অর্থনীতিতে অপার সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে গড়াই নদীর সেতু

জেলা প্রতিনিধি প্রকাশ: ২০২১-০৩-২০ ১১:৩৮:২৭


রাজবাড়ী পাংশার নাদুরিয়া ও মাগুরা শ্রিপুরের লাঙ্গলবাঁধের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া গড়াই নদীর উপর একটি সেতু এক সময় স্বপ্ন ছিল। কিন্তু আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব। এক সময়ের স্বপ্নের সেতু এখন দৃষ্টিসীমায় দিগন্তজুড়ে দাঁড়াতে যাচ্ছে। গড়াইয়ের তীরে দেখা যাচ্ছে শ্রমিকদের সারি। তাদের চোখে মুখে কর্ম ব্যস্ততার ছাপ।

সেতুটি চালু হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। লাঘব হয়ে যাবে দীর্ঘ সময়ের দূরত্ব। নতুন করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কয়েকটি জেলার মধ্যকার বাণিজ্য নতুন করে গড়ে উঠবে। আর এরই অপেক্ষায় যেন এখানকার জনসাধারণ সহ সকল পেশার মানুষ। রাষ্ট্রের উন্নয়নের ধারা আর এলজিইডির অদম্য স্পৃহা এযেন আগামীতে এখানকার অর্থনীতিতে অপার সম্ভাবনার হাতছানি।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এ সেতু বাস্তবায়ন হলে রাজবাড়ী, মাগুরা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, পাবনা সহ আরো বেশ কয়েকটি জেলা সরাসরি এর সুফল পাবে। এছাড়াও লাঙ্গলবাঁধের এই সেতুর মাধ্যমে এই অঞ্চলের মানুষ সরাসরি তিন ধরনের সুবিধা পাবে। প্রথমত, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের অগ্রগতির সাথে সাথে এক জেলার সাথে অন্য জেলার পরিবহন পথে সময় লাঘব হবে। দ্বিতীয়ত, বাণিজ্যিক ভিত্তিক বিভিন্ন উন্নয়নমূলক সম্ভাবনা আসবে। চারটি জেলার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হবে। এতে এই অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য বিস্তার লাভ করবে। রাজবাড়ী-মাগুরায় একে অপরের বিনিয়োগ বাড়বে। এবং সর্বশেষ রাজবাড়ীর কৃষক সরাসরি উপকৃত হবেন। তাদের উৎপাদিত পচনশীল পণ্য সরাসরি খুলনা, মাগুরা ও অন্যান্য স্থানে পাঠাতে পারবেন। এতে পণ্যের ভালো দাম পাওয়া যাবে।

এ পর্যন্ত প্রকল্পের মোট কার্যের প্রায় ১০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। চলতি বছরের মধ্যে সেতুর ৪০ শতাংশ কাজ শেষ হবে বলে ধারণা করছে পাংশা এলজিইডি।

এব্যাপারে পাংশা উপজেলা প্রকৌশলী বাদল চন্দ্র কির্ত্তনিয়া বলেন, এ সেতুর মাধ্যমে রাজবাড়ী ও মাগুরা সহ আরো বেশ কয়েকটি জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অর্থনীতিতে একটি ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। মাগুরা ও রাজবাড়ীর মানুষ দুই জেলায় খুব সহজে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে নিতে পারবে। সবমিলিয়ে এটি রাজবাড়ীকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে।

পাংশার নাদুরিয়া এলাকার বাসিন্দা ইসমাইল সেতু নির্মাণ প্রসঙ্গে বলেন, লাঙ্গলবাঁধের এই সেতুর কর্মযজ্ঞে আমারা খুশি। আমরা মনে করছি, এ সেতুর মধ্যমে দুই জেলার মানুষের উপকার হবে তাতেও ভাগীদার হতে পারলাম।

পাংশার এক গাড়ি চালক রশিদ বলেন, এই ব্রিজ চালু হওয়ার পর রাজবাড়ীর সাথে মাগুরা ও ঝিনাইদহের সরাসরি পরিবহন ক্ষাতে যোগাযোগ হবে এই লাঙ্গলবাঁধ সড়ক দিয়ে। কারণ, রাজবাড়ী থেকে মাগুরা যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় ট্রলার ঘাটের বিড়ম্বনা এড়াতে সিংহভাগ গাড়ির গন্তব্য হবে এই ব্রিজ। এতে সময় ও শ্রম দুই বাঁচবে গাড়িগুলোর।