল্য সংকটের মধ্যে রয়েছে। এটি কিন্তু এক বা দুই বছরের সমস্যা না। এটি এই খাতের জন্মের পর থেকেই শুরু হয়েছে। কারণ হলো আমরা গ্রাহক থেকে সরাসরি ডিপোজিট সংগ্রহ করি না। আমরা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কাস্টমারকে দীর্ঘমেয়াদে ঋণ দেই।

ব্যাংকের কাস্টমারকে আপনি যখন ডিফারেন্ট কাইন্ড অব লং টার্ম ডিপোজিটসহ অন্যান্য প্রডাক্ট অফার করতে পারবেন, সে তখন ব্যাংকের ট্রানজেকশন একাউন্টের বাইরে এসে আপনার কাছে সঞ্চয় জমা রাখবে। আমরা কাস্টমারের সাথে সবসময় সেকেন্ড রিলেশনশিপ প্রতিষ্ঠা করি। যেহেতু আমাদের সঙ্গে কাস্টমারের ট্রানজেকশন একাউন্ট নেই, সেক্ষেত্রে এ সম্পর্ক তৈরি করা কঠিন। সুতারাং এই খাতকে চাঙ্গা করার জন্য আমাদের ইউনিক প্রডাক্ট প্রপোজিশন, ডিজিটাল প্লাটফর্ম এবং ডিফারেন্ট বিজনেস মডেল থাকা দরকার ছিলো সেটি আমরা করতে পারিনি। আমার দেখা মতে, যে সমস্ত এনবিএফআইগুলো শুরুর থেকেই ডাইভারসিফাইড একটা ফান্ডিং মিক্সের মধ্যে গিয়েছে, স্মল ডিপোজিট বেজ করেছে, কাস্টমার ডিপোজিট বেজ বাড়িয়েছে; তাদের এই কঠিন সময়ের মধ্যেও সমস্যা হয়নি। তাদের ক্রেডিট রেটিং ভালো, এনপিএলও কম।

মোহাম্মদ কায়সার হামিদ বলেন, এনপিএল কমের পিছনে ডিপোজিট একটা বড় ফ্যাক্টর। কাস্টমার ডিপোজিট সংগ্রহের হার যদি কম হয়; তাহলে প্রতিষ্ঠান দূর্বল হবে এটিই স্বাভাবিক। আপনার নিজস্ব কাস্টমার ডিপোজিট থাকলে গ্রাহককে দীর্ঘমেয়াদী স্বল্প সুদে ঋণ দিতে পারবেন। ভালো গ্রাহককে ঋণ দিতে পারবেন। ফলে খেলাপী ঋণের হার ও ঝুঁকি কমবে। ব্যাংক থেকে ঋন নিয়ে যখন গ্রাহককে অনেক বেশি হারে দিতে হয়, তখন এনপিএল বা খেলাপী ঋণ হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি থাকে।

আপনি যদি আমাকে ব্যক্তিগতভাবে জিজ্ঞাসা করেন, আমি বলবো- আমার কাজ শুরু এনবিএফআইতে যখন এনবিএফআই গুলো পাবলিক ডিপোজিট কালেকশন করতো না। যখন আমি ক্যারিয়ার শুরু করেছি, তখনই বুঝতে পেরেছিলাম ব্যাংকের টাকা নিয়ে ব্যাংকের কাস্টমারদের সাথে প্রতিযোগিতা করা যাবে না। ব্যাংকের সাথে প্রতিযোগিতা করতে হলে নিজস্ব ডিপোজিট লাগবে। তখন আমরা একটি ব্যবসার ধরণ নিয়ে কাজ শুরু করি। এই জন্য তখন থেকে রিটেলে যাওয়া, ইন্সটিটিউশন ডিপোজিট নেয়া, ট্রাস্ট ফান্ড নেয়া, রিকারিং ডিপোজিট নেয়ার মাধ্যমে একটা সলিড বিজনেস মডেল দাড় করিয়েছি। এই খাতে আমার এক যুগের বেশি কাজ করার অভিজ্ঞতা টপ তিনটি এনবিএফআইতে। এগুলো হলো- ডেলটা ব্র্যাক (ডিবিএইচ), আইডিএলসি এবং আইপিডিসি। ব্র্যাক ব্যাংকেও আমার কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। ফলে আমার দুই ইন্ডাস্ট্রিতেই কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। যার কারনে এনবিএফআইয়ের মূল যে চ্যালেঞ্জ সেখানে আমি অভ্যস্ত।

