স্বাস্থ্যের নিয়োগে দুর্নীতি : দুদককে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান টিআইবির
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২১-০৪-১৩ ১০:১৪:৩৬
করোনাকালে স্বাস্থ্য অধিদফতরে কারিগরি জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে দোষীদের শাস্তি দাবি করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সোমবার (১২ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানায় সংস্থাটি।
এ ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশনকে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি। সেইসঙ্গে, পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াটির স্বচ্ছতা নিয়েই সন্দিহান টিআইবি।
বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘করোনা অতিমারির প্রভাবে সাধারণ মানুষের জীবন এমনিতেই ওষ্ঠাগত, এর সাথে স্বাস্থ্যসেবার বেহাল দশা আর সেবার গুণগত মান নিয়ে সাধারণ মানুষের আস্থার ঘাটতি এ সংকটকে আরও ঘনীভূত করে তুলেছে। এ রকম একটি সময়ে হাসপাতালগুলোতে কারিগরি জনবল নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনা স্বাস্থ্যখাতের প্রতি সাধারণ মানুষের বিশ্বাসের প্রতি আরেকটি বড় ধাক্কা হয়ে এলো।’
তিনি বলেন, ‘নিয়োগ কমিটির এক সদস্যকে সরাসরি কোটি টাকা ঘুষ দেয়া এবং মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়নের প্রস্তাব দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত অনিয়মের বেড়াজালে আবদ্ধ বিচারহীনতা উপভোগকারী কর্মকর্তাদের বেপরোয়া দুর্নীতির আরেকটি উদাহরণমাত্র। এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ উপলব্ধি এবং কঠোর ব্যবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি।’
দোষীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিয়ে স্বাস্থ্যখাতকে দুর্নীতিমুক্ত করার জন্য স্বাস্থ্য সচিবকে দুইজন সৎ, নির্ভীক ও সাহসী কর্মকর্তা যে অনুরোধ করেছেন তার প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘অভিযুক্তদের নিয়োগ কমিটি থেকে সরিয়ে দেয়া হলে কী তাদের কৃতকর্মের প্রায়শ্চিত্ত হয়ে যায়! ইতোপূর্বেও মাস্ক কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যসেবা সরঞ্জাম ক্রয়ের ঘটনায় কাউকে দৃষ্টান্তমূলক কোনো শাস্তির সম্মুখীন করা হয়েছে বলে শোনা যায়নি। এতে করে এক ধরনের বিচারহীনতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।’
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘এবারও আমরা দেখলাম- জড়িতদের অনেকেই প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ বলয়ের অধীনস্ত থেকে অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত হয়েছে এবং যখনই এ ব্যাপারে সমালোচনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে তখনই অন্যত্র বদলি বা সরিয়ে দেয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। এক্ষেত্রে দুদককে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এক্ষেত্রে লিখিত পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীরা কিভাবে প্রায় একই ধরনের উচ্চ নম্বর পেল? পরীক্ষার প্রশ্ন কিভাবে ফাঁস হয়েছিল? এর পেছনে কারা ছিল? সরাসরি ঘুষ প্রস্তাব ঘটনায় অভিযুক্তদের পুরো প্রক্রিয়ায় সাথে সম্পৃক্ততা কতোটুকু? সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ নিয়োগ সিন্ডিকেটের সরূপ উদ্ঘাটন এবং এর মাধ্যমে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’
‘এসব নিয়োগ কি টাকা ছাড়া হয়’ বলে অনিয়মের সঙ্গে সম্পৃক্ত একজন চাকরিপ্রার্থী যে স্বগতোক্তি করেছেন সেটাই যদি বাস্তবতা হয় তাহলে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা’ বা ‘কাউকে ছাড় দেয়া হবে না’ মর্মে সরকারপ্রধানের বক্তব্যের আদৌ কোনো প্রতিফলন কী আছে? প্রশ্ন করেছেন ড. জামান।
/সানবিডি/ এ এ / খান