পেট্রাপোল বন্দরে বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় ৫ হাজার ট্রাক

জেলা প্রতিনিধি প্রকাশ: ২০২১-০৩-০২ ১৭:৩৯:০৩


দেশের সর্ববৃহৎ স্থল বন্দর বেনাপোল বন্দরের ওপারে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় আমদানি পণ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ৫ হাজার ট্রাক। ফলে দু দেশের আমদানি রফতানি বানিজ্য বড় ধরনের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে রাজস্ব আদায়ে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।

বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশে পণ্য আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে এধরনের জটিলতা ইচ্ছাকৃতভাবে তৈরী করে ট্রাক থেকে প্রতিদিন আদায় করা হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকার চাদা। আমদানিকারক, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টসহ অন্যন্য ব্যবসায়ীরা পন্য আমদানিতে দীর্ঘ সূত্রীতার কারনে বেনাপোল বন্দর দিয়ে পন্য আমদানি কমিয়ে দিয়েছে।

বেনাপোল বন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ বন্দর দিয়ে প্রতি বছর ভারতের সাথে ২৪ হাজার কোটি টাকার বানিজ্য সম্পান্ন হয়ে তাকে। বছরে প্রত্যক্ষ ও পরক্ষ ভাবে ১০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় করে থাকে বেনাপোল কাস্টমস হাউস। দেশের অত্যন্ত সম্ভাবনাময় বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ৭/৮’শ ট্রাক পন্য আমাদনি হতো ভারতে থেকে। বর্তশানে তার সংখ্যা দাড়িয়েছে ৩/৪’শ ট্রাকে।

ওপারে বনগাও পৌরসভার মেয়র শংকর আড্য ডাকু কালিতলা পার্কিং নামে একটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন পার্ক তৈরী করে সেখানে আমদানিবোঝাই ট্রাক গুলো জোর করে প্রবেশ করানো হচ্ছে। প্রতিট্রাক থেকে ড্রামারেজ বাবদ ২ হাজার টাকা করে চাদা আদায় করা হচ্ছে। বর্তমানে একটি ট্রাক বাংলাদেশে আমদানি হতে ১৫/২০ দিন করে সময় লাগছে। যার পুরো চাদার অর্থ বাংলাদেশী আমদানি কারকদের পরিশোধ করতে হচ্ছে। ফলে মোটা অংকের লোকসানের কথা ভেবে অনেকেই বেনাপোল বন্দর থেকে মুখ ঘুড়িয়ে নিচ্ছে।

বেনাপোল কাস্টম ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়াডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা জানান, দেশের ৭৫ ভাগ শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাঁচা মালামালের পাশাপাশি বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য আসে এই বন্দর দিয়ে। ওপারে পণ্য আমদানিতে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানের উপর এর প্রভাব পড়ছে। পাশাপাশি রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রেও এর প্রভাব পড়ছে। গত ২ মার্চ সকালে বেনাপোল কাস্টমস কমিশণার আজিজুর রহমান আমদানিকৃত ট্রাকের সংখ্যা বৃদ্ধি ও রাজস্ব আয় বাড়াতে ভারতীয় ব্যবসায়ী ও কাস্টমস এর সাথে বৈঠক করেছেন।

বেনাপোল কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান, বেনাপোলের ওপারে এখন ভয়াবহ পণ্যজট লেগে রয়েছে। প্রায় ৫ হাজার ট্রাক আমদানি পণ্য নিয়ে বন্দরের ওপারে অপেক্ষায় রয়েছে। পেট্রাপোলের কালিতলা পার্কিং থেকে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করতে এখন প্রায় ১৫ দিন লেগে যাচ্ছে। ফলে আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের যেমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, তেমনি বেড়ে যাচ্ছে আমদানি ব্যয়।

ভারত বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের ডাইরেক্টর মতিয়ার রহমান জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে স্থল পথে পন্য আমদানি করতে বেনাপোলের ওপারে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে গড়ে উঠেছে একটি শক্তি শালী সিন্ডিকেট। বনগাও পৌর সভার মেয়র শংকর আঢ্য ডাকুর নেতৃত্বে তার লোকজন প্রতিটি পন্যবোঝাই ট্রাক থেকে প্রতিদিন ২ হাজার টাকা চাদা আদায় করছে। ফলে আমদানিকারকরা মোটা অংকের আর্থিক লোকসানে পড়ে সর্বশান্ত হচ্ছে।

বেনাপোল কাস্টম ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়াডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, দেশের ৭৫ ভাগ শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাঁচা মালামালের পাশাপাশি বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য আসে এই বন্দর দিয়ে। পণ্য আমদানিতে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানের উপর এর প্রভাব পড়ছে। পাশাপাশি রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রেও এর প্রভাব পড়ছে।

বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার মো: আজিজুর রহমান জানান, ভারতীয় প্রেটাপোল কালিতলা পার্কিং এ বর্তমানে ৫৫০০ পন্য বোঝাই ট্রাক আটাকে আাছে । আমরা রাজস্ব আয় বাড়াতে ও ট্রাক সংখ্যা বুদ্ধি করতে ভারতীয় কাস্টমস ও ব্যবসায়ীদের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করে যাচ্ছি।