আইপিডিসি ছেড়ে বিডি ফাইন্যান্সে যোগ দেওয়ার কারণ কী?  আমার উত্তর খুব স্বাভাবিক। আপনি যদি বিডি ফাইন্যান্সের শেয়ার হোল্ডিং স্ট্রাকচারটা দেখেন; তাহলে দেখবেন বাংলাদেশে খুব কম ফাইন্যান্সিয়াল ইন্সটিটিউশন আছে যাদের পরিচালনা পর্ষদে এমন প্রেস্টিজিয়াস এবং দক্ষ পর্ষদ আছে। এখানে যেমন একদিকে সিনিয়ার ভেটেরিয়ান ব্যাংকাররা আছেন, তেমনি প্রথিতযশা শিল্প উদ্যোক্তারাও আছেন যাদের রয়েছে সফল ব্যবসায়িক মডেল তৈরির অভিজ্ঞতা এবং রয়েছে অর্থনীতিতে দীর্ঘদিনের অবদান। আমাদের অন্যতম স্পন্সর শেয়ারহোল্ডার হচ্ছেন দেশের প্রথিতযশা শিল্প গ্রুপ “আনোয়ার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ” যাদের রয়েছে প্রায় ২০০ বছরের হেরিটেজ। এই বোর্ডের বড় একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন ও স্বচ্ছতার সাথে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা।

আমাদের দেশে যে সমস্ত ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান দুর্বল হয়ে গেছে তার পিছনে দেখা যাবে পরিচালকদের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ঘাটতি আছে। তারা নিজেরা নিজেদের প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন নামে-বেনামে ঋণ নেয়। তা আর পরিশোধ না করার কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো সমস্যার মধ্যে পড়ে গেছে। সেই জায়গা থেকে বিডি ফাইন্যান্স পুরোপুরি ভিন্ন এবং স্বতন্ত্র জায়গায় অবস্থান করছে। দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও নেতৃত্বে এবং পরিচালনা পর্ষদের কৌশলগত দিক নির্দেশনার সমন্বয়ে বিডি ফাইন্যান্স জায়গা করে নিবে দেশের অন্যতম ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাতারে। সেই অভিপ্রায় থেকে বিডি ফাইন্যান্সে যোগ দেয়া।

বিডি ফাইন্যান্স নিয়ে আমার ভাবনা হলো- আমি মূলত দুইটা জায়গায় প্রাধান্য দিয়ে কাজ করবো। একটা হলো ফান্ডিং মিক্সে কাস্টমার ডিপোজিটের পরিমান বাড়ানো, রিকারিং এবং স্টিকি ডিপোজিট নেয়ার জন্য একটি সেলস্ মডেল এবং রিলেশনশিপ বেজ বিজনেস মডেল তৈরি করা; যেখানে ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট এর একটি নতুন কনসেপ্ট নিয়ে আসতে চাচ্ছি। গ্রাহকদের বীমা সেবা,পুঁজিবাজারের ব্যবসার সুযোগ এবং আর্থিক খাতের অন্যান্য সুবিধা দেওয়ার জন্য এই ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট কনসেপ্ট কাজ করবে। এক কথায় অর্থ বাজারের সকল সুবিধা এক ছাতার নিচে নিয়ে আসতে চাই। এখন মানুষ এতো ব্যস্ত যে একেকটি কাজ একেক জায়গায় গিয়ে করার মত সময় নেই। আমরা ওই সুযোগটি নিতে চাই। সকল সুবিধা এক সাথে দিতে চাই। বিডি ফাইন্যান্স এর ব্রোকারেজ হাউজ এবং মার্চেন্ট ব্যাংক আছে। অর্থ বাজার ও পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের সব সুবিধা গুলো একসাথে করে আমরা কাস্টমারের প্রয়োজনের সঙ্গে সমন্বয় করে আমাদের প্রোডাক্ট গুলো রিডিজাইন করবো। তাতে আমাদের পরিচালনা ব্যয় অনেক কমে যাবে অন্যদিকে কাস্টমারও তার ওয়েলথ ম্যাক্সিমাইজ করতে পারবে।

দ্বিতীয়ত, লেন্ডিং বাস্কেটকে আমরা ডাইভারসিফাইড করতে চাই। কর্পোরেট লেন্ডিং থেকে কিছুটা মনোযোগ কমিয়ে এনে আমরা এসএমই এবং রিটেইলে মনোযোগ বাড়াতে চাই। এসএমই অ্যান্ড রিটেইল হবে আমাদের সবচেয়ে প্রাধান্যজনক খাত। এখানে আমরা গ্রিন বেজ (পরিবেশ বান্ধব) ফাইন্যান্সিং ফ্যাসিলিটি নিয়ে আসতে চাই। ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পখাতের বিকাশের জন্য আমরা এসএমইতে নতুন নতুন সেবা নিয়ে আসবো।

