চাহিদা অনুযায়ী জনবল নেই ভোক্তা অধিদফতরে

নিজস্ব প্রতিবেদক আপডেট: ২০২১-০৩-১৪ ১১:৩৫:৩৯


জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর প্রতিষ্ঠার পর থেকে একের পর এক ভোক্তা স্বার্থবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে আসছে। শুরুতে অভিযানের পরিমাণ কম হলেও ধীরে ধীরে এর পরিধি বাড়তে থাকে। যদিও চাহিদা অনুযায়ী এখনও জনবল নেই এই অধিদফতরে।

জেলা পর্যায়ে মাত্র একজন করে সহকারী পরিচালক নিয়ে চলে অভিযান। তবুও সপ্তাহের প্রায় সব দিনই চলে অভিযান। এমনকি সাপ্তাহিক ছুটির দিনও বাদ পড়ছে না বাজার তদারকি থেকে।

অধিদফতর সূত্র জানিয়েছে, প্রথম দিকে ২০০৯ থেকে ২০১০ সালে মাত্র সাতটি বাজারে অভিযান চালানো হয়। সে সময় ৫৪টি প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ ৬৫ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। স্ব-উদ্যোগে অধিদফতর বাজার মনিটরিং করলেও তখন কোনো ব্যক্তি থেকে অভিযোগ আসেনি।

২০২০-২১ অর্থবছর এখনও শেষ না হলেও চলতি অর্থবছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট ৯ হাজার ৮৫১টি অভিযান পরিচালনা করা হয়। যার মধ্যে ১৬ হাজার ৯৫৮টি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করে ১০ কোটি ২৩ লাখ এক হাজার ৭০০ টাকা আদায় করে অধিদফতর। এসময় শুধু ব্যক্তি পর্যায়ে ৬ হাজার ৮২৭টি অভিযোগ আসে। এর মধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তির সংখ্যা ৬ হাজার ৮০০টি।

এদিকে অধিদফতর বরাবর কেউ যদি কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়, সেটি সঙ্গে সঙ্গে আমলে নেয়। ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে যে জরিমানা অধিদফতর করে তার ২৫ শতাংশ অভিযোগকারীকে দেয়া হয়। দ্রুত সময়ে অভিযোগের নিষ্পত্তি হওয়ায় অপরাধীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে আগ্রহ বাড়ছে মানুষের মাঝে।

অধিদফতর সূত্র জানায়, গত ১০ বছরে, অর্থাৎ ২০০৯-১০ থেকে ২০২০-২১ অর্থবছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৪১ হাজার ১০৭টি বাজারে অভিযান পরিচালনা করেছে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতর। এ সময় ৯৭ হাজার ৩০৯টি জরিমানা করে ৭২ কোটি ৮৪ লাখ ৬ হাজার ৪৫০ টাকা আদায় করা হয়।

এর মধ্যে ২৫ শতাংশ হারে জরিমানার অর্থ অভিযোগকারীকে দেয়া হয়। বাকি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়। অর্থাৎ অভিযোগকারীকে দেয়া হয়েছে এক কোটি ১৬ লাখ ২৫২ টাকা, সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হয়েছে ৭১ কোটি ৬৫ লাখ ৩৬ হাজার ১২৩ টাকা।

আলোচিত সময়ে মোট ৩৯ হাজার ৮০১টি অভিযোগ আসে অধিদফতরে। অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে ৩৭ হাজার ৯০৯টি। অনিষ্পত্তি বা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে ১৮৯২টি। অভিযোগ নিষ্পত্তির মাধ্যমে দণ্ডিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৬ হাজার ৭৪৫টি, ২৫ শতাংশ হিসাবে জরিমানার অর্থ পেয়েছে ৬ হাজার ৬৪৫ জন।

অভিযোগ নিষ্পত্তির মাধ্যমে আদায়কৃত জরিমানা হলো ৪ কোটি ৭০ লাখ ৮৬ হাজার ৮ টাকা। অভিযোগকারীকে জরিমানা থেকে দেয়া হয়েছে এক কোটি ১৬ লাখ ২৫২ টাকা।

এ প্রসঙ্গে অধিদফতরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ ভয়াবহ কোভিডের সময়েও বাণিজ্যমন্ত্রী, সচিব ও ডিজি স্যারের নির্দেশনায় অধিদফতরের কর্মকর্তারা আস্থার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভোক্তা আইন বিষয়ে সবাইকে সচেতন করা হচ্ছে। জরিমানা করাটাই মুখ্য বিষয় না, আমরা চাই ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের সচেতনতা। আমাদের নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি ভোক্তার অভিযোগ নিয়েও অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। মহামারির মধ্যেও আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তির চেষ্টা করেছি। এ সফলতা অধিদফতরের, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের।’

এ বিষয়ে অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) বাবলু কুমার সাহা বলেন, ‘আমরা প্রতিষ্ঠানকে জরিমানার আওতায় আনছি। নিয়মতান্ত্রিক ও নৈতিকতার সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনাকারী সকল ব্যবসায়ীকে এ অধিদফতরে সব সময় সাধুবাদ জানাই।’