বাদুড় থেকেই ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশ: ২০২১-০৩-২৯ ১৯:০৭:৫৭


গত বছর বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর চীনের দিকে আঙুল উঠেছিল। সে সময়ে অনেক দেশ অভিযোগ করেছিল, চীনের একটি পরীক্ষাগার থেকে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বলে। তবে ওই অভিযোগ সত্যি নয় বলেই জানিয়ে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও)। এই ভাইরাসটি বাদুড়ের শরীর থেকেই প্রাণীদের মাধ্যমে মানুষের শরীরে ছড়িয়েছে বলেই জানিয়েছে সংস্থাটি।

করোনাভাইরাসের উৎপত্তি নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) ও চীনের একটি যৌথ তদন্ত প্রতিবেদনের খসড়া হাতে পেয়েছে মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস। এতে বলা হয়েছে, ল্যাব থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা একেবারেই নেই বরং এটি বাদুড় থেকেই মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয়েছে। বিজ্ঞানীদের অনুসন্ধানের এই ফলাফল মোটামুটি প্রত্যাশিতই ছিল। তবে অনেক প্রশ্নের উত্তর এখনো অজানা। ল্যাব থেকে করোনা ছড়িয়ে পড়া তত্ত্ব ছাড়া অন্য সব ক্ষেত্রে আরো গবেষণার প্রস্তাব দিয়েছেন ডাব্লিউএইচও এবং চীনা বিজ্ঞানীদের দলটি।

বিশ্বজুড়ে মহামারির আকার নেওয়া করোনাভাইরাস ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিযোগ, উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি থেকে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। তবে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ না পাওয়ার কথা জানান। তবে বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞ বিশ্বাস করে থাকেন, ভাইরাসটি উহানের একটি বণ্যপ্রাণীর বাজার থেকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।

আজ সোমবার ডাব্লিউএইচওর সদস্য একটি দেশের জেনেভাভিত্তিক কূটনীতিকের কাছ থেকে প্রতিবেদনের প্রায় চূড়ান্ত সংস্করণটি পায় মার্কিন বার্তাসংস্থা এপি। তবে এই রিপোর্টে পরিবর্তন আনা হবে নাকি এটিই প্রকাশ করা হবে তা এখনো পরিষ্কার নয়।

করোনাভাইরাসের উৎপত্তি নিয়ে চারটি ক্রম সাজিয়েছেন তদন্তকারী গবেষকরা। তালিকার শীর্ষে রয়েছে ভাইরাসটি বাদুড় থেকে দ্বিতীয় আরেকটি প্রাণীর মারফত মানুষের শরীরে সংক্রমিত হয়েছে- এমন অনুমান। তারা বলছেন বাদুড় থেকে সরাসরি মানুষের শরীরে এই ভাইরাসের বিস্তার ঘটা সম্ভব। তবে কোল্ড চেইন খাদ্য পণ্যের মাধ্যমে ভাইরাসের বিস্তারের সম্ভাবনা থাকলেও তা হয়নি।

বাদুড় করোনাভাইরাসের বাহক হিসেবে পরিচিত। আর কভিড-১৯ রোগের জন্য দায়ী ভাইরাসটির ঘনিষ্ঠ আত্মীয়গোত্রীয় একটি ভাইরাস বাদুড়ের শরীরে পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই বাদুড় ভাইরাস এবং সার্স-কোভ-২ এর মধ্যে বিবর্তনীয় দূরত্ব রয়েছে; যা কয়েক দশক ধরে বিদ্যমান বলে ধারণা করা হয়। তবে এর মধ্যে সংযোগকারীর অনুপস্থিতি দৃশ্যমান রয়েছে।

এ দিকে এই গবেষণায় অনেক প্রশ্নের জবাবই দেওয়া হয়নি। আরো একবার গবেষণা করার প্রস্তাব দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কিছুদিনের মধ্যেই এই রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে। তবে কবে হবে সেই বিষয়ে কিছু জানাননি ওই কর্মকর্তা। এর আগেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রস আধানম জানিয়েছিলেন, চীনের পরীক্ষাগার থেকে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কোনো প্রমাণ নেই।

সূত্র : এপি, আনন্দবাজার

/এ এ