ইতিমধ্যে আমরা শুরু করেছি ফ্যামিলি ইমপাওয়ারমেন্ট ক্রেডিট প্রোগ্রাম যার মাধ্যমে আমরা ছোট ছোট ব্যবসায়ীদের পাশে দাড়াচ্ছি। ৫ লক্ষ থেকে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জামানতবিহীন সহজ শর্তে এইসকল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদেরকে আমরা লোন দেয়া শুরু করেছি। আমরা রিটেইলে হোম লোন, কার লোন এগুলো নিয়ে আসছি। কার লোনে আমরা হাইব্রিড যে সমস্ত গাড়ী পরিবেশ বান্ধব এবং যে সমস্ত কার লেস ফুয়েল কনজামপশন করে তাদের অর্থায়নে আমরা বিশেষ প্রাধান্য দিব। সুতরাং পরিবেশ বান্ধব সকল ব্যবসা আমাদের টার্গেটে আছে।

যেহেতু আমার এনবিএফআইয়ের বিজনেস মডেলে দীর্ঘ দিন কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে, ব্যাংকেও আমার কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে, আমি বিশ্বাস করি আমাদের বর্তমান পর্ষদের সহযোগিতায় আগামী তিন-চার বছরে বিডি ফাইন্যান্সকে একটি অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারবো। বিগত এক মাসে বিডি ফাইন্যান্সের মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন যে পরিমান বেড়েছে , আমি বলবো এটা ডাবলেরও বেশি। এর পিছনে বড় কারণ আমরা সব সময় ১০ শতাংশ হারে লভ্যাংশ দিয়ে আসছি। এ বছর কঠিন সময়েও আমরা ১২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছি। যার প্রভাব বাজারে পড়েছে। কাস্টমারদের কনফিডেন্স আমরা দেখতে পেয়েছি। সেই ধারাটা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে। এইটার সঙ্গে বাকি যে জায়গাগুলো আছে, এই প্যান্ডামিক সিচুয়েশনে কাস্টমারের পাশে থেকে তাদের ব্যবসাকে সচল রাখা, বিভিন্ন ধরনের পেমেন্ট ডেফারেল দেয়া, বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী কাস্টমাইজেশন করা এবং সর্বপরি তাদের ট্রাস্টেড পার্টনার হিসেবে আমরা কাজ করার বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।

বিডি ফাইন্যান্সের পুঁজিবাজারের কার্যক্রমের বিষয়ে তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের নতুন কিছু পণ্য নিয়ে আসতে চাই। এর মধ্যে থাকবে সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্লান এবং গ্রোথ ফান্ড কীভাবে আমরা আনতে পারি সেগুলো নিয়ে কাজ করছি। আমরা ক্যাপিটাল মার্কেটকে ঢেলে সাজাবো।

পুঁজিবাজারের সকল সুবিধা বিডি ফাইন্যান্স দিতে চায়। এর জন্য আমরা কাজ করছি। বিএসইসি চাচ্ছে দেশের বাইরেও ব্রোকারেজ হাউজগুলো থাকুক। তাই আমরা ওই মার্কেট নিয়েও চিন্তা ভাবনা করছি। কোন কোন ক্লাসটারগুলোতে আমাদের থাকা উচিত যেমন- ইউএসএ, কানাডা, নর্থ আমেরিকা অন্য কোথায় থাকলে সুবিধা হবে আমরা সেগুলো নিয়ে কাজ করছি। যেখানে বাংলাদেশের সেকেন্ড জেনারেশন থাকা শুরু করেছে বা ফার্স্ট জেনারেশন অনেকটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেখানে আমাদের ব্রোকারেজ সার্ভিসটা নিয়ে যাওয়ার চিন্তা করবো।

পুঁজিবাজারের অন্য কোন প্রতিষ্ঠান করার ইচ্ছা আছে? বর্তমানে আমাদের দুটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান আছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো বিডি ফাইন্যান্স সিকিউরিটিজ এবং বিডি ফাইন্যান্স ক্যাপিটাল হোল্ডিংস। একছাতার নিচে গ্রাহকদের সেবা দেয়ার জন্য অন্য প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন হলে আমরা তা করবো।