খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২১-০৩-০৮ ১৪:২১:১৮
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ পূর্বের শর্তে আরও ৬ মাস বাড়ানোর সুপারিশ করে মতামত দিয়েছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
সোমবার (৮ মার্চ) আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ সম্পর্কিত নথিতে অনুমোদন দিয়েছেন এবং উক্ত নথি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আইনমন্ত্রী বলেছেন, দেশের ভিতরে থেকে যে কোন জায়গায় চিকিৎসা নিতে পারবেন বেগম জিয়া। তবে স্থায়ী দন্ড মওকুপের আবেদন বিবেচনা করা হয় নি।
এর আগে গত ৩ মার্চ (বুধবার) খালেদা জিয়ার জামিনের শর্ত শিথিল ও দণ্ডাদেশ মওকুফের বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি বলেন, বেগম জিয়াকে দেওয়া জামিনের শর্ত শিথিল করার পাশাপাশি দণ্ডাদেশ মওকুফ করার আবেদন জানিয়েছে তার পরিবার। আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত জানাবে সরকার।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বিদেশে যাওয়ার বিষয়টি বেগম জিয়ার পরিবার অনুরোধ করেছে। বেগম জিয়ার উন্নত চিকিৎসার বিষয়টি তার বাসাতেই হবে, বাসার বাইরে তিনি যাবেন না।
এর আগে, মঙ্গলবার (২ মার্চ) দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার খালেদা জিয়ার দণ্ডাদেশ স্থগিত ও বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে এ আবেদন জমা দেন। আবেদনের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করে সেটি পাঠিয়ে দেন সচিবের দফতরে।
৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়া বর্তমানে গুলশানে তার ভাড়া বাসা ‘ফিরোজায়’ রয়েছেন। তিনি আর্থ্রাইটিসের ব্যথা, ডায়াবেটিস, চোখের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছেন।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজায় কারাজীবন শুরু করেন খালেদা জিয়া। এরপর ৩০ অক্টোবর এ মামলায় আপিলে তার আরও পাঁচ বছরের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট। একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫। রায়ে সাত বছরের কারাদণ্ড ছাড়াও খালেদা জিয়াকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।
কারাগারে থাকাবস্থায় বিশ্বজুড়ে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হলে বিএনপির নেতারা খালেদা জিয়ার মুক্তির জোর দাবি তোলেন। পরিবারের পক্ষ থেকেও খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়। সেই প্রেক্ষাপটে কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে সরকার শর্তসাপেক্ষে মুক্তির সিদ্ধান্ত দেয় ২৪ মার্চ। ওইদিনই তিনি মুক্তি পান।