জামালপুরে ব্যাপক সংঘর্ষ : জাপা-আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর নির্বাচন বর্জন
আপডেট: ২০১৫-১২-৩০ ১৫:৩০:৩৮
জামালপুর সদর, সরিষাবাড়ী, দেওয়ানগঞ্জ ও মেলান্দহ উপজেলায় আওয়ামী লীগ-বিএনপি মেয়র প্রার্থী এবং কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষ, গুলি, টিয়ার সেল ও ভোট কেন্দ্র দখলের মধ্য দিয়ে পৌরসভা নির্বাচন চলছে। এসব ঘটনায় সরিষাবাড়ী উপজেলায় বিএনপি কর্মী খোরশেদ আলম, ওবায়দুর রহমান টিটু ও ছাত্রলীগ কর্মী আল আমীন আহত হয়েছেন।
আরামনগরবাজার আলিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চার ফাঁকা গুলি ও দু’টি টিয়ার সেল নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। এসময় বিপ্লব নামে এক ছাত্রলীগ কর্মী আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
সরিষাবাড়ী পৌরসভায় গজারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় নয় রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
সকাল ১০টার দিকে জামালপুর পৌরসভায় সরকারি জাহেদা সফির মহিলা কলেজ কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দলীয় মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে আধা ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, অগ্নিসংযোগ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। আহত হয়েছেন ১০ জন। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসতে ৩০ রাউন্ড শর্টগানের ফাঁকা গুলি ছুড়ে পুলিশ ও বিজিবি।
শহরের নাসিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মেয়র প্রার্থী এবং কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় গুরুতর আহত আব্দুল হামিদকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
এছাড়া শহরের বানিয়াবাজার এলাকায় জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান ছানাকে লাঞ্ছিত করেছে ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী (আওয়ামী লীগ সমর্থক) জামাল পাশা। এ ঘটনায় জামালপুর-ঢাকা সড়কে অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষোভ করেছে আওয়ামী লীগ। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে কেন্দ্র দখল ও ভোট কারচুপির অভিযোগে জামালপুর পৌরসভায় জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী খন্দকার হাফিজুর রহমান বাদশা ও দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী শেখ মোঃ নুরুন্নবী অপু নির্বাচন বর্জন করেছেন। আজ নির্বাচন চলাকালে এ ঘোষণা দেন তারা। এছাড়া একই অভিযোগে জামালপুর পৌরসভায় ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী তরুণ হাসান কাজল ও ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী শহিদুর রহমান নির্বাচন থেকে সরে দাড়িয়েছেন।
জোর করে ব্যালট পেপারে সীল ও ভোট কারচুপির অভিযোগে জামালপুর পৌরসভায় ছোনকান্দা, আজাদ ও বানিয়াবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। একই অভিযোগে জামালপুর পৌরসভায় সিংহজানী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র ও সরিষাবাড়ী পৌরসভায় বাঙ্গালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র এক ঘণ্টা ভোটগ্রহণ সাময়িক বন্ধ থাকার পর পুনরায় চালু হয়েছে।
এদিকে দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভায় বিভিন্ন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র প্রার্থী শাহনেওয়াজ শাহেনশাহ ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী শেখ মোঃ নুরুন্নবী অপু এবং কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে কয়েকদফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে।
মেলান্দহ পৌরসভায় শ্যামপুরের শাহজাদপুর এলাকায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে চারদফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংর্ষের ঘটনায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খলিলসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
জামালপুর পৌরসভায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট শাহ মোঃ ওয়ারেছ আলী মামুন অভিযোগ করেন, বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে তার পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে এবং অনেক কেন্দ্রে তাদের ঢুকতেই দেয়নি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। ভোটারদের কাছ থেকে মেয়র প্রার্থীর ব্যালট পেপার জোর করে নিয়ে নিচ্ছে আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা। দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রতিটি কেন্দ্রের সামনে অবস্থান করছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এছাড়া কেন্দ্র দখল করে অবাধে ব্যালট পেপারে সীল দিচ্ছে তারা।