বগুড়ায় ৩৫ কচ্ছপ জব্দ, ২ ব্যবসায়ী আটক

জেলা প্রতিনিধি আপডেট: ২০২১-০৩-১৫ ১৫:২৬:১৬


বগুড়ায় ৩৫ সুন্ধি প্রজাতির কচ্ছপের চালানসহ দুই ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে। সোমবার (১৫ মার্চ) সকালে শহরের তিনমাথা রেলগেট এলাকায় বিক্রির সময় বিলুপ্তপ্রায় ওই কচ্ছপগুলো জব্দ করা হয়।

শিক্ষার্থীদের পরিবেশবাদী সংগঠন টিম ফর এনার্জি অ্যান্ড ইনভায়রনমেন্ট রিসার্চের (তীর) সহযোগিতায় বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের সদস্যরা ওই বিলুপ্তপ্রায় কচ্ছপগুলো জব্দ করেন।

আটক ব্যবসায়ীরা হলেন-বগুড়া শহরের ঠনঠনিয়া হিন্দুপাড়ার মৃত হলধর দাসের ছেলে গোবিন্দ চন্দ্র দাস (৫০) ও পালশা পূর্বপাড়ার আফসার আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম (৪৮)।

বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিদর্শক অসিম মল্লিক জানান, আটক কচ্ছপ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

তীরের সাবেক সভাপতি আরাফাত রহমান জানান, দুই ব্যবসায়ী সোমবার সকালে বগুড়া শহরের তিনমাথা রেলগেট এলাকায় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের আঞ্চলিক কার্যালয়ের সামনে কচ্ছপগুলো অন্যত্র নিতে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিল।

এ সময় তাদের সহযোগিতায় বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের সদস্যরা দুটি বস্তায় থাকা ৩৭ কেজি ওজনের ৩৫টি সুন্ধি কচ্ছপসহ কুচিয়া মাছ ব্যবসায়ী গোবিন্দ চন্দ্র দাস ও রফিকুল ইসলামকে আটক করা হয়।

আটক ব্যবসায়ীরা জানান, তারা বগুড়ার কাহালু উপজেলায় হিন্দুদের একটি অনুষ্ঠানে সরবরাহ করতে নোয়াখালী, ভৈরব ও মুন্সীগঞ্জ থেকে কচ্ছপ/কাছিমগুলো সংগ্রহ করেছেন। তারা প্রতিমাসে এমন ২-৩টি চালান ঢাকা, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এনে বিক্রি করে থাকেন।

ঢাকার বিভিন্ন হোটেল, রেস্তোরাঁয় প্রতিটি কচ্ছপ এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। বগুড়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় কিনে থাকেন।

অভিযানে থাকা বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিদর্শক অসিম মল্লিক জানান, আইন অনুসারে কচ্ছপ ধরা, শিকার, ক্রয়-বিক্রয় ও খাওয়া দণ্ডনীয় অপরাধ।

ইউনিটের পরিচালক এএসএম জহির উদ্দিন আকন জানান, কচ্ছপ পরিবেশের জন্য উপকারী। এরা সাধারণত শ্যাওলা, ছোট শামুক ও মাছ খেয়ে থাকে। সুন্ধি কচ্ছপ থাকা জলাশয়ে পানি স্বচ্ছ থাকে ও মাছগুলো দ্রুত বড় হয়। কিন্তু মানুষ লোভের বশে এগুলো ক্রয়-বিক্রয় করায় এ প্রজাতি বিলুপ্তির পথে।

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন ২০১২-এর ৩৪ ধারা অনুযায়ী, আটকদের সর্বোচ্চ এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে। প্রাণীগুলোর উৎস নিশ্চিত হওয়ার পর আটক কুচিয়া মাছ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।