পঞ্চগড়ে মুক্তিযোদ্ধাদের কবরসহ শতাধিক কবরে আগুন দেওয়ার অভিযোগ

জেলা প্রতিনিধি প্রকাশ: ২০২১-০৪-০৩ ১০:২১:৩৭


পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের সিপাইপাড়া ধাইজান গ্রামে চার মুক্তিযোদ্ধার কবরসহ শতাধিক কবরে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

গত (২৮ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৫টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের সিপাইপাড়া ধাইজান গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শুক্রবার (২ এপ্রিল) এ ঘটনায় ৫ জনের নাম উল্লেখ করে দুপুরে তেঁতুলিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

 এমন ঘটনা ঘটানোর কারণে ক্ষোভ বিরাজ করছে মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে। মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি, দ্রুত এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণসহ অপরাধীদের গ্রেফতার করা না হলে আগামীতে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে তারা।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের সিপাইপাড়া ধাইজান গ্রামে সিপাইপাড়া মৌজার এসএ ১২৯ নং খতিয়ানভুক্ত জমি কয়েক যুগ ধরে কবরস্থান হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বর্তমানে ওই স্থানে ৪ বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ শতাধিক মানুষের কবর রয়েছে।

দীর্ঘদিনের ব্যবহৃত কবরস্থান বাইনগছ গ্রামের আ. জব্বারের ছেলে জিয়াউর রহমান (২৮) একই গ্রামের মৃত আসাবদ্দীনের ছেলে আব্দুল গণি (৬০), আব্দুল জব্বার (৫২), জালাল উদ্দিন (৫০), আব্দুল জলিল (৪৮) নিজেদের দাবি করে গত ২৮ মার্চ (রোববার) বিকেল সাড়ে ৫টায় সবার অগোচরে আক্রোশমূলকভাবে আগুন দিয়ে কবরগুলো জ্বালিয়ে দেয়।

এ ঘটনায় কবরস্থানে ৪ বীর মুক্তিযোদ্ধার কবরসহ শতাধিক কবরের উপরিভাগ পুড়ে যায়। পরে বিষয়টি সবার নজরে এলে স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ওবায়দুল হক কবরস্থানে আগুন লাগানোর ঘটনাটি সবাইকে জানিয়ে দেন।

অভিযোগকারী ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ইমরান আলী প্রধান বলেন, ‘আমি শবে বরাত উপলক্ষে ২৯ মার্চ (সোমবার) বিকেলে কবরস্থানে গিয়ে দেখি সব কবর আগুনে পুড়ে গেছে।’

পরে জানার চেষ্টা করলে প্রত্যক্ষদর্শী ওবায়দুল হক বলেন, ‘বাজারে যাওয়ার সময় জিয়াউর রহমানকে কবরস্থানে আগুন লাগাতে দেখি। আমি মুক্তিযোদ্ধা সন্তান হিসেবে নয়, সাধারণ মানুষ হিসেবে এমন কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে এ ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী ওবায়দুল হক জানান, আগুন লাগানোর সময় জিয়াউর রহমানকে বাধা দিলেও কবরস্থানে আগুন লাগিয়ে দেয়। এবং কবরস্থানে আগুন লাগিয়ে মসজিদে ২০ টাকা দান করবে বলে আমাকে জানায়।

তেঁতুলিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কাজী মাহাবুবুর রহমান জানান, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা এক দুঃখজনক ঘটনার সম্মুখীন হয়েছি। আমাদের জন্য এটা লজ্জাজনক এবং জাতির জন্য এটা অপমানজনক, আমাদের জন্যও অপমানজনক। বীর মুক্তিযোদ্ধা ৪ জন এই কবরস্থানে শুয়ে আছে। এটা ব্রিটিশ আমলের কবরস্থান। আজকে ব্যক্তিগত স্বার্থে এই কবরস্থানে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়েছে।

তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সায়েম মিয়া বলেন, এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।