একজন যৌনকর্মীর বড়দিন উদযাপন

প্রকাশ: ২০১৫-১২-২৫ ২২:৩৭:৪০


ক্রিসমাসে সকলে যেমন ঘর সাজায়, তিনিও সাজান৷ তবে তফাৎ একটাই৷ নিজের আনন্দের জন্য নয়, তিনি এসব করেন তাঁর ‘ক্লায়েন্ট’দের আনন্দ দিতে৷ কেননা সেটাই তাঁর পেশা৷ জীবিকা হিসেবে শরীর বিক্রিকেই বেছে নিয়েছেন তিনি৷ আর  তাই এই সময়টাই তাঁর কাছে বছরের ব্যস্ততম৷ সম্প্রতি এক প্রখ্যাত ইংরেজি পত্রিকায় লন্ডনের এক যৌনকর্মী নাতালিয়া জোনস ছদ্মনামে খোলাখুলি জানিয়েছেন ক্রিসমাস ইভে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা৷আর তাঁর জবানিতেই ধরা পড়েছে উৎসবের আলোর বৃত্তের বাইরে থাকা উৎসবের আর এক ছবি৷

sex-workerসারা দুনিয়া যখন উৎসবে মেতে ওঠে তখন কেমন কাটে যৌনকর্মীদের দিনগুলো? এরই আভাস দিয়েছেন ওই যৌনকর্মী৷ জানিয়েছেন, বছরের এই সময়টা এমনিই ব্যস্ততার৷ কেননা তুমুল ভিড় থাকে ‘ক্লায়েন্ট’দের৷
ফেস্টিভ সিজন সেলিব্রেশনের নানা উপায়ের মধ্যে, এটিকেও বেছে নেন বহু মানুষ৷ সারা পৃথিবীতেই এ ছবি একইরকম৷ যখন যেখানে উৎসবের আনন্দে ঢল নামে মানুষের, তখন সেখানেই ভিড় বাড়ে যৌনকর্মীদের আস্তানায়৷ শয়ে শয়ে মানুষ উৎসবের এই দিনগুলোয় মিটিয়ে নেন তাঁদের শরীরি চাহিদা৷ তাই ফুরসৎ থাকে না যৌনকর্মীদের৷ এঁর ক্ষেত্রেও ছবিটা একইরকম৷

ফেস্টিভ সিজন আসার আগেই তিনি সাজিয়ে রাখেন নিজের ফ্ল্যাট৷ তারপর ফেস্টিভ সিজনের সেলিব্রেশন জমতে থাকা মাত্রই মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে তাঁর দরজায়৷ বেশীরভাগই মদ্যপ অবস্থায় পার্টি থেকে ফিরে রাত কাটাতে চান তাঁর ঘরে৷ এরকম মানুষদের অনেক ক্ষেত্রে ফিরিয়েই দেন তিনি৷ তবে তারই মধ্যে থাকে বহু চেনা মুখ৷ সারা বছর ধরেই ফ্ল্যাটে আসেন তাঁরা৷  উৎসবের এই দিনে তাই তাঁদের ফেরাতে পারেন না৷ প্রায় প্রত্যেকেরই চাহিদা পূরণ করতে চেষ্টা করেন৷ সারা বছর ধরে যারা তাঁর কাছে আসেন, তাঁরা এদিন খালি হাতেও আসেন না৷ হাতে করে তাঁর জন্য কিছু না কিছু উপহার নিয়ে আসেন৷ হাজার হলেও ক্রিসমাস ইভ বলে কথা!

সবথেকে আশ্চর্যের এই যে, তাঁর প্রতিবেশীরাও তাঁকে এইদিনে ক্রিসমাসের উপহার পাঠান৷ তিনি জানিয়েছেন, তাঁর পেশার কথা সকলেই জানেন৷ কিন্তু কেউ তাঁকে ঘৃণা করেন না৷ আর ক্রিসমাসের দিনে তিনি বন্ধ রাখেন তাঁর দরজা৷ তিনি মনে করেন, যে কোনও কাজের মতো, তাঁর কাজেও এই দিনটা অন্তত ছুটি থাকা উচিত৷ অবশ্য নিউ ইয়ার ইভে আবারও বাড়ে ব্যস্ততা৷ কেননা অভিজ্ঞতা থেকে তিনি জানেন, ক্রিসমাসে দেদার খরচ করা মানুষ পরে আর খরচ করতে চান না৷ ফলে কম পয়সায় কাজ করতে হয়৷ আর তাই ফেস্টিভ সিজনে মানুষ যখন আনন্দে মত্ত, তখনই তাঁর উপার্জনের সঠিক সময়৷ তাই গোটা দুনিয়া যখন ছুটির আনন্দে ব্যস্ত, তিনি তখন ডুবে থাকেন কাজে৷ আসলে তাঁর পেশাই যে তাঁকে উৎসবে ছুটি মঞ্জুর করে না৷