চুরির অভিযোগে যুবককে গাছে বেঁধে অমানবিক নির্যাতন
জেলা প্রতিনিধি প্রকাশ: ২০২১-০৩-১২ ১১:১৭:৫৭
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের বিলহিজলী গ্রামে চুরির অভিযোগে এক যুবককে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে গাছের সাথে বেঁধে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। এ সময় বাধা দেওয়ায় নির্যাতনের শিকার যুবকের পরিবারের সদস্য অর্থাৎ তার মা-বাবাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
নির্যাতনের শিকার যুবক বিলহিজলী গ্রামের অধির কুমার মন্ডলের ছেলে অচিন্ত কুমার মন্ডল (২৫)। নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটে গত রবিবার (৭ মার্চ) রাতে পরে সোমবার (৮ মার্চ) বিকেলে এ বিষয়ে বালিয়াকান্দি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
জানা যায়, শনিবার রাতে একই এলাকার রেজাউলের বাড়িতে চুরির অভিযোগ রোববার রাতে এ নির্যাতন চালায় রেজাউল ও তার সহযোগীরা। নির্যাতনের শিকার যুবকের মা মিতা মন্ডল বলেন, গত শনিবার (৬ মার্চ) দিবাগত রাতে তাদের প্রতিবেশী রেজাউল ইসলাম ওরফে রেজার বাড়িতে নাকি চুরি হয়েছে। পরদিন রেজাউল, জিয়া ও ময়েন উদ্দিনসহ তাদের কয়েকজন লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমার বাড়িতে এসে হামলা করে। তারা চুরির অপবাদ দিয়ে আমার ছেলে অচিন্তকে ঘুম থেকে ডেকে উঠায় ও বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যেতে চায়।
তিনি আরো বলেন, আমি ও আমার স্বামী এতে বাধা দিলে আমাদেরকে কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দিয়ে তাদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। এরপর আমার ছেলেকে তারা নিয়ে যায়। পরে আমার ছেলেকে রেজার লিচু বাগানে নিয়ে গাছের সাথে বেঁধে লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে অমানবিকভাবে নির্যাতন করে।’
মিতা মন্ডলের ভাষায়, আমার ছেলে বর্তমানে মৃতপ্রায়। এর মধ্যেও তারা আবারো বাড়িতে এসে বাড়িঘর ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য আমাদের হুমকি দিচ্ছে।তাদের একটাই কথা এই গ্রামে আমাদের মতো কোনো হিন্দু পরিবার তারা নাকি বাস করতে দেবে না। কিন্তু এব্যাপারে আমরা আইনের সহায়তা কামনা করলেও কোনো প্রকার সহায়তা পাচ্ছি না।
আহত অচিন্ত কুমার গত রোববার রাতে প্রথমে বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার অবস্থার অবনতি হলে সোমবার সকালে তাকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সর্বশেষ অবস্থা আশংকাজনক জনক হওয়ার কারণে বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) ঢাকায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
অচিন্ত কুমারের মা বলেন, মারধরে আমার ছেলের পা ভেঙ্গে গেছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে অসংখ্য ক্ষতের চিহ্ন। আমি সঠিক বিচার দাবি করছি।
ঘটানায় অভিযুক্ত রেজাউল ইসলাম রেজার সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে তাকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি একাধিকবার ফোন করা হলেও ফোন বন্ধ দেখায়।
এব্যাপারে বালিয়াকান্দি থানায় অভিযোগ দায়ের হলেও ঘটনার পরবর্তী সময়ে কোনো প্রকার আইনের তৎপরতা ছিলনা। আজ সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তারিকুজ্জামান বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।