গার্মেন্টস শিল্প পুনরুদ্ধারে সিডব্লিউইআইসি’র সমর্থন চায় এফবিসিসিআই
সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০৯-২৪ ২১:২৮:০৮
করোনা কালীন সময়ে দেশের টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস শিল্প পুনরুদ্ধারে কমনওয়েলথ এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কাউন্সিলের (সিডব্লিউইআইসি) সমর্থন চেয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান।
আজ বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) কমনওয়েলথ এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কাউন্সিলের (সিডব্লিউইআইসি) উদ্যোগে ‘সিডব্লিউইআইসি সেক্টর ওয়েবিনার: টেক্সটাইল অ্যান্ড গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে তিনি এ আহ্বান জানান। মহামারির ধ্বংসাত্মক প্রভাব থেকে শ্রীলংকা, বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের মতো কমনওয়েলথভুক্ত দেশেগুলোর টেক্সটাইল এবং গার্মেন্টস শিল্প পুনরুদ্ধারে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে সংগঠনটি এই ওয়েবিনারের আয়োজন করে। এফবিসিসিআই এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান এবং বিজিএমইএ’র সভাপতি রুবানা হকসহ দেশের উৎপাদন, লজিস্টিক, ক্রেতা ও খুচরা বিক্রেতাসহ সরকার ও ব্যবসায়ী নেতাদের একটি প্যানেল শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান সমস্যা চিহ্নিত করার পাশাপাশি সেগুলো সমাধানের আহ্বান জানান। ওয়েবিনার সঞ্চালনা করেন সিডব্লিউইআইস’র ডেপুটি চেয়ারম্যান স্যার হুগো সুইয়ার।
এ ব্যাপারে এফবিসিসিআই’র সহসভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘দেশের শিল্প খাতের অগ্রগতি পুনরুদ্ধার করতে সাপ্লাই চেইন, যাতায়াত, পণ্য পরিবহণ, উৎপাদন, আমদানি-রফতানি, তারল্য ও অর্থ সরবরাহ বৃদ্ধি, সুস্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা খাতকে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এফবিসিসিআই তার সক্রিয় অ্যাডভোকেসির মাধ্যমে বিস্তৃত পরিসরে আর্থিক ও অ-আর্থিক ব্যবস্থাসহ আর্থ-সামাজিক এজেন্ডা নিয়ে আগামী তিনবছরের জন্য একটি শক্তিশালী রোডম্যাপ প্রণয়নে সহায়তা করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়াও ফ্রন্টলাইনার ও প্রান্তিক গোষ্ঠীসহ সরকারকে সহায়তা করার জন্য একটি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। আমরা খুব অল্প সময়ের মধ্যে ৯০ থেকে ১০০ মিলিয়ন ফেস মাস্ক তৈরি করতে পেরেছি। এছাড়াও এফবিসিসিআই বাণিজ্যিক কর্মকর্তা, শিল্প ও অন্যান্য ব্যবসায়িক খাতের জন্য কোভিড-১৯ এফবিসিসিআই স্বাস্থ্য পরামর্শক প্রোটোকলও তৈরি করেছে, যাতে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতেও লজিস্টিক, খুচরা, কৃষিসহ বিভিন্ন খাতের কার্যক্রম পুনরায় চালু করা যেতে পারে।’
সরকারের প্রশংসা করে সিদ্দিক আরও বলেন, ‘অর্থ সরবরাহ, ব্যাংকিংয়ে তারল্য বৃদ্ধি, সাড়ে চার কোটি মানুষের খাদ্য সহায়তা, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি এবং ৫০ লাখ পরিবারে নগদ অর্থ দিতে সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১২ দশমিক ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সামগ্রিক আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ প্রদান করেছেন। যার মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসহ ব্যবসা, রফতানি, কৃষি ও অন্যান্য খাতে ব্যাপক পরিসরে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। সংকটের সময়ে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা সরকারের তাত্ক্ষণিকতা ও বিচক্ষণ প্রতিক্রিয়ার একটি অংশ ছিল।’
সাপ্লাই চেইন ব্যাহত হওয়া সম্পর্কে এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি বলেন, ‘এটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এই সংকটে আমরা সবাই একসঙ্গে এগিয়ে চলেছি। এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য একসঙ্গে কাজ করা এবং একে অন্যকে সহযোগিতা করা জরুরি। এই সংকট কাটিয়ে উঠতে সিডব্লিউইআইসিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।’
সিডব্লিউইআইসি প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করে কমনওয়েলথ দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক বলেন, ‘কেবলমাত্র যুক্তরাজ্য থেকে প্রায় ৫২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্ডার বাতিলের কারণে আমাদের জন্য প্রাথমিক অবস্থা বেশ ভয়াবহ হয়ে উঠেছিল। অন্যদের তুলনায় আমাদের পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন ছিল। কারণ, আমাদের ৪ দশমিক ১ মিলিয়ন শ্রমিক সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে প্রণোদনা প্যাকেজের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ এবং আমাদের দেশের প্রাণোচ্ছল মানুষগুলো দ্রুত পুনরুদ্ধার করতে সহায়তা করেছে।’
এসময় তিনি আরও বলেন ‘কমনওয়েলথের মাত্র আটটির মতো দেশ বাংলাদেশ থেকে সোর্সিং করে থাকে। এর মধ্যে মোট সোর্সিং ১০ বিলিয়নও অতিক্রম করে না, যেখানে কমনওয়েলথ দেশগুলো ৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি মূল্যের পোশাক আমদানি করে বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে। আমাদের অবশ্যই হতাশ হয়ে বসে না থেকে সকলের সহযোগিতাকে পুঁজি করে কাজ করতে হবে। আমরা ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্যের একাধিক ব্র্যান্ডের সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং শিগগিরই ভালো ফলাফল পাওয়ার করছি।’