বিএসইসিতে নতুন চেয়ারম্যান দায়িত্ব নেয়ায় পুঁজিবাজার রিফর্ম হচ্ছে: সালমান এফ রহমান
নিজস্ব প্রতিবেদক আপডেট: ২০২০-০৯-৩০ ০৬:১৩:০১
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) নতুন চেয়ারম্যান দায়িত্ব নেয়ার কারণে পুঁজিবাজার রিফর্ম হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা ও সাংসদ সালমান ফজলুর রহমান।
তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে পুঁজিবাজারের পতন নিয়ে নানা আলোচনা সমালোচনা হয়েছে। তবে এখন তা আর নেই।
মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) “ফিউচার অব বাংলাদেশ লেদার সেক্টর ইন দ্যা আফটারম্যাথ অফ কোভিড-১৯” শীর্ষক এক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অর্থনৈতিক বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনোমিক রিপোর্টার ফোরাম (ইআরএফ) ওয়েবিনারটি আয়োজন করে।
তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য দেশি বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানো দরকার। আর বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্যএকটি শক্তিশালী ও গতিশীল পুঁজিবাজার দরকার। বর্তমানে বাজার শক্তিশালী হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, গতিশীল পুঁজিবাজার দরকার ফরেইন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট আকর্ষণের জন্য। এটা হলে যাদের বিনিয়োগের আগ্রহ রয়েছে তারা আগে দেখবে এক্সিট করার সুযোগ আছে কি-না। কারণ ৫/৭ বছর পর বিদেশী বিনিয়োগকারীরা এখান থেকে এক্সিট চাইতে পারে। আর এই এক্সিটের ক্ষেত্রে পুঁজিবাজারই সবচেয়ে ভাল ব্যবস্থা।
সালমান ফজলুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমি যখন চামড়া শিল্প দেখভাল শুরু করি তখন অতীতকে নিয়ে টানাটানি করতে চাইনি। কারণ আমাদের অনেক ভুল রয়েছে, আমি তা স্বীকার করি। যারা ভুল করেছে তাদের ধরে শাস্তি না দিয়ে যেসব সমস্যা এ শিল্পে ছিলো তা দূর করার চেষ্টা করছি। আসলে ভুল থেকে শিক্ষা নেয়ার অনেক কিছু রয়েছে।
তিনি বলেন, এই শিল্পের বর্তমান দূরবস্থার জন্য শুধু সরকার দায়ী নয়, এর দায় পরিবেশবাদীদের্সও রয়েছে। যখন হাজারীবাগে চামড়া নিয়ে কাজ হতো তখন এটাকে স্থানান্তরের জন্য লেখালেখি শুরু হয়, পরিবেশবাদীরা কথা বলতে শুরু করে। পরে তা সাভারে নেয়া হয়। যখন সাভারে নেয়া হয় তখন অবকাঠানো বলতে কিছুই উন্নত হয়নি। রাস্তাঘাটও ভালো ছিলো না।
তিনি বলেন, সাভারের ওই প্রজেক্টে চীনা একজন ঠিকাদারকে কাজ দেয়া হয় কিন্তু তিনি কাজটা ভালোভাবে শেষ করতে পারেননি। এতে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়।
বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা বলেন, কোভিডের পূর্ব পর্যন্ত অর্থাৎ গত বছরের মার্চ থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ওখানকার অবকাঠানো প্রায় শেষ হয়ে গেছে।
সাভারের প্রজেক্টে অর্থ বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যখন প্রজেক্ট শুরু হয় তখন এর ব্যয় ধরা হয়েছিলো ১২৫ কোটি টাকা। তখন প্রজেক্টের মধ্যে সিইটিপি ছিলো না। যখন এটা ইনক্লুড করা হয় তখন এর ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১০৭৮ কোটি টাকা। পরে ডিজাইন থেকে পাওয়ার প্লান্ট বাদ দেয়ায় খরচ কমেছে। বর্তমানে এই ব্যয় ধরা হয়েছে ১০২৫ কোটি টাকা।
সালমান এফ রহমান বলেন, হাজারীবাগ থেকে সাভারে ট্যানারি শিল্প স্থানান্তরের কারণে অনেক ছোট ছোট শিল্পগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। হাজারীবাগে যখন ছিলো তখন ছোট ছোট উদ্যোক্তারা সেখান থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করে প্রডাক্ট তৈরি করতো। কিন্তু সাভার থেকে কাঁচামাল এনে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারেন না।
তিনি বলেন, চীনের সাথে ডিউটি ফ্রি বাণিজ্য শুরু হলে আমাদের দেশের উদ্যোক্তারা বেশ লাভবান হবেন একই সাথে চামড়া শিল্পও বেশ সমৃদ্ধ হবে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন র্যাপিড অ্যান্ড ডিরেক্টর, পিআরআই এর চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক ও র্যাপিডের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম আবু ইউসুফ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. জাফর উদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন দ্যা এশিয়া ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ।
আলোচনায় অংশ নেন অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৈয়দ নাসিম মানজুর, বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (বিএফএলএলএফইএ) সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন এবং বাংলাদেশ ট্যানার্স এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মো. শাহীন আহমেদ।
সভাপতিত্ব করেন ইআরএফের সভাপতি সাইফুল ইসলাম দিলাল।