“পুরোটা করার টাকা একসঙ্গে পাওয়া যাবে না ভেবে প্রথমে ৬ থেকে ৮ তলা করার বিল চাওয়া হয়েছিল। সরকার থেকে পরবর্তীতে বলা হল- কাজ অসম্পূর্ণ রাখা যাবে না। এজন্য প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে গেছে,” বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান।
চলতি বছরের ২৮ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে এ সংক্রান্ত ‘ফারদার ডেভেলপমেন্ট অব জগন্নাথ ইউনিভার্সিটি’-র ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
“আশা করছি, দ্রুতই একনেক এতে অনুমতি দেবে বলেন উপাচার্য।
সরকারি অর্থায়নে এই প্রকল্পের কাজ ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হবে বলে উপাচার্য আশা প্রকাশ করেন।
এর আগে ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের দশকপূর্তি’ অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদও সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় জগন্নাথের ২০ তলা হল ও একাডেমিক ভবন নির্মাণের প্রকল্প অনুমোদনের কথা জানিয়েছিলেন।
নতুন এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ‘পুরো ক্যাম্পাসে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে’ বলে মন্তব্য করেন অধ্যাপক মীজানুর।
“বিজ্ঞান ভবন ভেঙে বহুতল একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হবে। এছাড়া ছোটখাটো অনেক স্থাপনা ভেঙে ফেলা হবে। শহীদ মিনার কলা ভবনের সামনে স্থানান্তর করা হবে।”
পরিবহন সংকট নিরসনে ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নতুন একটি বাস কেনার কথাও জানান উপাচার্য। “এটি শিক্ষার্থী না শিক্ষকরা ব্যবহার করবেন, তা এখনও ঠিক হয়নি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের জন্য দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের বাঘৈরে ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন করে আরও ১০-১১ বিঘা জমি কিনেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সেখানেই ছাত্রদের জন্য নতুন হলটি নির্মাণ করা হবে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী সুকুমার চন্দ্র সাহা।
আর ভেঙে ফেলা বিজ্ঞান ভবনের ক্লাস নতুন একাডেমিক ভবনের নির্মীয়মান উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারিত অংশে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তরের পরিচালক নুরুল হক মজুমদার।
“বিজ্ঞান ভবন ভাঙতে ভাঙতে একাডেমিক ভবনের সম্প্রসারণের কাজ শেষ হয়ে যাবে। তখন সেখানেই বিজ্ঞান বিভাগের ক্লাসগুলো স্থানান্তরিত করা যাবে।”
প্রথম উন্নয়ন প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির ‘দ্বিতীয় দফা আবেদন’
বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার পর নেওয়া প্রথম উন্নয়ন প্রকল্পের অধীন ২০ তলাবিশিষ্ট একাডেমিক ভবন নির্মাণের মেয়াদ আরও একদফা বাড়ানোর আবেদন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ভবনটি নির্মাণে ২০০৫ সালেই বিশ্ববিদ্যালয়কে ৩৬ কোটি টাকা দেয় সরকার। সাত তলা পর্যন্ত ওঠার পর ভবনটির কাজ ‘নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়া’র কারণে বন্ধ হয়ে পড়ে।
এরপর ২০১০ সালের অক্টোবরে ভবনটিকে সাত তলা থেকে ১৬ তলা করা ও ২০ তলাবিশিষ্ট একটি নতুন ছাত্রী হল নির্মাণের জন্য আরও ১০০ কোটি টাকার অনুমোদন দেয় একনেক।
ওই প্রকল্প অনুযায়ী, ভবনের উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ কাজ ২০১১ সালের ৩১ জানুয়ারি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও উদ্বোধন হয় তিন বছরেরও বেশি সময় পর, ২০১৪ সালের ১০ মার্চ।
তাই ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্প’ শেষ করার মেয়াদও ২০১৩ সালের জুন থেকে তিন বছর বাড়িয়ে ২০১৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত করা হয়।
কিন্তু মেয়াদের দুই তৃতীয়াংশ সময় পেরিয়েও ভবনটি ৭ তলাতেই আটকে আছে। ছাত্রী হলের নির্মাণ কাজেও কেবল ‘ফাউন্ডেশনের’ কাজ শেষ হয়েছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ‘দ্বিতীয়বার প্রকল্পের সময় বাড়ানো’র জন্য ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদন পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তরের পরিচালক নুরুল হক মজুমদার।
“নির্ধারিত সময়ে কোনোভাবেই প্রথম উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না। এজন্য ২০১৮’র জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানোর আবেদন জানানো হয়েছে।”