জেনে নিন দেশে দেশে বর্ষবরণের আজব রীতি!!
প্রকাশ: ২০১৫-১২-২৮ ২১:১৩:১১
বর্ষবরণের প্রস্তুতিতে এতটুকু খামতি নেই বিশ্বজুড়ে ! সূর্য ডুবতেই শুরু হয় পার্টি, আতসবাজি, হইহুল্লোড়। এর মধ্যে বেশ কিছু দেশে বর্ষবরণের রীতি একটু আলাদা, মজাদার। বর্ষবরণ নিয়ে রয়েছে দেশভেদে বেশ কিছু মজাদার সংস্কারও। যেমন ধরা যাক ফ্রান্সের কথা। বছরের শেষ দিনে ঘরে থাকা সব মদ শেষ করতেই হবে। নতুন বছরে ঘরে পুরনো মদ পড়ে থাকা অশুভ। সৌভাগ্য ঘরে আসবে না। তবে ঘরে-থাকা মদ ফেলে দিলে চলবে না। খেয়েই শেষ করতে হবে। মদে মশগুল রাত, নতুন ভোর! কিংবা ধরুন প্যারাগুয়ের কথা। সেখানে বছরের শেষ পাঁচদিন তাদের ঘরে কোনও আগুন জ্বলে না। হয় না কোনও রান্না। ওই পাঁচদিনকে তারা পালন করে ‘ঠান্ডা খাবার খাওয়ার দিন’ হিসেবে। ৩১ ডিসেম্বর রাত ১২টার পর নতুন বছরের ঘণ্টা বাজলে হেঁসেলে আগুন জ্বেলে নতুন নতুন পদ, একসঙ্গে খেয়ে নতুন বছরে পা।
পোল্যান্ডেও বর্ষবরণটা বেশ মজার। এখানকার তরুণীরা বর্ষবরণের রাতে খরগোশের মতো পোশাক পরে জড়ো হয়। এরপর খরগোশের মতো লাফিয়ে লাফিয়ে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি জোগাড়ের পালা। তারপর ওই শাকসবজির যতটা সম্ভব চিবিয়ে খায়! তাদের ধারণা, শাকসবজি খেয়ে নতুন বছরে পা দিলে নতুন বছরের দিন সুন্দর হবে। থাকবে শান্তি।
আমাদের দেশে হাঁচি নিয়ে আমাদের নানা সংস্কার আছে। কথার মাঝে হাঁচি পড়লে সেটা ‘সত্যি হাঁচি’। কথাটা সত্যি। আবার কোথাও বেরনোর সময় হাঁচি পড়ল, তো সেটা অমঙ্গলসূচক। কিন্তু বুলগেরিয়াবাসীর কাছে বর্ষবরণের দিন হেঁচে ফেলাটা বেশ মঙ্গলের। বর্ষবরণের দিন তাঁদের বাড়িতে আসা কোনও অতিথি যদি হেঁচে ফেলেন, তাহলে বাড়ির কর্তা তাঁকে নিজের খামারে নিয়ে যান। এরপর হেঁচে-ফেলা ব্যক্তির প্রথম নজর খামারে যে পশুটির ওপর পড়বে, সেই পশুটিকে গৃহকর্তা ওই ব্যক্তিকে উপহার দেন। ভাগ্য সঙ্গ দিলে অনেক অতিথি ঘোড়াও উপহার হিসেবে পেয়ে থাকেন। বুলগেরিয়ানদের ধারণা, হেঁচে-ফেলা অতিথি পুরো পরিবারের জন্য সুখ ও সমৃদ্ধি নিয়ে আসবেন।
বছরের শেষ দিন হাঙ্গেরিবাসী হাঁস, মুরগি বা কোনও ধরনের পাখির মাংস খান না। তাঁদের মতে, ওই দিন উড়তে পারে, এমন পাখির মাংস খেলে নতুন বছরে জীবন থেকে সব সৌভাগ্য উড়ে যাবে! এর পাশাপাশি, তাঁরা নতুন বছরে পরিচিত বা বন্ধুদের যে উপহার দেন, তাতে চিমনি পরিষ্কার করছেন এমন একজন শ্রমিকের ছবি থাকে। এর কারণ হিসেবে তাঁদের ব্যাখ্যা, উপহারে এই ছবিটি থাকলে পুরনো বছরের সমস্ত দুঃখ নতুন বছরে মুছে যাবে।
ভিয়েতনামের উত্তরে কিছু সংখ্যালঘু জাতি রয়েছে, যারা বছরের শেষ দিনে যে জলাধার থেকে প্রতিদিন জল সংগ্রহ করে, সেই জলাধারে দল বেঁধে গিয়ে মোমবাতি জ্বেলে মাটিতে মাথা ছুঁইয়ে প্রণাম করে জলাধার থেকে এক কলসী জল নিয়ে আসে। এরপর ওই জল দিয়ে বছরের প্রথম দিন রান্না করে পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে উৎসর্গ করার পর নিজেরা খায়। তবে বছরের প্রথম দিনের রান্নায় স্যুপ জাতীয় খাবার থাকা চলবে না। বছরের প্রথম দিন স্যুপ জাতীয় খাবার খেলে নাকি মাঠের ফসল বন্যায় ভেসে যাবে।
আফ্রিকার মাদাগাস্কারায় নতুন বছর শুরুর সাতদিন আগে থেকে মাংস খাওয়া বন্ধ। বছরে প্রথম দিন বাড়িতে মুরগির মাংস রান্না হবে। প্রথমে তা খেতে দেওয়া হবে বাবা-মাকে। বাবা-মাকে খেতে দেওয়া হয় মুরগির লেজের দিকের অংশটা। আর ভাই-বোনেদের দেওয়া হয় মুরগির পা।
সানবিডি/ঢাকা/রাআ